ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃতি
প্রশ্ন ১) এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা বলতে কী বােঝ?
উত্তর : সরকারের শাসনব্যবস্থার শ্রেণিবিভাগ করার কাজ প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে। যেমন, অ্যারিস্টট্ল শাসকের সংখ্যার ভিত্তিতে সরকারের শ্রেণিবিভাগ করেছেন। অন্যদিকে ক্ষমতা বণ্টনের ভিত্তিতে লর্ড ব্রাইস (Bryce) শাসনব্যবস্থাকে দু-ভাগে ভাগ করেছেন। (ক) এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা ও (খ) যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা।
এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার সংজ্ঞা –
অধ্যাপক গার্নার (Garner) বলেছেন, যে শাসনব্যবস্থায় একটিমাত্র সরকারের হাতে দেশের সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকে, তাকে বলে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা। এখানে একটি মাত্র সরকার থাকে। সেটি হল কেন্দ্রীয় সরকার। এই সরকার সারা দেশের শাসনকার্য পরিচালনা করে। অবশ্য কাজের সুবিধার জন্যে এই সরকার এক বা একাধিক আঞ্চলিক সরকার তৈরি করতে পারে। তবে আঞ্চলিক সরকারগুলি থাকবে, কি থাকবে না, তারা কতটুকু ক্ষমতা ভােগ করবে, তা কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
এককেন্দ্রিক সরকারের উদাহরণ হল,—ব্রিটেনের সরকার। এখানে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বেসর্বা। এখানে আঞ্চলিক সরকার থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাজ করে। ব্রিটেন ছাড়া বাংলাদেশ, গণপ্রজাতন্ত্রী চিন, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা আছে।
এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার সংজ্ঞা –
অধ্যাপক গার্নার (Garner) বলেছেন, যে শাসনব্যবস্থায় একটিমাত্র সরকারের হাতে দেশের সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকে, তাকে বলে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা। এখানে একটি মাত্র সরকার থাকে। সেটি হল কেন্দ্রীয় সরকার। এই সরকার সারা দেশের শাসনকার্য পরিচালনা করে। অবশ্য কাজের সুবিধার জন্যে এই সরকার এক বা একাধিক আঞ্চলিক সরকার তৈরি করতে পারে। তবে আঞ্চলিক সরকারগুলি থাকবে, কি থাকবে না, তারা কতটুকু ক্ষমতা ভােগ করবে, তা কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
এককেন্দ্রিক সরকারের উদাহরণ হল,—ব্রিটেনের সরকার। এখানে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বেসর্বা। এখানে আঞ্চলিক সরকার থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাজ করে। ব্রিটেন ছাড়া বাংলাদেশ, গণপ্রজাতন্ত্রী চিন, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা আছে।
প্রশ্ন ২) এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।
উত্তর : এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করা যায়। যেমন—
প্রথমত, এখানে একটিমাত্র সরকার অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার হল সর্বেসর্বা। তার নির্দেশে সারা দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয়। অবশ্য কাজের সুবিধার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কয়েকটি আঞ্চলিক সরকার তৈরি করতে পারে। তবে তাদের কোনাে স্বাধীনতা থাকে না।
দ্বিতীয়ত, এখানে সংবিধান দুস্পরিবর্তনীয় নয়। কেন্দ্রীয় আইনসভা একাই সহজ পদ্ধতিতে সংবিধান সংশােধন করতে পারে। যেহেতু এখানে যুক্তরাষ্ট্রের মতাে অঙ্গরাজ্য নেই, সেহেতু তাদের সম্মতি নিতে হয় না বা অন্য কোনাে জটিল পদ্ধতির প্রয়ােজন হয় না।।
তৃতীয়ত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য থাকে না। তার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় আইনসভার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
চতুর্থত, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লিখিত হতেই হবে। কিন্তু এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবিধান লিখিত হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। যেমন, গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের সংবিধান লিখিত। কিন্ত ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত। অথচ দুটি দেশেই এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা চালু আছে।
