ভারতের সংবিধান প্রণয়ন
প্রশ্ন ১) ক্রিপস প্রস্তাবের মূল বক্তব্য কী?
উত্তর : ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসকে (Sir Stafford Cripps) ভাল রাজনৈতিক সমস্যাবলি সমাধানের জন্যে পাঠান। ক্রিপস ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সম্মুখে যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন তার মূল বক্তব্য নিম্নরূপ-
(i) যুদ্ধশেষে পূর্ণ ডােমিনিয়নের মর্যাদাসম্পন্ন একটি নতুন ভারত ইউনিয়নের সৃষ্টি করা হবে।
(ii) ভারতের সংবিধান রচনার জন্য একটি গণপরিষদ গঠন করা হবে। এ ব্যাপারে প্রধান দল ও সম্প্রদায়গুলির মধ্যে মতবিরােধ হলে নির্বাচনের মাধ্যমে এই পরিষদ গঠিত হবে।
(iii) সংবিধান প্রণয়ন সংস্থায় দেশীয় রাজ্যগুলি তাদের জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে প্রতিটি প্রেরণ করতে পারে।
(iv) ব্রিটিশ ভারতের কোনাে প্রদেশ নতুন ব্যবস্থায় যােগ না দিয়ে পূর্ণ মর্যাদা সংরক্ষণ এবং পরবর্তী সময়ে যােগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।
(v) সংবিধান প্রণয়ন সংস্থার সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের চুক্তি অনুযায়ী কমনওয়েলথ ও সদস্য রাষ্ট্রের সম্পর্ক নির্ধারিত হবে।
(vi) সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে (Proportional Representation) প্রাদেশিক আইনসভাগুলির নিম্নকক্ষ সংবিধান প্রণয়ন সংস্থাকে নির্বাচন করবে।
(vii) সংবিধান রচনা না হওয়া পর্যন্ত ভারতের প্রতিরক্ষা বিষয়ক দায়িত্ব ব্রিটিশ সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
(i) যুদ্ধশেষে পূর্ণ ডােমিনিয়নের মর্যাদাসম্পন্ন একটি নতুন ভারত ইউনিয়নের সৃষ্টি করা হবে।
(ii) ভারতের সংবিধান রচনার জন্য একটি গণপরিষদ গঠন করা হবে। এ ব্যাপারে প্রধান দল ও সম্প্রদায়গুলির মধ্যে মতবিরােধ হলে নির্বাচনের মাধ্যমে এই পরিষদ গঠিত হবে।
(iii) সংবিধান প্রণয়ন সংস্থায় দেশীয় রাজ্যগুলি তাদের জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে প্রতিটি প্রেরণ করতে পারে।
(iv) ব্রিটিশ ভারতের কোনাে প্রদেশ নতুন ব্যবস্থায় যােগ না দিয়ে পূর্ণ মর্যাদা সংরক্ষণ এবং পরবর্তী সময়ে যােগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।
(v) সংবিধান প্রণয়ন সংস্থার সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের চুক্তি অনুযায়ী কমনওয়েলথ ও সদস্য রাষ্ট্রের সম্পর্ক নির্ধারিত হবে।
(vi) সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে (Proportional Representation) প্রাদেশিক আইনসভাগুলির নিম্নকক্ষ সংবিধান প্রণয়ন সংস্থাকে নির্বাচন করবে।
(vii) সংবিধান রচনা না হওয়া পর্যন্ত ভারতের প্রতিরক্ষা বিষয়ক দায়িত্ব ব্রিটিশ সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
প্রশ্ন ২) সংবিধানের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর : সংবিধানের সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ রাষ্টবিজ্ঞানীগণ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সংবিধানের সংজ্ঞা দিয়েছেন। তবে সামগ্রিকভাবে সমস্ত সংজ্ঞাগুলিকে আমরা দুটি মূল শেণিতে বিন্যস্ত করে পর্যালােচনা করতে পারি। (ক) সংকীর্ণ অর্থে এবং (খ) ব্যাপক অর্থে।
(ক) সংকীর্ণ অর্থে সংবিধানের সংজ্ঞা :
সংকীর্ণ অর্থে সংবিধানের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce) বলেছেন, সংবিধান হল সেইসব আইন এবং রীতিনীতির সমষ্টি যেগুলির অধীনে থেকে রাষ্ট্রের জীবন পরিচালিত হয়। আবার অধ্যাপক কে. সি. হােয়ার (K. C. Whearo) বলেছেন, সংবিধান বা শাসনতন্ত্র হল দেশের নির্বাচিত কিছু বৈধ আইন বা নিয়ম যেগুলি সেই দেশের সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং যেগুলি একটি দলিলে লিপিবদ্ধ থাকে।
অপরদিকে ব্যাপক অর্থে সংবিধান বলতে বােঝায় লিখিত বা অলিখিত আইনকানুন যা দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে। গিলক্রিস্টের ভাষায় সংবিধান হল এমন কিছু লিখিত অথবা অলিখিত নিয়মনীতির সমষ্টি যেগুলি সরকারের গঠন এবং বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন ইত্যাদি বিষয়ে সম্পষ্টভাবে নিয়ম ও নীতি প্রণয়ন করে। স্যার আইভরজেনিংস বলেছেন, সংবিধান বা শাসনতন্ত্র হল লিখিত নিয়মকানুন, প্রথা ও সাংবিধানিক রীতিনীতির সমষ্টি।
উপরিউক্ত সংজ্ঞা ছাড়াও মার্কসবাদীদের সংজ্ঞা বিশেষভাবে প্রণিধানযােগ্য। মার্কসবাদী তাত্ত্বিকগণ সংবিধান বলতে শুধুমাত্র কয়েকটি সাংগঠনিক নিয়মকানুনের সমষ্টি বলে স্বীকার করেন না। মার্কসবাদী দৃষ্টিকোণ অনুসারে এগুলি নিছক শ্রেণিবিন্যস্ত সমাজব্যবস্থায় শাসকশ্রেণি তার স্বার্থরক্ষার জন্য দলিলরূপে ব্যবহার করে। বৈষম্যমূলক তথা শ্রেণিভিত্তিক সমাজে বিত্তশালী ও প্রভুত্বকারী শক্তিগুলি তাদের স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে যে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক কাঠামাে রচনা করে তাকেই বলে সংবিধান।
(ক) সংকীর্ণ অর্থে সংবিধানের সংজ্ঞা :
সংকীর্ণ অর্থে সংবিধানের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce) বলেছেন, সংবিধান হল সেইসব আইন এবং রীতিনীতির সমষ্টি যেগুলির অধীনে থেকে রাষ্ট্রের জীবন পরিচালিত হয়। আবার অধ্যাপক কে. সি. হােয়ার (K. C. Whearo) বলেছেন, সংবিধান বা শাসনতন্ত্র হল দেশের নির্বাচিত কিছু বৈধ আইন বা নিয়ম যেগুলি সেই দেশের সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং যেগুলি একটি দলিলে লিপিবদ্ধ থাকে।
