নাম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়/Bibhutibhushan Bandyopadhyay জন্ম১২ই সেপ্টেম্বর(১৮৯৪),কল্যানীর নিকটবর্তী ঘোষপাড়া অঞ্চলে মৃত্যু১লা নভেম্বর(১৯৫০),ঝাড়খন্ডের ঘাটশিলায় বাবার নাম মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় মায়ের নাম মৃনালিনী দেবী দাম্পত্যসঙ্গী গৌরী দেবী (১৯১৭-১৮)
রমা দেবী (১৯৪০-৫০)পেশা সাহিত্যিক জাতীয়তা ভারতীয় ধর্ম হিন্দু উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহ পথের পাঁচালী, অপরাজিত, আরণ্যক, আদর্শ হিন্দু হোটেল, ইছামতী, অশনি সংকেত, মেঘমল্লার, তালনবমী, চাঁদের পাহাড় পুরস্কার রবীন্দ্র পুরস্কার ((মরণোত্তর, ১৯৫১ সাল)
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের এক অতি পরিচিত নাম | তাঁর লেখা পথের পাচাঁলী এবং চাঁদের পাহাড় উপন্যাস দুটি আজও সকল বাঙালীর মন কাড়ে |
১২ই সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণায় অবস্থিত কল্যানীর নিকটবর্তী ঘোষপাড়া অঞ্চলের মুরারীপুর গ্রামে, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মামার বাড়িতে জন্মান | এছাড়া, তাঁর পৈত্রিক বাড়ি ঝারখন্ডের ব্যারাকপুরে ছিলো |
তাঁর বাবার নাম ছিলো শ্রী মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম ছিলো মৃনালিনী দেবী | তাদের দুজনের ৫টি সন্তান ছিলো, যার মধ্যে বিভূতিভূষণই ছিলেন সব থেকে বড় |
শোনা যায় তাঁর বাবা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন, একজন সংস্কৃতের প্রখ্যাত পন্ডিত | সংস্কৃতে তাঁর অসাধারণ পান্ডিত্ব থাকার জন্য তাঁকে শাস্ত্রী উপাধিতে ভূষিত করা হয় |
বিভূতিভূষণ তাঁর বাবার কাছেই প্রথম পড়াশোনা শেখেন এবং নিজের গ্রাম আর পাশের গ্রামের অন্য কয়েকটা পাঠশালা থেকেও প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন |
এরপর তিনি পাঠশালার পাঠ শেষ করে ভর্তি হন বনগ্রাম উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে | সেখানে নাকি তিনি একজন অবৈতনিক শিক্ষার্থী হিসাবে পড়াশোনা করার সুযোগ পান |
ছোটবেলা থেকেই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের পড়াশোনার বেপারে ভীষন মনোযোগী ছিলেন | তাইতো, তিনি একসময় হয়ে ওঠেন ক্লাসের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র |
এইভাবে, তাঁর পড়াশোনা বেশ ভালোই চলতে থাকে | পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের মাধ্যমে তিনি একের পর এক ক্লাস উর্তীর্ণও হতে থাকেন কিন্তু যখন তিনি অষ্টম শ্রেণীতে ওঠেন,তখন হঠাৎই শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর বাবা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয় |
বাবার এইভাবে হঠাৎ চলে যাওয়া, ছোট্ট বিভূতির মনে ভীষণ কষ্ট দেয় | আর কষ্ট হওয়াটাই যে স্বাভাবিক, কারণ ছোটবেলায় তাঁর বাবাই তাঁকে পড়াশোনা শেখানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন আদর, আবদার পূরণ করতেন |
এত সবকিছু ঘটে যাওয়ার পরও ছোট্ট বিভূতিভূষণ নিজের পড়াশোনা কিন্তু চালিয়েই যান | ১৯১৪ সালে তিনি তাঁর এনট্রান্স পরীক্ষায় ফার্স্ট ডিভিশন পান এবং তারপর ভর্তি হন রিপন কলেজে যার বর্তমানে আজ নাম সুরেন্দ্রনাথ কলেজ |
সেখানে আই.এ পরীক্ষায়ও তিনি ভালো ফল করেন আর আবার ফার্স্ট ডিভিশন পান এবং তারপর ১৯১৮ সালে একই কলেজ থেকে বি.এ পরীক্ষায়ও ডিস্টিইংশন সহ পাশ করেন |
এরপর তিনি আবার মাস্টার্স আর Law নিয়ে পড়ার জন্য ভর্তি হন কিন্তু কোর্সের মাঝপথে তাঁকে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়, যত সম্ভব আর্থিক কারণেই |
পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি প্রথমে জাঙ্গীপাড়ার একটি স্কুলে ও পরে সোনারপুরের হরিনাভি স্কুলে শিক্ষকতা প্রদান করেন ।
তাছাড়া মাঝে অবশ্য কিছুদিন গোরক্ষিণী সভার প্রচারক, খেলাৎ ঘোষের বাড়িতে সেক্রেটারি এবং গৃহশিক্ষক রূপে কাজ করলেও তিনি সারাজীবন শিক্ষকতাই করেন ।
আগেই তোমাকে বলেছিলাম যে, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলী জেলার জাঙ্গীপাড়ার একটি স্কুলে পড়াতেন | সেখানেকার নাম করা স্কুল দ্বারকানাথ উচ্চবিদ্যালয়ে ১৯১৯ সালে পড়ানোর সময় বসিরহাটের মোক্তার, শ্রীকালীভূষণ মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে গৌরী দেবীর সাথে তাঁর বিয়ে হয় |
দুর্ভাগ্যবশত তাঁর প্রথম স্ত্রী গৌরী দেবী, বিয়ের ঠিক এক বছর পরেই মারা যান রোগের কারণে | স্ত্রীয়ের অকাল মৃত্যুতে, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে মর্মাহত হয়ে পরেন এবং গভীর শোক পাওয়ার ফলে তিনি কেমন যেন পাগলের মত হয়ে যান |
এরফলে বেশ কিছুদিনের মধ্যেই তিনি প্রায় সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন শুরু করেন |
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাটশিলার বাড়ি
এইসব দেখে তাঁর পরিবারের লোকেরা, আবার তাঁর বিয়ের ব্যবস্থা শুরু করে দেন | অনেক পাত্রী খোঁজা খুঁজির পর অবশেষে ১৯৪০ সালের ৩রা ডিসেম্বর তারিখে, বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার ছয়গাঁও নিবাসী ষোড়শীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে রমা দেবীর সাথে তিনি পুণরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন |
রমা দেবীর সাথে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিয়ের ৭ বছর পর অবশেষে তাঁর ঘরে একটা পুত্র সন্তানের জন্ম হয় | যার নাম রাখা হয় তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় |
Career of Bibhutibhushan Bandyopadhyay:
১৯২১ সালে প্রবাসী পত্রিকায় তাঁর প্রথম গল্প “উপেক্ষিতা” প্রকাশ পায় এবং এই গল্পের মাধ্যমেই বিভূতিভূষণের সাহিত্য জীবনের সূত্রপাত ঘটে | যখন তিনি ভাগলপুরে থাকতেন, তখন তিনি পথের পাঁচালী লেখা শুরু করেন, সেই সময়টা ছিলো ১২৯৫ সাল | আর তাঁর, এই অনবদ্য উপন্যাসটা লেখা সমাপ্ত হয় তার ঠিক ৩ বছর পর অর্থাৎ ১৯২৮ সালে |
পথের পাঁচালী হলো তাঁর লেখা সবচেয়ে সেরা উপন্যাস, আশা করি তুমি সেটা জানোই | এই উপন্যাস লেখার মাধ্যমেই তিনি চারিদিকে খ্যাতি অর্জন করেন | এই উপন্যাসটা আসলে নিস্চিন্দীপুর গ্রামকে আশ্রয় করে অপু ও দুর্গার শৈশবকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে |
পথের পাঁচালীর পরবর্তী অংশের নাম হলো “অপরাজিতা” | এই উপন্যাসে আছে অপুর কোলকাতা সহ বিভিন্ন অঞ্চলে জীবন যাপন, অপর্ণার সাথে বিয়ে এবং স্ত্রীর মৃত্যুর পর ছেলে কাজলকে নিয়ে ফিরে আসার ঘটনা |
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দুটো গ্রন্থেই তাঁর নিজের ব্যক্তিগত জীবনের আভাস রয়েছে |
“পথের পাঁচালী” এই উপন্যাসকে নিয়ে পরবর্তী সময়ে বাংলা তথা ভারতের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় একটি অসাধারণ সিনেমা তৈরী করেন এবং এই সিনেমার মাধ্যমেই তিনি তাঁর পরিচালকের জীবন শুরু করেন |
তাছাড়া পথের পাঁচালীর জন্যই তিনি ১৯৯২ সালে অস্কার পুরস্কার পান, যা সকল ভারতবাসীর কাছে খুবই গৌরবের বিষয় |
সত্যজিৎ রায় কিন্তু এখানেই থেমে থাকেননি | তিনি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত অপরাজিত ও অশনি সংকেত এই দুই উপন্যাসকে নিয়েও সিনেমা তৈরী করেছিলেন |