পঞ্চমত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় আইনসভার প্রাধান্য থাকে বলে বিচার বিভাগ দুর্বল হয়। কেন্দ্রীয় আইনসভার তৈরি কোনাে আইনকে বিচার বিভাগ অবৈধ বলে ঘােষণা করতে পারে না। যেমন, ব্রিটেনের আদালতের এই ক্ষমতা নেই।
প্রথমত, এখানে একটিমাত্র সরকার অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার হল সর্বেসর্বা। তার নির্দেশে সারা দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয়। অবশ্য কাজের সুবিধার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কয়েকটি আঞ্চলিক সরকার তৈরি করতে পারে। তবে তাদের কোনাে স্বাধীনতা থাকে না।
দ্বিতীয়ত, এখানে সংবিধান দুস্পরিবর্তনীয় নয়। কেন্দ্রীয় আইনসভা একাই সহজ পদ্ধতিতে সংবিধান সংশােধন করতে পারে। যেহেতু এখানে যুক্তরাষ্ট্রের মতাে অঙ্গরাজ্য নেই, সেহেতু তাদের সম্মতি নিতে হয় না বা অন্য কোনাে জটিল পদ্ধতির প্রয়ােজন হয় না।।
তৃতীয়ত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য থাকে না। তার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় আইনসভার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
চতুর্থত, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লিখিত হতেই হবে। কিন্তু এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবিধান লিখিত হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। যেমন, গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের সংবিধান লিখিত। কিন্ত ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত। অথচ দুটি দেশেই এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা চালু আছে।
পঞ্চমত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় আইনসভার প্রাধান্য থাকে বলে বিচার বিভাগ দুর্বল হয়। কেন্দ্রীয় আইনসভার তৈরি কোনাে আইনকে বিচার বিভাগ অবৈধ বলে ঘােষণা করতে পারে না। যেমন, ব্রিটেনের আদালতের এই ক্ষমতা নেই।
প্রশ্ন ৩) এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার সুবিধাগুলি আলােচনা করাে।
উত্তর : এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় বেশ কয়েকটি সুবিধা আছে। সেগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল-
প্রথমত, এই শাসনব্যবস্থায় একটি সরকার থাকায় সারা দেশে একই আইন ও নীতি চালু হয়। ফলে সরকারের তৈরি আইনের মধ্যে কোনাে বিরােধের সম্ভাবনা থাকে না।
দ্বিতীয়ত, সারা দেশে একই আইন ও শাসন চালু হওয়ায় এই শাসনব্যবস্থায় ঐক্য এবং সংহতি গড়ে ওঠে। কারণ, কোনাে অংশ বঞ্চিত বলে মনে করে না। ফলে বিচ্ছিন্নতা বােধ নিতে পারে না।
তৃতীয়ত, দেশে সংকটজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে, এই শাসনব্যবস্থায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। কারণ, একটি মাত্র সরকার থাকায় তার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে কোনাে বাধা থাকে।
চতুর্থত, এখানে একটি কেন্দ্রীয় সরকার থাকায় বলিষ্ঠ বিদেশ নীতি গ্রহণ করতে পারে। তার পক্ষে আন্তর্জাতিক সন্ধি ও চুক্তি কার্যকর করা সহজ হয় বলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সরকারের ও দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়।
পঞ্চমত, এই শাসনব্যবস্থায় সংবিধান সুপরিবর্তনীয় হয় বলে, সংবিধান সময়ের সঙ্গে তাল রেখে যুগের চাহিদা মেটাতে পারে। তাতে বিক্ষোভের সম্ভাবনা থাকে না।
ষষ্ঠত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতা কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ভাগ হয় না। ফলে সরকার শক্তিশালী হয়। কারণ, ক্ষমতা ভাগ হলে সরকার দুর্বল হবে। ক্ষমতা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিরােধ দেখা দিলে কেন্দ্র দুর্বল হয়ে পড়বে।
সপ্তমত, একটিমাত্র সরকার থাকায় এই শাসনব্যবস্থায় ব্যয়ভার অনেক কম। সেই কারণে দরিদ্র দেশের পক্ষে এই ব্যবস্থা কাম্য বলে মনে করা হয়।
প্রথমত, এই শাসনব্যবস্থায় একটি সরকার থাকায় সারা দেশে একই আইন ও নীতি চালু হয়। ফলে সরকারের তৈরি আইনের মধ্যে কোনাে বিরােধের সম্ভাবনা থাকে না।
দ্বিতীয়ত, সারা দেশে একই আইন ও শাসন চালু হওয়ায় এই শাসনব্যবস্থায় ঐক্য এবং সংহতি গড়ে ওঠে। কারণ, কোনাে অংশ বঞ্চিত বলে মনে করে না। ফলে বিচ্ছিন্নতা বােধ নিতে পারে না।
তৃতীয়ত, দেশে সংকটজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে, এই শাসনব্যবস্থায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। কারণ, একটি মাত্র সরকার থাকায় তার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে কোনাে বাধা থাকে।