অপরদিকে ব্যাপক অর্থে সংবিধান বলতে বােঝায় লিখিত বা অলিখিত আইনকানুন যা দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে। গিলক্রিস্টের ভাষায় সংবিধান হল এমন কিছু লিখিত অথবা অলিখিত নিয়মনীতির সমষ্টি যেগুলি সরকারের গঠন এবং বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন ইত্যাদি বিষয়ে সম্পষ্টভাবে নিয়ম ও নীতি প্রণয়ন করে। স্যার আইভরজেনিংস বলেছেন, সংবিধান বা শাসনতন্ত্র হল লিখিত নিয়মকানুন, প্রথা ও সাংবিধানিক রীতিনীতির সমষ্টি।
উপরিউক্ত সংজ্ঞা ছাড়াও মার্কসবাদীদের সংজ্ঞা বিশেষভাবে প্রণিধানযােগ্য। মার্কসবাদী তাত্ত্বিকগণ সংবিধান বলতে শুধুমাত্র কয়েকটি সাংগঠনিক নিয়মকানুনের সমষ্টি বলে স্বীকার করেন না। মার্কসবাদী দৃষ্টিকোণ অনুসারে এগুলি নিছক শ্রেণিবিন্যস্ত সমাজব্যবস্থায় শাসকশ্রেণি তার স্বার্থরক্ষার জন্য দলিলরূপে ব্যবহার করে। বৈষম্যমূলক তথা শ্রেণিভিত্তিক সমাজে বিত্তশালী ও প্রভুত্বকারী শক্তিগুলি তাদের স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে যে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক কাঠামাে রচনা করে তাকেই বলে সংবিধান।
প্রশ্ন ৩) লিখিত সংবিধান-এর বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।
উত্তর : যে দেশের শাসনব্যবস্থা-সম্পর্কিত মৌলিক নীতিগুলির অধিকাংশ বা সবগুলি একটি বা কয়েকটি দলিলে লিপিবদ্ধ করা থাকে, তাকে লিখিত সংবিধান (Written Constitution) বলে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিকে এইসব শাসনতান্ত্রিক মৌলিক নীতিগুলিকে লিপিবদ্ধ করার জন্য একটি সংবিধান পরিষদ (Constituend Assembly) বা কনভেনশন (Convention) আহ্বান করা হয়। এই পরিষদ বা কনভেনশন সংবিধান রচনা করে আনুষ্ঠানিকভাবে সেটি ঘােষণা করে, নিম্নে এর বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করা হল—
(i) এই ধরনের সংবিধান রাষ্ট্রব্যবস্থার বিবর্তনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠেনি। নির্দিষ্ট সময়ে কনভেনশন (Convention) আহ্বান করে এই সংবিধান গড়ে ওঠে।
(i) এই ধরনের সংবিধান হয় গণপরিষদ, নয় সম্মেলনের মাধ্যমে প্রণীত হয়।
(iii) এরপ সংবিধানের মধ্যেই সংবিধান সংশােধনের পদ্ধতি লেখা থাকে।
(iv) লিখিত সংবিধানে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টিত হয়েছে।
(v) লিখিত সংবিধানে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা নির্দিষ্ট করা থাকে।
(i) এই ধরনের সংবিধান রাষ্ট্রব্যবস্থার বিবর্তনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠেনি। নির্দিষ্ট সময়ে কনভেনশন (Convention) আহ্বান করে এই সংবিধান গড়ে ওঠে।
(i) এই ধরনের সংবিধান হয় গণপরিষদ, নয় সম্মেলনের মাধ্যমে প্রণীত হয়।
(iii) এরপ সংবিধানের মধ্যেই সংবিধান সংশােধনের পদ্ধতি লেখা থাকে।
(iv) লিখিত সংবিধানে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টিত হয়েছে।
(v) লিখিত সংবিধানে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা নির্দিষ্ট করা থাকে।
প্রশ্ন ৪) অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।
উত্তর : শাসন-সংক্রান্ত মৌলিক নীতিগুলি যখন প্রথা, আচার-ব্যবহার, রীতিনীতি ও বিচারালয়ের সিদ্ধান্ত প্রভৃতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে, তখন তাকে অলিখিত সংবিধান (Unwritten Constitution) বলা হয়। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত সংবিধানের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। নিম্নে এর বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করা হল-
(1) অলিখিত সংবিধানে শাসন-সংক্রান্ত মৌলিক নীতিগুলিকে কোনাে সংবিধান পরিষদ বা কনভেনশন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘােষণা করে না।
(ii) এরুপ সংবিধান রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক ক্ৰমবিবর্তনের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়।
(iii) নির্দিষ্ট দলিলের আকারে এই সংবিধানকে পাওয়া যায় না।
(iv) অলিখিত সংবিধান প্রথা, রীতিনীতি, বিচারকের রায় ও দেশের রাজনৈতিক কৃষ্টির মাধ্যমে গড়ে ওঠে।
(v) এই সংবিধানকে সহজেই পরিবর্তন করা যায়। এই ধরনের সংবিধান অনির্দিষ্ট। উল্লেখ্য, বাস্তবে কোনাে সংবিধানই পুরােপুরি লিখিত অথবা পুরােপুরি অলিখিত হয় না।
(1) অলিখিত সংবিধানে শাসন-সংক্রান্ত মৌলিক নীতিগুলিকে কোনাে সংবিধান পরিষদ বা কনভেনশন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘােষণা করে না।
(ii) এরুপ সংবিধান রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক ক্ৰমবিবর্তনের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়।
(iii) নির্দিষ্ট দলিলের আকারে এই সংবিধানকে পাওয়া যায় না।
(iv) অলিখিত সংবিধান প্রথা, রীতিনীতি, বিচারকের রায় ও দেশের রাজনৈতিক কৃষ্টির মাধ্যমে গড়ে ওঠে।
(v) এই সংবিধানকে সহজেই পরিবর্তন করা যায়। এই ধরনের সংবিধান অনির্দিষ্ট। উল্লেখ্য, বাস্তবে কোনাে সংবিধানই পুরােপুরি লিখিত অথবা পুরােপুরি অলিখিত হয় না।
প্রশ্ন ৫) লিখিত সংবিধানের গুণ এবং দোষগুলি উল্লেখ করাে।
উত্তর : • গুণ
(i) সুস্পষ্টতা : এই সংবিধান সুস্পষ্ট ও নির্দিষ্ট হয়। অনেক চিন্তাভাবনা, আলাপ-আলােচনার মধ্য দিয়ে এটি প্রণীত হয়।