তুমি হয়তো এটা জানোনা, পথের পাঁচালী উপন্যাস ভারতের বিভিন্ন ভাষাসহ ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায়ও অনূদিত হয়েছিলো |
রমা দেবী (১৯৪০-৫০)পেশা সাহিত্যিক জাতীয়তা ভারতীয় ধর্ম হিন্দু উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহ পথের পাঁচালী, অপরাজিত, আরণ্যক, আদর্শ হিন্দু হোটেল, ইছামতী, অশনি সংকেত, মেঘমল্লার, তালনবমী, চাঁদের পাহাড় পুরস্কার রবীন্দ্র পুরস্কার ((মরণোত্তর, ১৯৫১ সাল)
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের এক অতি পরিচিত নাম | তাঁর লেখা পথের পাচাঁলী এবং চাঁদের পাহাড় উপন্যাস দুটি আজও সকল বাঙালীর মন কাড়ে |
১২ই সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণায় অবস্থিত কল্যানীর নিকটবর্তী ঘোষপাড়া অঞ্চলের মুরারীপুর গ্রামে, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মামার বাড়িতে জন্মান | এছাড়া, তাঁর পৈত্রিক বাড়ি ঝারখন্ডের ব্যারাকপুরে ছিলো |
তাঁর বাবার নাম ছিলো শ্রী মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মায়ের নাম ছিলো মৃনালিনী দেবী | তাদের দুজনের ৫টি সন্তান ছিলো, যার মধ্যে বিভূতিভূষণই ছিলেন সব থেকে বড় |
শোনা যায় তাঁর বাবা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন, একজন সংস্কৃতের প্রখ্যাত পন্ডিত | সংস্কৃতে তাঁর অসাধারণ পান্ডিত্ব থাকার জন্য তাঁকে শাস্ত্রী উপাধিতে ভূষিত করা হয় |
বিভূতিভূষণ তাঁর বাবার কাছেই প্রথম পড়াশোনা শেখেন এবং নিজের গ্রাম আর পাশের গ্রামের অন্য কয়েকটা পাঠশালা থেকেও প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন |
এরপর তিনি পাঠশালার পাঠ শেষ করে ভর্তি হন বনগ্রাম উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে | সেখানে নাকি তিনি একজন অবৈতনিক শিক্ষার্থী হিসাবে পড়াশোনা করার সুযোগ পান |
ছোটবেলা থেকেই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের পড়াশোনার বেপারে ভীষন মনোযোগী ছিলেন | তাইতো, তিনি একসময় হয়ে ওঠেন ক্লাসের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র |
এইভাবে, তাঁর পড়াশোনা বেশ ভালোই চলতে থাকে | পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের মাধ্যমে তিনি একের পর এক ক্লাস উর্তীর্ণও হতে থাকেন কিন্তু যখন তিনি অষ্টম শ্রেণীতে ওঠেন,তখন হঠাৎই শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর বাবা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয় |
বাবার এইভাবে হঠাৎ চলে যাওয়া, ছোট্ট বিভূতির মনে ভীষণ কষ্ট দেয় | আর কষ্ট হওয়াটাই যে স্বাভাবিক, কারণ ছোটবেলায় তাঁর বাবাই তাঁকে পড়াশোনা শেখানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন আদর, আবদার পূরণ করতেন |
এত সবকিছু ঘটে যাওয়ার পরও ছোট্ট বিভূতিভূষণ নিজের পড়াশোনা কিন্তু চালিয়েই যান | ১৯১৪ সালে তিনি তাঁর এনট্রান্স পরীক্ষায় ফার্স্ট ডিভিশন পান এবং তারপর ভর্তি হন রিপন কলেজে যার বর্তমানে আজ নাম সুরেন্দ্রনাথ কলেজ |
সেখানে আই.এ পরীক্ষায়ও তিনি ভালো ফল করেন আর আবার ফার্স্ট ডিভিশন পান এবং তারপর ১৯১৮ সালে একই কলেজ থেকে বি.এ পরীক্ষায়ও ডিস্টিইংশন সহ পাশ করেন |
এরপর তিনি আবার মাস্টার্স আর Law নিয়ে পড়ার জন্য ভর্তি হন কিন্তু কোর্সের মাঝপথে তাঁকে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়, যত সম্ভব আর্থিক কারণেই |
পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি প্রথমে জাঙ্গীপাড়ার একটি স্কুলে ও পরে সোনারপুরের হরিনাভি স্কুলে শিক্ষকতা প্রদান করেন ।