চতুর্থত, এখানে একটি কেন্দ্রীয় সরকার থাকায় বলিষ্ঠ বিদেশ নীতি গ্রহণ করতে পারে। তার পক্ষে আন্তর্জাতিক সন্ধি ও চুক্তি কার্যকর করা সহজ হয় বলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সরকারের ও দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়।
পঞ্চমত, এই শাসনব্যবস্থায় সংবিধান সুপরিবর্তনীয় হয় বলে, সংবিধান সময়ের সঙ্গে তাল রেখে যুগের চাহিদা মেটাতে পারে। তাতে বিক্ষোভের সম্ভাবনা থাকে না।
ষষ্ঠত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতা কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ভাগ হয় না। ফলে সরকার শক্তিশালী হয়। কারণ, ক্ষমতা ভাগ হলে সরকার দুর্বল হবে। ক্ষমতা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিরােধ দেখা দিলে কেন্দ্র দুর্বল হয়ে পড়বে।
সপ্তমত, একটিমাত্র সরকার থাকায় এই শাসনব্যবস্থায় ব্যয়ভার অনেক কম। সেই কারণে দরিদ্র দেশের পক্ষে এই ব্যবস্থা কাম্য বলে মনে করা হয়।
প্রশ্ন ৪) এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার অসুবিধাগুলি আলােচনা করাে।
উত্তর : এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় কিছু অসুবিধা বর্তমান। নিম্নে সেই অসুবিধাগুলি আলােচনা করা হল –
প্রথমত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় একটি মাত্র সরকার থাকে বলে বেশি মানুষ শাসনকার্যে অংশ নিতে পারে না। ফলে মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটে না।
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এ্যাক্টন (Acton) বলেছেন, “ক্ষমতা মানুষকে দুর্নীতিপরায়ণ করে এবং বেশি ক্ষমতা মানুষকে বেশি দুর্নীতিপরায়ণ করে তােলে।” এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার প্রচুর ক্ষমতার অধিকারী হওয়ায় দুর্নীতিগ্রস্ত ও স্বৈরাচারী হতে পারে।
তৃতীয়ত, এখানে সুশাসন সম্ভব নয়। বিশেষ করে বৃহৎ রাষ্ট্রে একটি মাত্র সরকারের পক্ষে আঞ্চলিক সমস্যার দিকে দৃষ্টি দেওয়া সম্ভব নয়। তাতে স্থানীয় স্বার্থ অবহেলিত হয়।
চতুর্থত, প্রত্যেকের ক্ষমতার একটা সীমা আছে। এককেন্দ্রিক শাসনে একটি সরকারের উপর সব সমস্যার সমাধানের ফলে আমলাদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
পঞ্চমত, এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার কেন্দ্র এক জায়গায় থাকে, ফলে বিদেশি আক্রমণে সহজে ভেঙে পড়ে। ক্ষমতার কেন্দ্র একাধিক হলে আক্রমণকারী সহজে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে না।
ষষ্ঠত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় স্বায়ত্তশাসনের সুযােগ থাকে না বলে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ হতে পারে না।
প্রথমত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় একটি মাত্র সরকার থাকে বলে বেশি মানুষ শাসনকার্যে অংশ নিতে পারে না। ফলে মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটে না।
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এ্যাক্টন (Acton) বলেছেন, “ক্ষমতা মানুষকে দুর্নীতিপরায়ণ করে এবং বেশি ক্ষমতা মানুষকে বেশি দুর্নীতিপরায়ণ করে তােলে।” এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার প্রচুর ক্ষমতার অধিকারী হওয়ায় দুর্নীতিগ্রস্ত ও স্বৈরাচারী হতে পারে।
তৃতীয়ত, এখানে সুশাসন সম্ভব নয়। বিশেষ করে বৃহৎ রাষ্ট্রে একটি মাত্র সরকারের পক্ষে আঞ্চলিক সমস্যার দিকে দৃষ্টি দেওয়া সম্ভব নয়। তাতে স্থানীয় স্বার্থ অবহেলিত হয়।
চতুর্থত, প্রত্যেকের ক্ষমতার একটা সীমা আছে। এককেন্দ্রিক শাসনে একটি সরকারের উপর সব সমস্যার সমাধানের ফলে আমলাদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
পঞ্চমত, এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার কেন্দ্র এক জায়গায় থাকে, ফলে বিদেশি আক্রমণে সহজে ভেঙে পড়ে। ক্ষমতার কেন্দ্র একাধিক হলে আক্রমণকারী সহজে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে না।
ষষ্ঠত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় স্বায়ত্তশাসনের সুযােগ থাকে না বলে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ হতে পারে না।
প্রশ্ন ৫) যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা কাকে বলে?
