জাদুঘরের সংজ্ঞা
বাংলা ‘জাদুঘর’ শব্দটির ইংরাজি প্রতিশব্দ হল মিউজিয়াম (Museum)। ‘মিউজিয়াম’ শব্দটির মূল উৎস হল প্রাচীন গ্রীক শব্দ Mouseion (মউসিয়ান), যার অর্থ হল গ্রীক পুরাণের শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক মিউসদের মন্দির। এই ধরণের মন্দিরগুলিকে কেন্দ্র করে প্রাচীন গ্রিসে পাঠাগার, প্রাচীন শিল্পকলা প্রভৃতির সংগ্রহশালা গড়ে উঠত।
ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ মিউজিয়াম-এর মতে, জাদুঘর হল একটি অলাভজনক, জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত এবং স্থায়ী সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান যা শিক্ষালাভ, জ্ঞানচর্চা ও আনন্দলাভের উদ্দেশ্যে মানব ঐতিহ্যের স্পর্শযোগ্য ও স্পর্শ-অযোগ্য জিনিসপত্র সংগ্রহ করে, সংরক্ষণ করে, প্রদর্শন করে এবং সেগুলি নিয়ে গবেষণা করে।
উদাহরণ – ব্রিটিশ মিউজিয়াম। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকলা, প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস, বিজ্ঞান প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ের নিদর্শন। এখানে পৃথক পৃথক ঘরে পৃথক পৃথক বিষয়ের নিদর্শন প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে।
জাদুঘরের উদ্দেশ্য, কার্যাবলি ও গুরুত্ব
বিশেষ বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অতীত পুনর্গঠনে (ইতিহাস রচনায়) এই জাদুঘরগুলি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। জাদুঘরের প্রধান উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি ব্যাখ্যা করলে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে –
1) সংগ্রহ। জাদুঘরের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ও কাজ হল দুর্লভ ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি খুঁজে বের করা ও সংগ্রহ করা। হারিয়ে যাওয়া এই সব নিদর্শন ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
2) সংরক্ষণ । জাদুঘরগুলিতে বিভিন্ন ধরণের ঐতিহাসিক উপাদান সংরক্ষিত থাকে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল প্রাচীন মুদ্রা, লিপি, শিল্পকর্ম, দুষ্প্রাপ্য বস্তু, বিজ্ঞান-বিষয়ক বস্তু, অলংকার, চার্ট, মডেল, প্রাচীনকালে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ ইত্যাদি। সংরক্ষিত এই উপকরণগুলি অতীত পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
3) প্রতিকৃতি নির্মান। জাদুঘরগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল প্রতিকৃতি তৈরি। নিরাপত্তার কারণে অতিমূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির প্রদর্শন সম্ভব হয় না। জাদুঘর এগুলির মডেল তৈরি করে দর্শকের কৌতুহল মেটানোর ব্যবস্থা করে। যেমন - পিরামিডের মমির মডেল।
4) প্রদর্শন। বিবর্তনের বিভিন্ন ধারায় মানবসমাজ ও সভ্যতার অগ্রগতি ঘটেছে। জাদুঘর দুর্লভ ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি সাধারণ দর্শক, পাঠক ও গবেষকদের ‘ডিসপ্লে কেস’ সাহায্যে তুলে ধরে।
5) জনসচেতনতা। ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জাদুঘরের অন্যতম উদ্দেশ্য ও কাজ। উদাহরণ – বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর দেশের মানুষের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নানা উদ্যোগ নিয়ে থাকে।