তাছাড়া মাঝে অবশ্য কিছুদিন গোরক্ষিণী সভার প্রচারক, খেলাৎ ঘোষের বাড়িতে সেক্রেটারি এবং গৃহশিক্ষক রূপে কাজ করলেও তিনি সারাজীবন শিক্ষকতাই করেন ।
আগেই তোমাকে বলেছিলাম যে, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলী জেলার জাঙ্গীপাড়ার একটি স্কুলে পড়াতেন | সেখানেকার নাম করা স্কুল দ্বারকানাথ উচ্চবিদ্যালয়ে ১৯১৯ সালে পড়ানোর সময় বসিরহাটের মোক্তার, শ্রীকালীভূষণ মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে গৌরী দেবীর সাথে তাঁর বিয়ে হয় |
দুর্ভাগ্যবশত তাঁর প্রথম স্ত্রী গৌরী দেবী, বিয়ের ঠিক এক বছর পরেই মারা যান রোগের কারণে | স্ত্রীয়ের অকাল মৃত্যুতে, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে মর্মাহত হয়ে পরেন এবং গভীর শোক পাওয়ার ফলে তিনি কেমন যেন পাগলের মত হয়ে যান |
এরফলে বেশ কিছুদিনের মধ্যেই তিনি প্রায় সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন শুরু করেন |
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাটশিলার বাড়ি
এইসব দেখে তাঁর পরিবারের লোকেরা, আবার তাঁর বিয়ের ব্যবস্থা শুরু করে দেন | অনেক পাত্রী খোঁজা খুঁজির পর অবশেষে ১৯৪০ সালের ৩রা ডিসেম্বর তারিখে, বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার ছয়গাঁও নিবাসী ষোড়শীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে রমা দেবীর সাথে তিনি পুণরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন |
রমা দেবীর সাথে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিয়ের ৭ বছর পর অবশেষে তাঁর ঘরে একটা পুত্র সন্তানের জন্ম হয় | যার নাম রাখা হয় তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় |
Career of Bibhutibhushan Bandyopadhyay:
১৯২১ সালে প্রবাসী পত্রিকায় তাঁর প্রথম গল্প “উপেক্ষিতা” প্রকাশ পায় এবং এই গল্পের মাধ্যমেই বিভূতিভূষণের সাহিত্য জীবনের সূত্রপাত ঘটে | যখন তিনি ভাগলপুরে থাকতেন, তখন তিনি পথের পাঁচালী লেখা শুরু করেন, সেই সময়টা ছিলো ১২৯৫ সাল | আর তাঁর, এই অনবদ্য উপন্যাসটা লেখা সমাপ্ত হয় তার ঠিক ৩ বছর পর অর্থাৎ ১৯২৮ সালে |
পথের পাঁচালী হলো তাঁর লেখা সবচেয়ে সেরা উপন্যাস, আশা করি তুমি সেটা জানোই | এই উপন্যাস লেখার মাধ্যমেই তিনি চারিদিকে খ্যাতি অর্জন করেন | এই উপন্যাসটা আসলে নিস্চিন্দীপুর গ্রামকে আশ্রয় করে অপু ও দুর্গার শৈশবকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে |
পথের পাঁচালীর পরবর্তী অংশের নাম হলো “অপরাজিতা” | এই উপন্যাসে আছে অপুর কোলকাতা সহ বিভিন্ন অঞ্চলে জীবন যাপন, অপর্ণার সাথে বিয়ে এবং স্ত্রীর মৃত্যুর পর ছেলে কাজলকে নিয়ে ফিরে আসার ঘটনা |
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দুটো গ্রন্থেই তাঁর নিজের ব্যক্তিগত জীবনের আভাস রয়েছে |
“পথের পাঁচালী” এই উপন্যাসকে নিয়ে পরবর্তী সময়ে বাংলা তথা ভারতের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় একটি অসাধারণ সিনেমা তৈরী করেন এবং এই সিনেমার মাধ্যমেই তিনি তাঁর পরিচালকের জীবন শুরু করেন |
তাছাড়া পথের পাঁচালীর জন্যই তিনি ১৯৯২ সালে অস্কার পুরস্কার পান, যা সকল ভারতবাসীর কাছে খুবই গৌরবের বিষয় |
সত্যজিৎ রায় কিন্তু এখানেই থেমে থাকেননি | তিনি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত অপরাজিত ও অশনি সংকেত এই দুই উপন্যাসকে নিয়েও সিনেমা তৈরী করেছিলেন |
তুমি হয়তো এটা জানোনা, পথের পাঁচালী উপন্যাস ভারতের বিভিন্ন ভাষাসহ ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায়ও অনূদিত হয়েছিলো |