উত্তর : প্রাচীনকাল থেকে সরকারের শ্রেণিবিভাগের প্রচেষ্টা চলছে। যেমন অ্যারিস্টট্ল (Aristotle) শাসকের সংখ্যার ভিত্তিতে সরকারের শ্রেণিবিভাগ করেছেন। আবার লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce) শাসনব্যবস্থাকে দু-ভাগে ভাগ করেছেন,—এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা।
বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সংজ্ঞা দিয়েছেন। অধ্যাপক কে সি হোয়ার (K. C. Wheare) বলেছেন,—“যে শাসনব্যবস্থায় দু-ধরনের সরকার থাকে -কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার যেখানে একটি লিখিত সংবিধানের মাধ্যমে উভয়ের মধ্যে এমনভাবে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া হয় যাতে, প্রত্যেকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে অথচ পরস্পরের পরিপূরক হিসাবে কাজ করে, তখন তাকে বলে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা।”
অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দুটি জিনিস একসঙ্গে কাজ করে। একদিকে রাজ্যগুলি নিজেদের অধিকার ও স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে চেষ্টা করে, অন্যদিকে সবাই মিলে জাতীয় ঐক্য ও অখণ্ডতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হয়। সেই কারণে অধ্যাপক ডাইসি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হল এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা, যার উদ্দেশ্য হল জাতীয় ঐক্য ও শক্তির সঙ্গে অঙ্গরাজ্যের সমন্বয় করা। যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ হল -মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, ভারত প্রভৃতি দেশের শাসনব্যবস্থা।
বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সংজ্ঞা দিয়েছেন। অধ্যাপক কে সি হোয়ার (K. C. Wheare) বলেছেন,—“যে শাসনব্যবস্থায় দু-ধরনের সরকার থাকে -কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার যেখানে একটি লিখিত সংবিধানের মাধ্যমে উভয়ের মধ্যে এমনভাবে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া হয় যাতে, প্রত্যেকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে অথচ পরস্পরের পরিপূরক হিসাবে কাজ করে, তখন তাকে বলে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা।”
অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দুটি জিনিস একসঙ্গে কাজ করে। একদিকে রাজ্যগুলি নিজেদের অধিকার ও স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে চেষ্টা করে, অন্যদিকে সবাই মিলে জাতীয় ঐক্য ও অখণ্ডতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হয়। সেই কারণে অধ্যাপক ডাইসি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হল এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা, যার উদ্দেশ্য হল জাতীয় ঐক্য ও শক্তির সঙ্গে অঙ্গরাজ্যের সমন্বয় করা। যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ হল -মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, ভারত প্রভৃতি দেশের শাসনব্যবস্থা।
প্রশ্ন ৬) যুক্তরাষ্ট্রের বৈশিষ্টগুলি আলােচনা করাে।
উত্তর : অধ্যাপক হােয়ার ও ডাইসির দেওয়া সংজ্ঞা আলােচনা করলে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই-
(ক) দুই ধরনের সরকার : এখানে দু-ধরনের সরকার থাকে—কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। যেমন রাজ্য, ক্যান্টন, প্রদেশ প্রভৃতি।
(খ) ক্ষমতার বণ্টন : এখানে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া হয়। জাতীয় স্বার্থ জড়িয়ে আছে এমন বিষয়গুলি কেন্দ্রের হাতে থাকে। অন্যদিকে আঞ্চলিক স্বার্থ জড়িয়ে আছে এমন বিষয়গুলি রাজ্যের হাতে থাকে।
(গ) লিখিত সংবিধান : যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লিখিত হয়। লিখিত বলতে নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সভা দ্বারা দলিল আকারে ইহা গৃহীত হয়।
(ঘ) দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান : যুক্তরাষ্ট্রের আর একটি বৈশিষ্ট্য সংবিধানকে সহজে পরিবর্তন করা যায় না। বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়। কেন্দ্রীয় সরকার যাতে নিজের খুশিমতাে সংবিধান পরিবর্তন করতে না পারে, তার জন্য এই ব্যবস্থা।