(ii) স্থায়িত্ব : স্থায়িত্ব লিখিত সংবিধানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। লিখিত সংবিধানে সংবিধান সংশােধনের পদ্ধতি নির্দিষ্ট থাকে।
(iii) লিপিবদ্ধ অধিকার : ব্যক্তির অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকে। ফলে অধিকারগুলি সাংবিধানিক আইনের মর্যাদা লাভ করে। জনগণও অধিকার সম্পর্কে বেশি সচেতন হয়।
(iv) সুবিচার : সংবিধান লিখিত হলে বিচার কাজের সুবিধা হয়। সংবিধানের নির্দেশ থাকায় বিচারপতিরা সহজেই সাংবিধানিক প্রশ্নের মীমাংসা করতে পারেন।
(v) যুক্তরাষ্ট্রে অপরিহার্য : এই ধরনের সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রে অপরিহার্য। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে দু-ধরনের সরকার থাকে। সংবিধানের দ্বারা তাদের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টিত হয়।
• দোষ
(i) অনমনীয়তা : এই সংবিধান পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি রাখতে পারে না। জনগণের দাবি মতাে সংবিধানের কোনাে অংশ বর্জন করা বা কোনাে অংশ সংযােজন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
(ii) বিচারপতিদের ক্ষমতা বৃদ্ধি : বিভিন্ন আইনি ব্যাখ্যার মধ্য দিয়ে বিচারপতিরা অনেকসময় ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। মার্কিন সুপ্রিমকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি হিউজেস বলেছেন – “আমরা একটা সংবিধানের অধীন, কিন্তু সংবিধানটি হল বিচারপতিরা যা বলেন তাই।”
(i) সুস্পষ্টতা : এই সংবিধান সুস্পষ্ট ও নির্দিষ্ট হয়। অনেক চিন্তাভাবনা, আলাপ-আলােচনার মধ্য দিয়ে এটি প্রণীত হয়।
(ii) স্থায়িত্ব : স্থায়িত্ব লিখিত সংবিধানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। লিখিত সংবিধানে সংবিধান সংশােধনের পদ্ধতি নির্দিষ্ট থাকে।
(iii) লিপিবদ্ধ অধিকার : ব্যক্তির অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকে। ফলে অধিকারগুলি সাংবিধানিক আইনের মর্যাদা লাভ করে। জনগণও অধিকার সম্পর্কে বেশি সচেতন হয়।
(iv) সুবিচার : সংবিধান লিখিত হলে বিচার কাজের সুবিধা হয়। সংবিধানের নির্দেশ থাকায় বিচারপতিরা সহজেই সাংবিধানিক প্রশ্নের মীমাংসা করতে পারেন।
(v) যুক্তরাষ্ট্রে অপরিহার্য : এই ধরনের সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রে অপরিহার্য। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে দু-ধরনের সরকার থাকে। সংবিধানের দ্বারা তাদের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টিত হয়।
• দোষ
(i) অনমনীয়তা : এই সংবিধান পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি রাখতে পারে না। জনগণের দাবি মতাে সংবিধানের কোনাে অংশ বর্জন করা বা কোনাে অংশ সংযােজন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
(ii) বিচারপতিদের ক্ষমতা বৃদ্ধি : বিভিন্ন আইনি ব্যাখ্যার মধ্য দিয়ে বিচারপতিরা অনেকসময় ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। মার্কিন সুপ্রিমকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি হিউজেস বলেছেন – “আমরা একটা সংবিধানের অধীন, কিন্তু সংবিধানটি হল বিচারপতিরা যা বলেন তাই।”
(iii) ভাষার জটিলতা বৃদ্ধি : লিখিত সংবিধানে ব্যবহৃত ভাষার নানারূপ ব্যাখ্যা করা হয়। তা নিয়ে অযথা বিবাদ-বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
(iv) রীতিনীতি প্রথা উপেক্ষিত : একটি দেশের প্রথা ও রীতিনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু সংবিধান লিখিত হলে এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলি উপেক্ষিত হয়।
(v) অধিকার সংরক্ষিত হয়, সবসময় এ কথা ঠিক নয় : রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গেটেল বলেছেন যে অধিকার বাস্তবে কার্যকর হবে কিনা, তা নির্ভর করে দুটি বিষয়ের উপর। (ক)—সংবিধানের নির্দেশ কত সহজে পরিবর্তন করা যায়, তার উপরে এবং (খ) বিচারব্যবস্থার উপর। সরকারের অসাংবিধানিক কাজকে বিচার বিভাগ প্রতিহত করতে না পারলে, অধিকার রক্ষা করা যায় না।
(vi) মার্কসীয় যুক্তি : মার্কসবাদীরা মনে করেন যে, কোনাে একটি রাষ্ট্রের নাগরিকরা কি ধরনের অধিকার ভােগ করবে, তা নির্ভর করে সমাজব্যবস্থার প্রকৃতির ওপর।
(iv) রীতিনীতি প্রথা উপেক্ষিত : একটি দেশের প্রথা ও রীতিনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু সংবিধান লিখিত হলে এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলি উপেক্ষিত হয়।
(v) অধিকার সংরক্ষিত হয়, সবসময় এ কথা ঠিক নয় : রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গেটেল বলেছেন যে অধিকার বাস্তবে কার্যকর হবে কিনা, তা নির্ভর করে দুটি বিষয়ের উপর। (ক)—সংবিধানের নির্দেশ কত সহজে পরিবর্তন করা যায়, তার উপরে এবং (খ) বিচারব্যবস্থার উপর। সরকারের অসাংবিধানিক কাজকে বিচার বিভাগ প্রতিহত করতে না পারলে, অধিকার রক্ষা করা যায় না।
(vi) মার্কসীয় যুক্তি : মার্কসবাদীরা মনে করেন যে, কোনাে একটি রাষ্ট্রের নাগরিকরা কি ধরনের অধিকার ভােগ করবে, তা নির্ভর করে সমাজব্যবস্থার প্রকৃতির ওপর।
প্রশ্ন ৬) অলিখিত সংবিধানের গুণ ও দোষগুলি আলােচনা করাে।
উত্তর : গুণ
(i) অলিখিত সংবিধান দরকারমতাে সহজেই পরিবর্তন করা যায়। ফলে এইরূপ সংবিধান জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সময় ও প্রয়ােজনমতাে। এরপ সংবিধান সংশোধনযােগ্য হওয়ায় সমাজে কোনােপ্রকার বিক্ষোভ দেখা যায় না।