6) গবেষণায় সাহায্য। যে-কোনো মানুষের সংগ্রহ করা ঐতিহাসিক নিদর্শন জাদুঘরে সংরক্ষিত হতে পারে। সেই সব নিদর্শনগুলির প্রকৃত ইতিহাস কী তা নিয়ে গবেষণার সুযোগ করে দেওয়া জাদুঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য ও কাজ।
7) প্রকাশনা। জাদুঘরের একটি প্রধান কাজ হল বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশনার ব্যবস্থা করা। জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন সম্পর্কে গবেষনালব্ধ তথ্য, কিম্বা সাম্প্রতিককালে যথেষ্ট আলোচিত কোনো ঐতিহাসিক বিষয় ইত্যাদি নিয়ে এই প্রকাশনার ব্যবস্থা হতে পারে।
8) জ্ঞানের প্রসার। জাদুঘরের একটি অন্যতম উদ্দেশ্য ওন কাজ হল সংগ্রহশালার বস্তুসামগ্রীর সাহায্যে মানুষের জ্ঞানের প্রসার ঘটানো। পাঠ্যবইয়ের পাতায় দেখা বিষয় চোখের সামনে দেখতে পেলে বিষয়টি সম্পর্কে জানার আগ্রহ ও আকর্ষণ দুই-ই বৃদ্ধি পায়।
9) প্রাণবন্ত ইতিহাস। জাদুঘরের ঐতিহাসিক উপাদানগুলিতে ইতিহাসের তাত্ত্বকতার স্থান নেই, আছে অতীত ইতিহাসের বাস্তব অস্তিত্ব। জাদুঘর এই উপাদানগুলির সাহায্যে ইতিহাসকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
10) আনন্দদান। জাদুঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সাধারণ দর্শকদের আনন্দদান করা। দর্শকরা সবসময় গবেষকের দৃষ্টি নিয়ে জাদুঘরে আসে না। এরূপ দর্শকের কাছে জাদুঘর হল হালকা জ্ঞান সংগ্রহের মাধ্যমে আনন্দলাভ করা।
মূল্যায়ন
সুতরাং মিউজিয়াম বা জাদুঘর হল অতীত স্মৃতিচিহ্ন ও বর্তমানের যোগসূত্র। তাই মিউজিয়ামে সংরক্ষিত তথ্য ব্যবহার ও বিশ্লেষণ করে মানুষ নতুন তথ্য আবিষ্কার করে, যা অতীত সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। শুধু তাই নয়, ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কল্পনা ও মননশক্তি তৈরি করতেও সাহায্য করে।
বাংলা ‘জাদুঘর’ শব্দটির ইংরাজি প্রতিশব্দ হল মিউজিয়াম (Museum)। ‘মিউজিয়াম’ শব্দটির মূল উৎস হল প্রাচীন গ্রীক শব্দ Mouseion (মউসিয়ান), যার অর্থ হল গ্রীক পুরাণের শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক মিউসদের মন্দির। এই ধরণের মন্দিরগুলিকে কেন্দ্র করে প্রাচীন গ্রিসে পাঠাগার, প্রাচীন শিল্পকলা প্রভৃতির সংগ্রহশালা গড়ে উঠত।
ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ মিউজিয়াম-এর মতে, জাদুঘর হল একটি অলাভজনক, জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত এবং স্থায়ী সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান যা শিক্ষালাভ, জ্ঞানচর্চা ও আনন্দলাভের উদ্দেশ্যে মানব ঐতিহ্যের স্পর্শযোগ্য ও স্পর্শ-অযোগ্য জিনিসপত্র সংগ্রহ করে, সংরক্ষণ করে, প্রদর্শন করে এবং সেগুলি নিয়ে গবেষণা করে।
উদাহরণ – ব্রিটিশ মিউজিয়াম। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকলা, প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস, বিজ্ঞান প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ের নিদর্শন। এখানে পৃথক পৃথক ঘরে পৃথক পৃথক বিষয়ের নিদর্শন প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে।
জাদুঘরের উদ্দেশ্য, কার্যাবলি ও গুরুত্ব
বিশেষ বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অতীত পুনর্গঠনে (ইতিহাস রচনায়) এই জাদুঘরগুলি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। জাদুঘরের প্রধান উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি ব্যাখ্যা করলে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে –
1) সংগ্রহ। জাদুঘরের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ও কাজ হল দুর্লভ ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি খুঁজে বের করা ও সংগ্রহ করা। হারিয়ে যাওয়া এই সব নিদর্শন ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
2) সংরক্ষণ । জাদুঘরগুলিতে বিভিন্ন ধরণের ঐতিহাসিক উপাদান সংরক্ষিত থাকে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল প্রাচীন মুদ্রা, লিপি, শিল্পকর্ম, দুষ্প্রাপ্য বস্তু, বিজ্ঞান-বিষয়ক বস্তু, অলংকার, চার্ট, মডেল, প্রাচীনকালে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ ইত্যাদি। সংরক্ষিত এই উপকরণগুলি অতীত পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
3) প্রতিকৃতি নির্মান। জাদুঘরগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল প্রতিকৃতি তৈরি। নিরাপত্তার কারণে অতিমূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির প্রদর্শন সম্ভব হয় না। জাদুঘর এগুলির মডেল তৈরি করে দর্শকের কৌতুহল মেটানোর ব্যবস্থা করে। যেমন - পিরামিডের মমির মডেল।
4) প্রদর্শন। বিবর্তনের বিভিন্ন ধারায় মানবসমাজ ও সভ্যতার অগ্রগতি ঘটেছে। জাদুঘর দুর্লভ ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি সাধারণ দর্শক, পাঠক ও গবেষকদের ‘ডিসপ্লে কেস’ সাহায্যে তুলে ধরে।
5) জনসচেতনতা। ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জাদুঘরের অন্যতম উদ্দেশ্য ও কাজ। উদাহরণ – বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর দেশের মানুষের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নানা উদ্যোগ নিয়ে থাকে।
6) গবেষণায় সাহায্য। যে-কোনো মানুষের সংগ্রহ করা ঐতিহাসিক নিদর্শন জাদুঘরে সংরক্ষিত হতে পারে। সেই সব নিদর্শনগুলির প্রকৃত ইতিহাস কী তা নিয়ে গবেষণার সুযোগ করে দেওয়া জাদুঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য ও কাজ।
7) প্রকাশনা। জাদুঘরের একটি প্রধান কাজ হল বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশনার ব্যবস্থা করা। জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন সম্পর্কে গবেষনালব্ধ তথ্য, কিম্বা সাম্প্রতিককালে যথেষ্ট আলোচিত কোনো ঐতিহাসিক বিষয় ইত্যাদি নিয়ে এই প্রকাশনার ব্যবস্থা হতে পারে।
8) জ্ঞানের প্রসার। জাদুঘরের একটি অন্যতম উদ্দেশ্য ওন কাজ হল সংগ্রহশালার বস্তুসামগ্রীর সাহায্যে মানুষের জ্ঞানের প্রসার ঘটানো। পাঠ্যবইয়ের পাতায় দেখা বিষয় চোখের সামনে দেখতে পেলে বিষয়টি সম্পর্কে জানার আগ্রহ ও আকর্ষণ দুই-ই বৃদ্ধি পায়।
9) প্রাণবন্ত ইতিহাস। জাদুঘরের ঐতিহাসিক উপাদানগুলিতে ইতিহাসের তাত্ত্বকতার স্থান নেই, আছে অতীত ইতিহাসের বাস্তব অস্তিত্ব। জাদুঘর এই উপাদানগুলির সাহায্যে ইতিহাসকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
10) আনন্দদান। জাদুঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সাধারণ দর্শকদের আনন্দদান করা। দর্শকরা সবসময় গবেষকের দৃষ্টি নিয়ে জাদুঘরে আসে না। এরূপ দর্শকের কাছে জাদুঘর হল হালকা জ্ঞান সংগ্রহের মাধ্যমে আনন্দলাভ করা।
মূল্যায়ন
সুতরাং মিউজিয়াম বা জাদুঘর হল অতীত স্মৃতিচিহ্ন ও বর্তমানের যোগসূত্র। তাই মিউজিয়ামে সংরক্ষিত তথ্য ব্যবহার ও বিশ্লেষণ করে মানুষ নতুন তথ্য আবিষ্কার করে, যা অতীত সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। শুধু তাই নয়, ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কল্পনা ও মননশক্তি তৈরি করতেও সাহায্য করে।