(ঙ) সংবিধানের প্রাধান্য : যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধানের প্রাধান্য স্বীকৃত। এই সংবিধান হল দেশের মৌলিক আইন। এর স্থান সবার উপরে। সকলকে এই আইন মেনে চলতে হয়।
(চ) নিরপেক্ষ আদালত : যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল- সেখানে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন নিরপেক্ষ আদালত অভিভাবক হিসাবে কাজ করবে। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিরােধ দেখা দিলে তার মীমাংসা করবে। যদি কোনাে আইন সংবিধান বিরােধী হয়, তাহলে তাকে বাতিল করতে পারবে। একে বলে বিচার বিভাগীয় পর্যালােচনার ক্ষমতা (Judicial Review)।
(ছ) অন্যান্য বৈশিষ্ট্য : উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন, কেন্দ্রীয় আইনসভার দুটি কক্ষ থাকবে। দ্বিনাগরিকতার ব্যবস্থা।
(ক) দুই ধরনের সরকার : এখানে দু-ধরনের সরকার থাকে—কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। যেমন রাজ্য, ক্যান্টন, প্রদেশ প্রভৃতি।
(খ) ক্ষমতার বণ্টন : এখানে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া হয়। জাতীয় স্বার্থ জড়িয়ে আছে এমন বিষয়গুলি কেন্দ্রের হাতে থাকে। অন্যদিকে আঞ্চলিক স্বার্থ জড়িয়ে আছে এমন বিষয়গুলি রাজ্যের হাতে থাকে।
(গ) লিখিত সংবিধান : যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লিখিত হয়। লিখিত বলতে নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সভা দ্বারা দলিল আকারে ইহা গৃহীত হয়।
(ঘ) দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান : যুক্তরাষ্ট্রের আর একটি বৈশিষ্ট্য সংবিধানকে সহজে পরিবর্তন করা যায় না। বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়। কেন্দ্রীয় সরকার যাতে নিজের খুশিমতাে সংবিধান পরিবর্তন করতে না পারে, তার জন্য এই ব্যবস্থা।
(ঙ) সংবিধানের প্রাধান্য : যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধানের প্রাধান্য স্বীকৃত। এই সংবিধান হল দেশের মৌলিক আইন। এর স্থান সবার উপরে। সকলকে এই আইন মেনে চলতে হয়।
(চ) নিরপেক্ষ আদালত : যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল- সেখানে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন নিরপেক্ষ আদালত অভিভাবক হিসাবে কাজ করবে। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিরােধ দেখা দিলে তার মীমাংসা করবে। যদি কোনাে আইন সংবিধান বিরােধী হয়, তাহলে তাকে বাতিল করতে পারবে। একে বলে বিচার বিভাগীয় পর্যালােচনার ক্ষমতা (Judicial Review)।
(ছ) অন্যান্য বৈশিষ্ট্য : উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন, কেন্দ্রীয় আইনসভার দুটি কক্ষ থাকবে। দ্বিনাগরিকতার ব্যবস্থা।
প্রশ্ন ৭) যুক্তরাষ্ট্রের গুণ বা অসুবিধাগুলি আলােচনা করাে।
উত্তর : অধ্যাপক কে. সি. হােয়ার, সিজউইক প্রভৃতি বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। তাদের যুক্তি হল –
(ক) শক্তিশালী রাষ্ট্রগঠন : বর্তমানে বিশ্বের রাজনীতির যা অবস্থা, তাতে ছােটো ছােটো রাষ্ট্রগুলির পক্ষে নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে এইসব ছােটো ছােটো দুর্বল রাষ্ট্র একজোট হয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রগঠন করতে পারে। অথচ তাদের স্বাতন্ত্রকে বিসর্জন দিতে হয় না।
(খ) আঞ্চলিক স্বার্থরক্ষা : যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া হয়। তাতে রাজ্যগুলি নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। ফলে তারা নিজেদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যকে রক্ষা ও বিকাশ করতে পারে।
(গ) সুশাসন সম্ভব : একটি বৃহৎ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র উপযােগী। বৃহৎ রাষ্ট্রে একটিমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তরাষ্ট্র গঠন করলে ছােটো ছােটো অঙ্গরাজ্য গড়ে উঠবে। তার ফলে প্রত্যেকটি অঞ্চলে সুশাসন সম্ভব হবে।
(ঘ) রাজনৈতিক চেতনার প্রসার : যুক্তরাষ্ট্রে একটি কেন্দ্রীয় সরকার ও অনেকগুলি রাজ্য সরকার থাকায়, অনেক লােক শাসনকার্যে অংশ নিতে পারে। ফলে নাগরিকদের রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধি পায়। এই চেতনা বৃদ্ধি গণতন্ত্রের সাফল্যের পথ প্রশস্ত করে।