(ii) হঠাৎ দেশের কোনাে বিশেষ প্রয়ােজনের সময় যদি সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়ােজন হয় তখন অতি দ্রুত সংবিধান সংশােধনের ক্ষেত্রে এই জাতীয় সংবিধান কার্যকর হয়।
(iii) এই ধরনের সংবিধান সংকীর্ণতার দোষে দুষ্ট নয়।
(iv) এই সংবিধান বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সংগতি রেখে চলতে পারে।
দোষ
(i) নমনীয়তা যেমন এর গুণ ঠিক তেমনিভাবে এই নমনীয়তাই এই সংবিধানের দোষ বলেও বিবেচিত হয়। কারণ, নমনীয়তার কারণে এই সংবিধানকে শাসকগােষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে ও প্রয়ােজনে পরিবর্তন করতে পারে। নাগরিকের অধিকার ক্ষুন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(ii) এই সংবিধান স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নয়। এই সংবিধানে শাসনতান্ত্রিক আইন ও সাধারণ আইনের পার্থক্য স্পষ্টভাবে বােঝা যায় না।
(iii) যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় এই সংবিধান কার্যকর নয়। কারণ এই সংবিধানের মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন সম্ভব হতে পারে না।
(iv) অনেকে বলেন যে, এই সংবিধান যেখানে কার্যকর সেখানে বিচার বিভাগের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। কারণ, এক্ষেত্রে বিচার বিভাগ নিজের বিবেচনা অনুযায়ী সংবিধানকে ব্যাখ্যা করার সুযােগ পায়।
(i) অলিখিত সংবিধান দরকারমতাে সহজেই পরিবর্তন করা যায়। ফলে এইরূপ সংবিধান জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সময় ও প্রয়ােজনমতাে। এরপ সংবিধান সংশোধনযােগ্য হওয়ায় সমাজে কোনােপ্রকার বিক্ষোভ দেখা যায় না।
(ii) হঠাৎ দেশের কোনাে বিশেষ প্রয়ােজনের সময় যদি সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়ােজন হয় তখন অতি দ্রুত সংবিধান সংশােধনের ক্ষেত্রে এই জাতীয় সংবিধান কার্যকর হয়।
(iii) এই ধরনের সংবিধান সংকীর্ণতার দোষে দুষ্ট নয়।
(iv) এই সংবিধান বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সংগতি রেখে চলতে পারে।
দোষ
(i) নমনীয়তা যেমন এর গুণ ঠিক তেমনিভাবে এই নমনীয়তাই এই সংবিধানের দোষ বলেও বিবেচিত হয়। কারণ, নমনীয়তার কারণে এই সংবিধানকে শাসকগােষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে ও প্রয়ােজনে পরিবর্তন করতে পারে। নাগরিকের অধিকার ক্ষুন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(ii) এই সংবিধান স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নয়। এই সংবিধানে শাসনতান্ত্রিক আইন ও সাধারণ আইনের পার্থক্য স্পষ্টভাবে বােঝা যায় না।
(iii) যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় এই সংবিধান কার্যকর নয়। কারণ এই সংবিধানের মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন সম্ভব হতে পারে না।
(iv) অনেকে বলেন যে, এই সংবিধান যেখানে কার্যকর সেখানে বিচার বিভাগের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। কারণ, এক্ষেত্রে বিচার বিভাগ নিজের বিবেচনা অনুযায়ী সংবিধানকে ব্যাখ্যা করার সুযােগ পায়।
প্রশ্ন ৭) লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য লেখাে।
উত্তর : দুটি সংবিধানের বৈশিষ্ট্য লক্ষ করলে উভয়ের মধ্যে কয়েকটি পার্থক্য নজরে পড়ে। যেমন-
(i) লিখিত সংবিধানের উৎস লিখিত আইন, নিয়মাবলি। অন্যপক্ষে অলিখিত সংবিধানের উৎস প্রথা, রীতিনীতি ইত্যাদি।
(ii) লিখিত সংবিধান লিখিত দলিল হিসাবে প্রকাশিত হয়। কিন্তু অলিখিত সংবিধানে এইরপ কোনাে দলিল পরিলক্ষিত হয় না।
(i) লিখিত সংবিধানের উৎস লিখিত আইন, নিয়মাবলি। অন্যপক্ষে অলিখিত সংবিধানের উৎস প্রথা, রীতিনীতি ইত্যাদি।
(ii) লিখিত সংবিধান লিখিত দলিল হিসাবে প্রকাশিত হয়। কিন্তু অলিখিত সংবিধানে এইরপ কোনাে দলিল পরিলক্ষিত হয় না।
(iii) লিখিত সংবিধান নির্দিষ্ট কোনাে সংস্থার দ্বারা প্রণীত হয়। অপরপক্ষে অলিখিত সংবিধান কোনাে সংস্থার দ্বারা প্রণীত হয় না। এটা ক্রমবিবর্তনের ফল।
(iv) সংবিধান কবে রচিত হয়েছে এবং কবে থেকে তা কার্যকর হয়েছে লিখিত সংবিধান স্পষ্ট করে লিপিবদ্ধ থাকে। অন্যদিকে অলিখিত সংবিধানে রচনাকাল ও কার্যকাল লেখার কোনাে সুযােগ নেই।
(v) লিখিত সংবিধান সাধারণত অনমনীয় প্রকৃতির হয়ে থাকে। অন্যদিকে অলিখিত সংবিধান সাধারণত নমনীয় হয়ে থাকে।
(vi) লিখিত সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। আইনসভা এমন কোনাে আইন প্রণয়ন করতে পারে না যা এই সংবিধান বিরােধী। কিন্তু অলিখিত সাংবিধানিক ব্যবস্থায় আইনসভার ক্ষমতা অসীম।
(vii) সংবিধান সংশােধন বিষয়েও উভয়প্রকার সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য আছে। লিখিত সংবিধানকে অলিখিত সংবিধানের মতাে সাধারণ আইন পাস করার পদ্ধতিতে সংশােধন করা যায় না। সংবিধান সংশােধন করতে হলে বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়।
(viii) লিখিত সংবিধানে আছে সংবিধানের প্রাধান্য। এখানে সাংবিধানিক আইন ও সাধারণ আইনের মধ্যে পার্থক্য করা হয়। সংবিধান যেখানে অলিখিত, সেখানে সাংবিধানিক আইনও সাধারণ আইনের মতাে প্রণয়ন করা যায়। দু-ধরনের আইনের মধ্যে মৌলিক কোনাে পার্থক্য থাকে না।
(ix) লিখিত সংবিধানে সরকারের প্রতিটি বিভাগের এক্তিয়ার নির্দিষ্ট করা থাকে। ফলে আন্তঃবিভাগ বিরােধের সম্ভাবনা কম থাকে। কিন্তু অলিখিত সংবিধানে বিভাগগুলির ক্ষমতা নির্দিষ্টকরণে অস্পষ্টতা লক্ষ করা যায়।
(x) লিখিত সংবিধানে বিচার বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিচার বিভাগ সরকারি আইনের ব্যাখ্যা দেয়। আইন সংবিধান-বিরােধী হলে তা বাতিল করে দেয়। যেসব দেশের সংবিধান অলিখিত, সেসব দেশে বিচার বিভাগের এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখা যায় না।
(iv) সংবিধান কবে রচিত হয়েছে এবং কবে থেকে তা কার্যকর হয়েছে লিখিত সংবিধান স্পষ্ট করে লিপিবদ্ধ থাকে। অন্যদিকে অলিখিত সংবিধানে রচনাকাল ও কার্যকাল লেখার কোনাে সুযােগ নেই।
(v) লিখিত সংবিধান সাধারণত অনমনীয় প্রকৃতির হয়ে থাকে। অন্যদিকে অলিখিত সংবিধান সাধারণত নমনীয় হয়ে থাকে।
(vi) লিখিত সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। আইনসভা এমন কোনাে আইন প্রণয়ন করতে পারে না যা এই সংবিধান বিরােধী। কিন্তু অলিখিত সাংবিধানিক ব্যবস্থায় আইনসভার ক্ষমতা অসীম।
(vii) সংবিধান সংশােধন বিষয়েও উভয়প্রকার সংবিধানের মধ্যে পার্থক্য আছে। লিখিত সংবিধানকে অলিখিত সংবিধানের মতাে সাধারণ আইন পাস করার পদ্ধতিতে সংশােধন করা যায় না। সংবিধান সংশােধন করতে হলে বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়।
(viii) লিখিত সংবিধানে আছে সংবিধানের প্রাধান্য। এখানে সাংবিধানিক আইন ও সাধারণ আইনের মধ্যে পার্থক্য করা হয়। সংবিধান যেখানে অলিখিত, সেখানে সাংবিধানিক আইনও সাধারণ আইনের মতাে প্রণয়ন করা যায়। দু-ধরনের আইনের মধ্যে মৌলিক কোনাে পার্থক্য থাকে না।
(ix) লিখিত সংবিধানে সরকারের প্রতিটি বিভাগের এক্তিয়ার নির্দিষ্ট করা থাকে। ফলে আন্তঃবিভাগ বিরােধের সম্ভাবনা কম থাকে। কিন্তু অলিখিত সংবিধানে বিভাগগুলির ক্ষমতা নির্দিষ্টকরণে অস্পষ্টতা লক্ষ করা যায়।
(x) লিখিত সংবিধানে বিচার বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিচার বিভাগ সরকারি আইনের ব্যাখ্যা দেয়। আইন সংবিধান-বিরােধী হলে তা বাতিল করে দেয়। যেসব দেশের সংবিধান অলিখিত, সেসব দেশে বিচার বিভাগের এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখা যায় না।
প্রশ্ন ৮) ভারতীয় সংবিধান সংশােধন পদ্ধতিটি বর্ণনা করাে।
উত্তর : ভারতের সংবিধান সংশােধনের পদ্ধতিটি তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়-
(i) সংবিধানের কতকগুলি বিষয়, যেমন—নতুন রাজ্য গঠন, রাজ্য সীমানার পুনর্গঠন, অঙ্গরাজ্যে দ্বিতীয় কক্ষের প্রবর্তন বা বিলােপসাধন, নাগরিকতা অর্জন, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের গঠন প্রভুতি পার্লামেন্ট সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠের ভােটে পরিবর্তন করতে পারে। পার্লামেন্টে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে এই সংশােধন সম্ভব বলে এই অংশগুলি সুপরিবর্তনীয় বলা যেতে পারে।
(ii) সংবিধানের কতকগুলি বিষয় পরিবর্তনের জন্য এই বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। সংশােধনী বিল পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে পাস হওয়ার প্রয়ােজন হয়। সমগ্র সদস্যের অধিকাংশ এবং প্রত্যেক কক্ষের উপস্থিত এবং ভােটপ্রদানকারী সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সংশােধন প্রস্তাব পাস হওয়া প্রয়ােজন। তারপর বিলটিকে অঙ্গরাজ্যগুলির অন্তত অর্ধেক আইনসভার দ্বারা অনুমােদিত হওয়ার প্রয়ােজন হয়। রাজ্যের দ্বারা অনুমােদিত বিলটি রাষ্ট্রপতির সম্মতিলাভ করলে সংবিধানের সংশােধন সম্ভব হয়। রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, কেন্দ্রে ও অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধিত্ব, সংবিধানের সংশােধন পদ্ধতি প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কিত ধারাগুলি পরিবর্তন করতে হলে এই বিশেষ পদ্ধতির আশ্রয় গ্রহণ করতে হয়।
(iii) সংবিধানের অন্যান্য ধারা ও উপধারা সংশােধনের জন্য পার্লামেন্টের যে-কোনাে কক্ষে বিল পেশ করা যায়। প্রত্যেক কক্ষের উপস্থিত ও ভােটপ্রদানকারী সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশের সংখ্যাগরিষ্টতায় এবং সমগ্র কক্ষের সদস্যের অধিকাংশ দ্বারা সমর্থিত হলে রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য দল পাঠানাে হয়। রাষ্ট্রপতির সম্মতিলাভে সংবিধানের সংশােধন হয়। সংবিধানের তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায়ে বর্ণিত মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্রপরিচালনায় নির্দেশমুলক নীতিসহ অন্যান্য অংশ এই পদ্ধতিতে সংশােধন করা যায়।
(ii) সংবিধানের কতকগুলি বিষয় পরিবর্তনের জন্য এই বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। সংশােধনী বিল পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে পাস হওয়ার প্রয়ােজন হয়। সমগ্র সদস্যের অধিকাংশ এবং প্রত্যেক কক্ষের উপস্থিত এবং ভােটপ্রদানকারী সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সংশােধন প্রস্তাব পাস হওয়া প্রয়ােজন। তারপর বিলটিকে অঙ্গরাজ্যগুলির অন্তত অর্ধেক আইনসভার দ্বারা অনুমােদিত হওয়ার প্রয়ােজন হয়। রাজ্যের দ্বারা অনুমােদিত বিলটি রাষ্ট্রপতির সম্মতিলাভ করলে সংবিধানের সংশােধন সম্ভব হয়। রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, কেন্দ্রে ও অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধিত্ব, সংবিধানের সংশােধন পদ্ধতি প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কিত ধারাগুলি পরিবর্তন করতে হলে এই বিশেষ পদ্ধতির আশ্রয় গ্রহণ করতে হয়।