(ঙ) আইন ও শাসনের পরীক্ষা : বর্তমান যুগে নানা ধরনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এর সমাধানের জন্যে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করা উচিত। কিন্তু সারা দেশের উপর পরীক্ষানিরীক্ষা হলে তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। তা না করে কোনাে অঙ্গ রাজ্যে তা নিয়ে পরীক্ষা করলে তাতে যদি ভালাে ফল হয়। তাহলে সেটা সারা দেশে চালু করা যেতে পারে।
(চ) নাগরিকদের মর্যাদা বৃদ্ধি : ছােটো রাষ্ট্রের নাগরিকদের মর্যাদা বড়াে রাষ্ট্রের তুলনায় কম। ছােটো ছােটো রাষ্ট্রগুলি মিলে যুক্তরাষ্ট্র গঠন করলে নাগরিকরা বড়াে রাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে নিজেদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারবে।
(ক) শক্তিশালী রাষ্ট্রগঠন : বর্তমানে বিশ্বের রাজনীতির যা অবস্থা, তাতে ছােটো ছােটো রাষ্ট্রগুলির পক্ষে নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে এইসব ছােটো ছােটো দুর্বল রাষ্ট্র একজোট হয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রগঠন করতে পারে। অথচ তাদের স্বাতন্ত্রকে বিসর্জন দিতে হয় না।
(খ) আঞ্চলিক স্বার্থরক্ষা : যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া হয়। তাতে রাজ্যগুলি নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। ফলে তারা নিজেদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যকে রক্ষা ও বিকাশ করতে পারে।
(গ) সুশাসন সম্ভব : একটি বৃহৎ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র উপযােগী। বৃহৎ রাষ্ট্রে একটিমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তরাষ্ট্র গঠন করলে ছােটো ছােটো অঙ্গরাজ্য গড়ে উঠবে। তার ফলে প্রত্যেকটি অঞ্চলে সুশাসন সম্ভব হবে।
(ঘ) রাজনৈতিক চেতনার প্রসার : যুক্তরাষ্ট্রে একটি কেন্দ্রীয় সরকার ও অনেকগুলি রাজ্য সরকার থাকায়, অনেক লােক শাসনকার্যে অংশ নিতে পারে। ফলে নাগরিকদের রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধি পায়। এই চেতনা বৃদ্ধি গণতন্ত্রের সাফল্যের পথ প্রশস্ত করে।
(ঙ) আইন ও শাসনের পরীক্ষা : বর্তমান যুগে নানা ধরনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এর সমাধানের জন্যে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করা উচিত। কিন্তু সারা দেশের উপর পরীক্ষানিরীক্ষা হলে তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। তা না করে কোনাে অঙ্গ রাজ্যে তা নিয়ে পরীক্ষা করলে তাতে যদি ভালাে ফল হয়। তাহলে সেটা সারা দেশে চালু করা যেতে পারে।
(চ) নাগরিকদের মর্যাদা বৃদ্ধি : ছােটো রাষ্ট্রের নাগরিকদের মর্যাদা বড়াে রাষ্ট্রের তুলনায় কম। ছােটো ছােটো রাষ্ট্রগুলি মিলে যুক্তরাষ্ট্র গঠন করলে নাগরিকরা বড়াে রাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে নিজেদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারবে।
প্রশ্ন ৮) যুক্তরাষ্ট্রের দোষ বা অসুবিধাগুলি আলােচনা করাে।
উত্তর : লীকক, ফাইনার প্রভৃতি তাত্ত্বিকেরা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের কতকগুলি অসুবিধার কথা উল্লেখ করেছেন। সেগুলি হল –
(ক) দুর্বল শাসনব্যবস্থা : যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়। কারণ, এখানে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া থাকে। ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া মানে দুর্বল করে দেওয়া। তা ছাড়া, এখানে ক্ষমতার এক্তিয়ার নিয়ে উভয় সরকারের মধ্যে প্রায় বিরােধ দেখা দেয়। ফলে উভয় সরকারই দুর্বল হয়ে পড়ে।
(খ) বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্ম : যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিনাগরিকতা স্বীকৃত। নাগরিকরা কেন্দ্র ও রাজ্যের নাগারিক হয়। রাজ্যের প্রতি আনুগত্য খুব বেশি হয়ে গেলে শেষ পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদ জন্ম নেয়। তাতে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয়।
(গ) ব্যয়বহুল : অধ্যাপক ফাইনার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কারণ, এখানে কেন্দ্র ও অনেকগুলি রাজ্য সরকার থাকে। এগুলি চালাতে প্রচুর অর্থের দরকার। একে জাতীয় অর্থের অপচয় হয় বলে মনে করা হয়।