(iii) সংবিধানের অন্যান্য ধারা ও উপধারা সংশােধনের জন্য পার্লামেন্টের যে-কোনাে কক্ষে বিল পেশ করা যায়। প্রত্যেক কক্ষের উপস্থিত ও ভােটপ্রদানকারী সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশের সংখ্যাগরিষ্টতায় এবং সমগ্র কক্ষের সদস্যের অধিকাংশ দ্বারা সমর্থিত হলে রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য দল পাঠানাে হয়। রাষ্ট্রপতির সম্মতিলাভে সংবিধানের সংশােধন হয়। সংবিধানের তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায়ে বর্ণিত মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্রপরিচালনায় নির্দেশমুলক নীতিসহ অন্যান্য অংশ এই পদ্ধতিতে সংশােধন করা যায়।
প্রশ্ন ৯) নমনীয় সংবিধানের গুণ ও দোষ আলােচনা করে।
উত্তর :গুণ
(i) এই সংবিধান সহজে পরিবর্তন করা যায়।
(ii) এটি গতিশীল। এই সংবিধান কখনােই প্রাণহীন দলিলে পর্যবসিত হয় না।
(iii) এই সংবিধান রক্ষণশীল নয়।
(iv) এই সংবিধানে সহজেই জনগণের চাহিদা মেটায়। তাই বিদ্রোহ-বিপ্লবের আশঙ্কা কম থাকে।
(v) জরুরি অবস্থায় এটি উপযােগী। লর্ড ব্রাইস এই দিকটার প্রতি বেশি গুরুত্ব আরােপ করেছেন।
দোষ
(i) রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেছেন, সুপরিবর্তনীয় সংবিধান, স্থিতিশীল হয় না। শাসকগােষ্ঠী প্রয়ােজনে ও অপ্রয়ােজনে সংবিধানকে পরিবর্তিত করে নিজেদের স্বার্থে।
(ii) সংবিধানের গুরুত্ব ও মর্যাদাহানি ঘটে।
(iii) ব্যক্তিস্বাধীনতা বিপন্ন হয়। বিচার বিভাগের গুরুত্ব হ্রাস হয়।
(iv) শাসকগােষ্ঠী ইচ্ছা করলেই সংবিধান সংশােধন করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে পারে।
(v) এই সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনুপযােগী। সহজে সংবিধান পরিবর্তন করার ফলে ক্ষমতা বণ্টন ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্থ হবার আশঙ্কা থাকে। যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রকৃতি বিঘ্নিত হয়।
(i) এই সংবিধান সহজে পরিবর্তন করা যায়।
(ii) এটি গতিশীল। এই সংবিধান কখনােই প্রাণহীন দলিলে পর্যবসিত হয় না।
(iii) এই সংবিধান রক্ষণশীল নয়।
(iv) এই সংবিধানে সহজেই জনগণের চাহিদা মেটায়। তাই বিদ্রোহ-বিপ্লবের আশঙ্কা কম থাকে।
(v) জরুরি অবস্থায় এটি উপযােগী। লর্ড ব্রাইস এই দিকটার প্রতি বেশি গুরুত্ব আরােপ করেছেন।
দোষ
(i) রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেছেন, সুপরিবর্তনীয় সংবিধান, স্থিতিশীল হয় না। শাসকগােষ্ঠী প্রয়ােজনে ও অপ্রয়ােজনে সংবিধানকে পরিবর্তিত করে নিজেদের স্বার্থে।
(ii) সংবিধানের গুরুত্ব ও মর্যাদাহানি ঘটে।
(iii) ব্যক্তিস্বাধীনতা বিপন্ন হয়। বিচার বিভাগের গুরুত্ব হ্রাস হয়।
(iv) শাসকগােষ্ঠী ইচ্ছা করলেই সংবিধান সংশােধন করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে পারে।
(v) এই সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনুপযােগী। সহজে সংবিধান পরিবর্তন করার ফলে ক্ষমতা বণ্টন ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্থ হবার আশঙ্কা থাকে। যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রকৃতি বিঘ্নিত হয়।
প্রশ্ন ১০) অনমনীয় সংবিধানের গুণ ও দোষ আলোচনা করাে।
উত্তর :গুণ
(i) দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সুস্পষ্ট।
(ii) এই সংবিধান স্থিতিশীল। খেয়ালখুশি অনুযায়ী পরিবর্তন করা যায় না।
(iii) গণতন্ত্রের পক্ষে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
(iv) মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত হয়। শাসকগােষ্ঠী ইচ্ছানুসারে সংবিধান পরিবর্তন করে মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
(v) বিচার বিভাগের প্রাধান্য থাকে। আইনসভা যদি সংবিধান-বিরােধী কোনাে আইন পাস করে তবে বিচার বিভাগ তা বাতিল করে দিতে পারে।
(vi) যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে উপযােগী। এখানে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন সহজে
পরিবর্তন করা যায় না।
দোষ
(i) এই ধরনের সংবিধানের কিছু অসুবিধাও আছে। যেমন—সংবিধান রক্ষণশীল হয়। গতিহীন হয়ে পড়ে। ফলে সমাজে বিদ্রোহ ও বিপ্লবের আশঙ্কা থেকে যায়।
(i) দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সুস্পষ্ট।
(ii) এই সংবিধান স্থিতিশীল। খেয়ালখুশি অনুযায়ী পরিবর্তন করা যায় না।
(iii) গণতন্ত্রের পক্ষে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
(iv) মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত হয়। শাসকগােষ্ঠী ইচ্ছানুসারে সংবিধান পরিবর্তন করে মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
(v) বিচার বিভাগের প্রাধান্য থাকে। আইনসভা যদি সংবিধান-বিরােধী কোনাে আইন পাস করে তবে বিচার বিভাগ তা বাতিল করে দিতে পারে।
(vi) যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে উপযােগী। এখানে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টন সহজে
পরিবর্তন করা যায় না।
দোষ
(i) এই ধরনের সংবিধানের কিছু অসুবিধাও আছে। যেমন—সংবিধান রক্ষণশীল হয়। গতিহীন হয়ে পড়ে। ফলে সমাজে বিদ্রোহ ও বিপ্লবের আশঙ্কা থেকে যায়।
(ii) অনেকসময় বিচারপতিরা, যারা বিশেষ শ্রেণি থেকে আসে তারা বড়ােলােক। স্বার্থবিরোধী আইনকে বাতিল করে দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার রাষ্ট্রপতি রুজভেল্ট নিউ ডিল (New Deal) নামে পরিচিত যেসব সমাজকল্যাণকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন, সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিরা তা এভাবেই বাতিল করে দিয়েছিলেন।
(iii) জরুরি অবস্থার অনুপযােগী। জরুরি অবস্থায় প্রয়ােজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।
(iv) সংখ্যালঘুদের স্বার্থের পরিপন্থী।
(v) সংসদীয় ব্যবস্থায় অনুপযােগী। কারণ, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে আইনসভা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হতে পারে না।
(iii) জরুরি অবস্থার অনুপযােগী। জরুরি অবস্থায় প্রয়ােজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।
(iv) সংখ্যালঘুদের স্বার্থের পরিপন্থী।
(v) সংসদীয় ব্যবস্থায় অনুপযােগী। কারণ, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে আইনসভা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হতে পারে না।
প্রশ্ন ১১) “ভারতীয় সংবিধান পরিবর্তনীয়তা ও দুষ্পরিবর্তনীয়তার সমন্বয় করেছে”—উক্তিটি ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর : সংবিধানের দুষ্পরিবর্তনীয়তা যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য। কেন্দ্র ও অঙ্গরাজ্যগুলির স্বাধীনতা রক্ষার জন্যই সংবিধান দুস্পরিবর্তনীয় হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান সংশােধন করতে হলে মার্কিন কংগ্রেসের দুই-তৃতীয়াংশের ভােটের দ্বারা অথবা অঙ্গরাজ্যগুলির দুই-তৃতীয়াংশের আবেদন অনুসারে আহত এক সভার দ্বারা সংশােধনের প্রস্তাব আনা হয় এবং ওই প্রস্তাব অঙ্গরাজ্যগুলির তিন-চতুর্থাংশের দ্বারা সমর্থিত হওয়া প্রয়ােজন। অতএব দেখা যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান সংশােধন পদ্ধতি অতি জটিল। আবার আমরা যদি লক্ষ করি তাহলে দেখব যে, ব্রিটেনের সংবিধান সংশােধন পদ্ধতি অতি নমনীয়। ভারতের ক্ষেত্রে ক্ষমতা বণ্টন সংক্রান্ত বিষয়ে শাসনতন্ত্রকে দুষ্পরিবর্তনীয় বলা যেতে পারে। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা বণ্টন, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, ইউনিয়ন ও রাজ্যগুলির শাসন বিভাগীয় ক্ষমতা প্রভৃতি বিষয়ে শাসনতন্ত্র সংশােধন করতে হলে অঙ্গরাজ্যগুলির আইনসভার সম্মতি প্রয়ােজন। আবার কতকগুলি ধারার পরিবর্তনের জন্য পার্লামেন্টের মােট সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের সম্মতি নিলেই চলে, অঙ্গরাজ্যগুলির অনুমােদন প্রয়ােজন হয় না। আবার কতকগুলি বিষয় আছে, যা পার্লামেন্ট সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে পরিবর্তন করতে পারে। সুতরাং সামগ্রিক বিচারে ভারতীয় শাসনতন্ত্রকে সুপরিবর্তনীয়তা ও দুষ্পরিবর্তনীয়তার সমন্বয় বলা
যেতে পারে।
যেতে পারে।
প্রশ্ন ১২) ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করাে।
উত্তর : সংবিধানের ১(১) নং ধারায় বলা হয়েছে, —“India, that is Bharat, shall be a Union of States”। অর্থাৎ ভারত হল রাজ্যসমূহের ইউনিয়ন। তাহলে দেখা যাচ্ছে,—সংবিধানে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র বলা হয়নি। তা সত্ত্বেও এখানে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগুলি বর্তমান।
(i) ভারতের সংবিধান লিখিত। নির্দিষ্ট দিনে অর্থাৎ ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ২৬ নভেম্বর নির্দিষ্ট সভা অর্থাৎ গণপরিষদ দ্বারা এই সংবিধান গৃহীত হয়েছে।
(ii) এখানে দুই-ধরনের সরকার আছে—একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং ২৯টি রাজ্য সরকার।
(iii) সংবিধান উভয় সরকারের মধ্যে কেন্দ্রতালিকা, রাজ্যতালিকা এবং যুগ্ম তালিকার মাধ্যমে ক্ষমতা ভাগ করে দিয়েছে।
(i) ভারতের সংবিধান লিখিত। নির্দিষ্ট দিনে অর্থাৎ ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ২৬ নভেম্বর নির্দিষ্ট সভা অর্থাৎ গণপরিষদ দ্বারা এই সংবিধান গৃহীত হয়েছে।
(ii) এখানে দুই-ধরনের সরকার আছে—একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং ২৯টি রাজ্য সরকার।
(iii) সংবিধান উভয় সরকারের মধ্যে কেন্দ্রতালিকা, রাজ্যতালিকা এবং যুগ্ম তালিকার মাধ্যমে ক্ষমতা ভাগ করে দিয়েছে।
(iv) ভারতের সংবিধান দুস্পরিবর্তনীয়। কারণ কয়েকটি ক্ষেত্রে সংবিধান সংশােধন করতে গেলে পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন দরকার, আবার কয়েকটি ক্ষেত্রে এছাড়া অর্ধেক অঙ্গরাজ্যের সমর্থন প্রয়ােজন।
(v) এখানে একটি নিরপেক্ষ নির্ভীক যুক্তরাষ্টীয় আদালত আছে। এই আদালত বা সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের আভভাবক এবং চূড়ান্ত ব্যাখ্যাকর্তা। সংবিধান-বিরােধী কোনাে আইন তৈরি হলে সুপ্রিমকোর্ট তা বাতিল করতে পারে।
(vi) এখানে যুক্তরাষ্ট্রীয় আইনসভার দুটি কক্ষ আছে—লােকসভা ও রাজ্যসভা। সুতরাং দেখা যাচ্ছে,—ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগলি আছে। তা ছাড়া ডাইসি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গঠনের মূল দুটি শক্তি কাজ করে। একটি হল মিলনের ইচ্ছা এবং অপরটি হল পৃথক থাকার ইচ্ছা। ভারতে এই দুটি শক্তির মিলনে যুক্তরাষ্ট হয়েছে।
(v) এখানে একটি নিরপেক্ষ নির্ভীক যুক্তরাষ্টীয় আদালত আছে। এই আদালত বা সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের আভভাবক এবং চূড়ান্ত ব্যাখ্যাকর্তা। সংবিধান-বিরােধী কোনাে আইন তৈরি হলে সুপ্রিমকোর্ট তা বাতিল করতে পারে।