(ঘ) পরস্পর বিরােধী আইন : যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন রাজ্য সরকার অনেক সময় একই বিষয়ের উপর পরস্পর বিরােধী আইন প্রণয়ন করে।
(ঙ) দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান : যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান দুষ্পপরিবর্তনীয় হয়। সংবিধান সহজে পরিবর্তন করা যায় না। তাতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতিতে বাধার সৃষ্টি হয়। সংবিধানকে সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। কিন্তু এই শাসনব্যবস্থায় তা সম্ভব নয়।
(চ) জরুরি অবস্থায় দুর্বল : জরুরি অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কারণ, এখানে কেন্দ্র ও অনেক অঙ্গরাজ্য থাকে। তাদের মতামত নিতে গিয়ে দেরি হয়। তাতে রাষ্ট্রের পক্ষে ক্ষতি হতে পারে।
(ক) দুর্বল শাসনব্যবস্থা : যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়। কারণ, এখানে ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া থাকে। ক্ষমতা ভাগ করে দেওয়া মানে দুর্বল করে দেওয়া। তা ছাড়া, এখানে ক্ষমতার এক্তিয়ার নিয়ে উভয় সরকারের মধ্যে প্রায় বিরােধ দেখা দেয়। ফলে উভয় সরকারই দুর্বল হয়ে পড়ে।
(খ) বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্ম : যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিনাগরিকতা স্বীকৃত। নাগরিকরা কেন্দ্র ও রাজ্যের নাগারিক হয়। রাজ্যের প্রতি আনুগত্য খুব বেশি হয়ে গেলে শেষ পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদ জন্ম নেয়। তাতে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয়।
(গ) ব্যয়বহুল : অধ্যাপক ফাইনার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কারণ, এখানে কেন্দ্র ও অনেকগুলি রাজ্য সরকার থাকে। এগুলি চালাতে প্রচুর অর্থের দরকার। একে জাতীয় অর্থের অপচয় হয় বলে মনে করা হয়।
(ঘ) পরস্পর বিরােধী আইন : যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন রাজ্য সরকার অনেক সময় একই বিষয়ের উপর পরস্পর বিরােধী আইন প্রণয়ন করে।
(ঙ) দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান : যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান দুষ্পপরিবর্তনীয় হয়। সংবিধান সহজে পরিবর্তন করা যায় না। তাতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতিতে বাধার সৃষ্টি হয়। সংবিধানকে সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। কিন্তু এই শাসনব্যবস্থায় তা সম্ভব নয়।
(চ) জরুরি অবস্থায় দুর্বল : জরুরি অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কারণ, এখানে কেন্দ্র ও অনেক অঙ্গরাজ্য থাকে। তাদের মতামত নিতে গিয়ে দেরি হয়। তাতে রাষ্ট্রের পক্ষে ক্ষতি হতে পারে।
প্রশ্ন ৯) এককেন্দ্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য।
উত্তর : অধ্যাপক ডাইসির মতে, যে দেশের শাসনব্যবস্থায় সরকারের যাবতীয় ক্ষমতা একটিমাত্র কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের হাতে ন্যস্ত থাকে তাকে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা বলে। যথা –ব্রিটেন ও ফ্রান্স। অন্যদিকে যে রাষ্ট্রে সরকার পরিচালনার যাবতীয় ক্ষমতা দু-সরকারের মধ্যে বন্টিত হয় তাকে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার বলে। যথা— মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এককেন্দ্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার মধ্যে কয়েকটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।
প্রথমত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপরিচালনায় সকল ক্ষমতা একটিমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত। ব্রিটেনের এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকারের যাবতীয় ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে নিহিত আছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য— এই দুই স্বতন্ত্র সরকার থাকে। দেশের যাবতীয় ক্ষমতা কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে বণ্টিত হয়। অধ্যাপক হােয়ারের মতে, “Federalism is a method of division of power.”