(vi) এখানে যুক্তরাষ্ট্রীয় আইনসভার দুটি কক্ষ আছে—লােকসভা ও রাজ্যসভা। সুতরাং দেখা যাচ্ছে,—ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগলি আছে। তা ছাড়া ডাইসি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গঠনের মূল দুটি শক্তি কাজ করে। একটি হল মিলনের ইচ্ছা এবং অপরটি হল পৃথক থাকার ইচ্ছা। ভারতে এই দুটি শক্তির মিলনে যুক্তরাষ্ট হয়েছে।
প্রশ্ন ১৩) ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্র প্রবণতা সংক্ষেপে আলােচনা করাে।
উত্তর : আকৃতির দিক থেকে ভারত যুক্তরাষ্ট্র হলেও এখানে কেন্দ্র-প্রবণতা এতই বেশি যে, একে প্রকৃত যুক্তরাষ্ট্র বলা যায় না। অধ্যাপক ডি, এন, ব্যানার্জি বলেছেন,—“ভারতীয় সংবিধান গঠনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র হলেও এর কেন্দ্র-প্রবণতা অত্যন্ত স্পষ্ট।”
(i) ক্ষমতা ভাগের ক্ষেত্রে দেখা যায়,—কেন্দ্রীয় সরকার কেন্দ্রতালিকার বিষয়গুলির ওপর আইন তৈরি করে। আবার যুগ্ম তালিকায় তার প্রাধান্য বর্তমান। এছাড়া “অবশিষ্ট ক্ষমতা” তার হাতে আছে। কেন্দ্রের এই ব্যাপক ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের বিরােধী।
(ii) কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যতালিকার ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারে। ২৪৯ নং ধারায় বলা হয়েছে, –রাজ্যসভার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য কেন্দ্রকে অনুমতি দিলে কেন্দ্র রাজ্য তালিকার ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারবে। এটি কেন্দ্রীয় প্রবণতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
(iii) অঙ্গরাজ্যের প্রধান শাসক হলেন রাজ্যপাল। অথচ এঁকে নিয়ােগ করেন কেন্দ্রীয় সরকার। রাষ্ট্রপতির অধীনে থেকে তাঁকে কাজ করতে হয়। এতে রাজ্যের স্বাতন্ত্র্য ক্ষুন্ন হয়েছে।
(iv) সংবিধানের ২৫৬ ও ২৫৭ নম্বর ধারা অনুসারে কেন্দ্র রাজ্যকে নির্দেশ দিতে পারে। এই নির্দেশ অমান্য করলে রাষ্ট্রপতি রাজ্যের শাসনভার নিজের হাতে নিতে পারেন।
(v) দেশে জরুরি অবস্থা ঘােষিত হলে,-ভারত সম্পূর্ণভাবে এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়। অধ্যাপক যােশির (Joshi) ভাষায়, -“ভারত ইউনিয়ন স্বাভাবিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু জরুরি অবস্থায় এককেন্দ্রিক হিসাবে কাজ করে।”
(vi) পার্লামেন্ট ভারতের যে-কোনাে অঙ্গরাজ্যের নাম ও সীমানা পরিবর্তন করতে পারে। এটি নিঃসন্দেহে রাজ্যের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করেছে।
(vii) সারা ভারতের জন্য একটিমাত্র নির্বাচন কমিশন, একটি কেন্দ্রীয় পাবলিক সার্ভিস কমিশন ও একটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা কমিশন থাকায় রাজ্যের স্বাতন্ত্র্য ক্ষুন্ন করেছে।
(viii) বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের প্রাধান্য বর্তমান। ভারতের সব আদালত সুপ্রিমকোর্টের অধীনে কাজ করে।
(ix) ভারতের অঙ্গরাজ্যের কোনাে সংবিধান নেই, এখানে দ্বিনাগরিকতা নেই। এগুলি না থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দাবি দুর্বল হয়েছে।
(i) ক্ষমতা ভাগের ক্ষেত্রে দেখা যায়,—কেন্দ্রীয় সরকার কেন্দ্রতালিকার বিষয়গুলির ওপর আইন তৈরি করে। আবার যুগ্ম তালিকায় তার প্রাধান্য বর্তমান। এছাড়া “অবশিষ্ট ক্ষমতা” তার হাতে আছে। কেন্দ্রের এই ব্যাপক ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের বিরােধী।
(ii) কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যতালিকার ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারে। ২৪৯ নং ধারায় বলা হয়েছে, –রাজ্যসভার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য কেন্দ্রকে অনুমতি দিলে কেন্দ্র রাজ্য তালিকার ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারবে। এটি কেন্দ্রীয় প্রবণতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
(iii) অঙ্গরাজ্যের প্রধান শাসক হলেন রাজ্যপাল। অথচ এঁকে নিয়ােগ করেন কেন্দ্রীয় সরকার। রাষ্ট্রপতির অধীনে থেকে তাঁকে কাজ করতে হয়। এতে রাজ্যের স্বাতন্ত্র্য ক্ষুন্ন হয়েছে।
(iv) সংবিধানের ২৫৬ ও ২৫৭ নম্বর ধারা অনুসারে কেন্দ্র রাজ্যকে নির্দেশ দিতে পারে। এই নির্দেশ অমান্য করলে রাষ্ট্রপতি রাজ্যের শাসনভার নিজের হাতে নিতে পারেন।
(v) দেশে জরুরি অবস্থা ঘােষিত হলে,-ভারত সম্পূর্ণভাবে এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়। অধ্যাপক যােশির (Joshi) ভাষায়, -“ভারত ইউনিয়ন স্বাভাবিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু জরুরি অবস্থায় এককেন্দ্রিক হিসাবে কাজ করে।”
(vi) পার্লামেন্ট ভারতের যে-কোনাে অঙ্গরাজ্যের নাম ও সীমানা পরিবর্তন করতে পারে। এটি নিঃসন্দেহে রাজ্যের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করেছে।
(vii) সারা ভারতের জন্য একটিমাত্র নির্বাচন কমিশন, একটি কেন্দ্রীয় পাবলিক সার্ভিস কমিশন ও একটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা কমিশন থাকায় রাজ্যের স্বাতন্ত্র্য ক্ষুন্ন করেছে।
(viii) বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের প্রাধান্য বর্তমান। ভারতের সব আদালত সুপ্রিমকোর্টের অধীনে কাজ করে।
(ix) ভারতের অঙ্গরাজ্যের কোনাে সংবিধান নেই, এখানে দ্বিনাগরিকতা নেই। এগুলি না থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দাবি দুর্বল হয়েছে।