দ্বিতীয়ত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবিধান লিখিত অথবা অলিখিত হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সংবিধান অবশ্যই লিখিত হবে।
তৃতীয়ত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্যের পরিবর্তে আইনসভার প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আদালত সংবিধানের চূড়ান্ত ব্যাখ্যাকর্তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুপ্রিমকোর্ট এই ভূমিকা পালন করে। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রে আদালতের এরূপ ভূমিকা থাকে না।
এছাড়া এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রে এক নাগরিকত্ব স্বীকৃত, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় দ্বৈত নাগরিকত্ব বজায় থাকে।
প্রথমত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপরিচালনায় সকল ক্ষমতা একটিমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত। ব্রিটেনের এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকারের যাবতীয় ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে নিহিত আছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য— এই দুই স্বতন্ত্র সরকার থাকে। দেশের যাবতীয় ক্ষমতা কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে বণ্টিত হয়। অধ্যাপক হােয়ারের মতে, “Federalism is a method of division of power.”
দ্বিতীয়ত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবিধান লিখিত অথবা অলিখিত হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সংবিধান অবশ্যই লিখিত হবে।
তৃতীয়ত, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্যের পরিবর্তে আইনসভার প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আদালত সংবিধানের চূড়ান্ত ব্যাখ্যাকর্তা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুপ্রিমকোর্ট এই ভূমিকা পালন করে। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রে আদালতের এরূপ ভূমিকা থাকে না।
এছাড়া এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রে এক নাগরিকত্ব স্বীকৃত, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় দ্বৈত নাগরিকত্ব বজায় থাকে।
প্রশ্ন ১০) আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্র প্রবণতার কারণ উল্লেখ করাে।
উত্তর : অধ্যাপক কে. সি. হােয়ারের মতে, যুক্তরাষ্ট্র হল এরূপ এক শাসনব্যবস্থা যেখানে দুপ্রকার সরকার ক্ষমতা বণ্টনের ভিত্তিতে স্বাতন্ত্র বজায় রেখে শাসনকার্য পরিচালনা করে —Federalism is a system of independent Governments, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতবর্ষ এবং সুইজারল্যান্ড হল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম উদাহরণ।
যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সূচনার পূর্বে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের যে রূপ বজায় ছিল সাম্প্রতিককালে তার পরিবর্তন ঘটেছে। প্রতিটি রাষ্টে আঞ্চলিক সরকারগুলির ক্ষমতা সংকুচিত হচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রবণতাকে কেন্দ্র প্রবণতা বলা হয়। যুক্তরাষ্টীয় ব্যবস্থার কেন্দ্র প্রবণতার পশ্চাতে কয়েকটি কারণ উল্লেখযােগ্য। যেমন—
প্রথমত, আধুনিক পৃথিবীতে পরমাণু যুদ্ধের ভীতি প্রতিটি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্য সরকারের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলেছে।
দ্বিতীয়ত, সমাজে অর্থনীতিক মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি এবং ব্যাপক দারিদ্র্য প্রতিটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছে। এই অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অর্থনৈতিক পরিকল্পনার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে এসে পড়েছে।
তৃতীয়ত, বর্তমান জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রের জনগণের কল্যাণের জন্য সমস্ত দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের উপর নির্ভরশীল।
চতুর্থত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতি, পরিবহন ব্যবস্থা এবং শিল্পের ব্যাপক উন্নতির ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা পূর্বাপেক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সূচনার পূর্বে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের যে রূপ বজায় ছিল সাম্প্রতিককালে তার পরিবর্তন ঘটেছে। প্রতিটি রাষ্টে আঞ্চলিক সরকারগুলির ক্ষমতা সংকুচিত হচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রবণতাকে কেন্দ্র প্রবণতা বলা হয়। যুক্তরাষ্টীয় ব্যবস্থার কেন্দ্র প্রবণতার পশ্চাতে কয়েকটি কারণ উল্লেখযােগ্য। যেমন—
প্রথমত, আধুনিক পৃথিবীতে পরমাণু যুদ্ধের ভীতি প্রতিটি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্য সরকারের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলেছে।
দ্বিতীয়ত, সমাজে অর্থনীতিক মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি এবং ব্যাপক দারিদ্র্য প্রতিটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছে। এই অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অর্থনৈতিক পরিকল্পনার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে এসে পড়েছে।
তৃতীয়ত, বর্তমান জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রের জনগণের কল্যাণের জন্য সমস্ত দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের উপর নির্ভরশীল।
চতুর্থত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতি, পরিবহন ব্যবস্থা এবং শিল্পের ব্যাপক উন্নতির ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা পূর্বাপেক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছে।