Saturday, 17 August 2019

হিমা দাসের জীবনী Hima Das Biography In Bengali.pdf

ভারতের অসম রাজ্যের একজন বাসিন্দা হিমা দাস IAAF (International Association of Athletics Federations) আয়োজিত বিশ্ব আন্ডার-২০ অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের ট্র্যাক ইভেন্টে স্বর্ণপদক বিজয়ী প্রথম ভারতীয় মহিলা হয়ে উঠেছে । চলো আরো ভালোভাবে জানা যাক বিশ্বজয়ী Hima Das সম্পর্কে |
1.    পুরো নাম / Full Name    হিমা দাস / Hima Das
2.    জন্ম / Born Date    ৯ই জানুয়ারী, ২০০০
3.    জন্মস্থান / Born Place    Dhing, Nagaon, Assam, India
4.    বাবার নাম / Father Name    রঞ্জিত দাস
5.    পেশা / Occupation    স্প্রিন্টার
6.    উচ্চতা / Height  (approx.)    in centimeters- 165 cm
meters- 1.65 m
feet inches- 5’ 5”
7.    ওজন / Weight (approx.)    in kilograms– 50 kg
in pounds– 110 lbs
8.    ধর্ম / Religion    Hinduism / হিন্দু
9.    বিশ্ব রেকর্ড / World Record    বিশ্ব আন্ডার-20 এথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশীপে 400 মিটার দৌড়ে 51.47 সেকেন্ডে সম্পূর্ণ করা প্রথম বিজয়ী ভারতীয় মহিলা 2018
10.    শখ / Hobbies    ফুটবল খেলা, গান শোনা ও সিনেমা দেখা
11.    Coach/Mentor    নিপন দাস / Nipon Das


ভারতবর্ষকে অ্যাথলেটিক্সে বিশ্বের বুকে জায়গা করে দেওয়া হিমা দাসের জন্ম ৯ই জানুয়ারী ২০০০ সালে আসামের ঢিং নামের ছোট্ট শহরে |

১৮ বছরের এই ছোট্ট মেয়েটি আজ ভারতবর্ষের প্রত্যেক মানুষের গর্ব | যেই গ্রামের নাম আজ থেকে কিছুদিন আগে পর্যন্তও কেউ অত জানতোনা, সেই গ্রাম তথা সেই গ্রামের এক মেয়ের চর্চা আজ সমগ্র দেশবাসী করে চলেছে |

আর চর্চা করাটাই তো স্বাভাবিক, কারণ আজ সেই ছোট্ট মেয়েটি যা করে দেখিয়েছে তা আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারেনি | এতদিন পর্যন্ত ভারত ট্র্যাক ইভেন্টে, বিশ্বমঞ্চে তেমন কোনো ভালো ফল করে ওঠেনি কিন্তু আজ হিমার দৌলতে তা সম্ভব হয়েছে |

আর শুধু তাইনা, সে হয়ে উঠেছে ভারতের প্রথম মহিলা স্প্রিন্টার যে প্রথমবারের জন্য দৌড় প্রতিযোগীতায় স্বর্ণপদক পেয়েছে এরকম কোনো বড় World Class ইভেন্টে এবং তার সাথে করেছে দুর্দান্ত একটি বিশ্ব রেকর্ড |

মাত্র ৫১.৪৭ সেকেন্ডে সে সম্পূর্ণ করেছে তার দৌড়টি যেটা এখনো অবধি মহিলাদের গ্রূপে বিশ্বের সবচেয়ে কম সময়ে শেষ করা ৪০০ মিটার দৌড় |
Career of Hima Das:

তুমি কি জানো, হিমার বাবা রঞ্জিত দাস হলেন একজন কৃষক | তার নিজের দুই বিঘা ধানের জমি ছিল যেখানে চাষবাস করে তিনি তার পরিবারের পেট চালাতেন | ৮ জনের পরিবারে হিমা তার ৬ ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিল |

ছোটবেলায় হিমা তার বাবার ধান খেতেই ফুটবল খেলতো এবং ফুটবল খেলতে খেলতে সে নিজেকে এমন তৈরী করে ফেলেছিল যে ছেলেদের হারানো তার কাছে কোনো ব্যাপার ছিলোনা |

তার ফুটবল খেলা দেখে সেই গ্রামের একজন স্থানীয় কোচ রীতিমত স্তম্ভিত হয়ে পরেছিল কারণ হিমা তার থেকে বড় বড় ছেলেদের সাথে খেলে তাদেরকে অনায়াসেই ফুটবলে হারিয়ে দিচ্ছিল এবং তার গতিও বেশ দারুন ছিল |

কিন্তু মেয়েদের ফুটবল যেহেতু ভারতে এত জনপ্রিয় নয় তাই সেই কোচ তাকে অ্যাথলেটিক্সে যাওয়ার পরামর্শ দেন | হিমা সেই কোচের পরামর্শটি ভীষণ seriously নেয় এবং ধীরে ধীরে বিভিন্ন ছোটখাট দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে থাকে |



প্রতিযোগীতায় সাফল্য আসছে দেখে সে নিজের দৌড় নিয়ে আরো serious হয়ে পরে আর ভালো করে অনুশীলনে মন দেয় | এরই মাধ্যমে হিমা তার জীবনের লক্ষ্য একদম স্থির করে ফেলে |

হিমা এতটাই গরীব ছিল যে তার কাছে দামী International পর্যায়ের Spike Shoe কেনারও পয়সা ছিলোনা |

কিন্তু বলেনা, মনে অদম্য ইচ্ছা থাকলে জীবনে কোনো বাঁধাই তখন আর বাঁধা বলে মনে হয়না | আর সেটাই হলো এখানে, হিমা তখন সস্তা দামের Spike Shoe কিনে আন্তঃজেলা (Inter-district) দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ নিল | আর চমৎকার ভাবে সেই দৌড় প্রতিযোগীতায় দুটি স্বর্ণপদকও পেলো |

হিমার অদ্ভুত প্রতিভা, Directorate of Sports & Youth Welfare এর অ্যাথলেটিক্সের কোচ নিপন দাস চিনতে পারেন এবং তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, যদি হিমাকে সঠিক ট্রেনিং এবং ডায়েটের মধ্যে রাখা যেতে পারে তাহলে সে একদিন ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যত হতে পারবে খেলাধুলার জগতে |

নিপন দাস এরপর হিমার বাবা-মায়ের সাথে কথাবার্তা বলেন মেয়ের প্রতিভার ব্যাপারে | তিনি তাদের বোঝান, যে তাদের মেয়ে ভারতের হয়ে খেললে একদিন দেশের নাম নিশ্চই উজ্জ্বল করবে তাইতো তিনি আরো উন্নতমানের ট্রেনিং দেওয়ানোর জন্য হিমাকে গুয়াহাটি নিয়ে যেতে চান |

প্রথমে, বেশিরভাগ ভারতীয় বাবা-মায়েদের মতই হিমার বাবা-মাও ছাড়তে রাজি হননি হিমাকে তার কোচের সঙ্গে | কিন্তু নিপন দাসের দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মনোভাব এবং বার বার বোঝানোর দৌলতে  তার বাবা-মা অবশেষে রাজি হন হিমাকে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে  ছাড়তে |

এরপর দুই বছর গুয়াহাটিতে হিমা লাগাতার পরিশ্রম ও ভালো ট্রেনিং করতে থাকে | এই দুই বছরে হিমা নিজেকে অ্যাথলেটিক্সে এমন পর্যায়ে নিয়ে চলে গেছিল যে, সব জায়গায় তার নাম লোকে জানতে শুরু করে দেয় তার অনবরত স্প্রিন্টে সাফল্যের জন্য |

এই বছর ২০১৮ সালের কমনওয়েলথ গেমসে হিমা অংশগ্রহন করেছিল কিন্তু সেখানে সে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে | ৫১.৩২ সেকেন্ডে সে তার দৌড় সম্পূর্ণ করেছিল সেখানে |কিন্তু, মাত্র ১.৩৭ সেকেন্ড দেরী হওয়ায় কারণে সে কমনওয়েলথে সোনা জিততে ব্যর্থ হয় |

এই চরম ব্যর্থতার পর অনেকই হয়তো তখন পুরোপুরি ভেঙ্গে পরতো কিন্তু হিমা ছিলো পুরো অন্য ধাঁচের একটি মেয়ে | যার মধ্যে ছিল একদম হার না মনোভাব |

এই ব্যর্থতার পর সে তার ট্রেনিংয়ে আরো ভালোভাবে মনোযোগ দিল | দিনরাত এক করে সে লাগাতার পরিশ্রম করতে লাগলো, নিজের Weakness গুলিকে ঠিক করতে লাগলো আরো ভালো করে |
Records of Hima Das:

এরপর শুরু হলো IAAF আয়োজিত বিশ্ব আন্ডার-২০ অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ | সেখানে বিশ্বের সব সেরা থেকে সেরা প্রতিযোগিনীরা এসেছিল সেই প্রতিযোগিতার অংশ গ্রহন করতে |

দৌড় শুরু হওয়ার সময় হিমা সবার থেকে অনেক পিছনে ছিল  | একসময় মনে হচ্ছিল যে, সে এই প্রতিযোগিতাটিও হারতে চলেছে কিন্তু শেষ মুহূর্তে হিমার অসাধারণ গতি সবাইকে ভুল প্রমান করে দিল এবং সে ৫১.৪৭ সেকেন্ডের মধ্যে দৌড়টি শেষ করলো আর শুধু শেষই করলোনা সেই সাথে ভারতের নাম উজ্জ্বল করার পাশাপাশি স্প্রিন্টে স্বর্ণপদক ও বিশ্বরেকর্ডও করলো |
CONCLUSION

“Hima Das Success Story” আজ সমগ্র দেশবাসীর কাছে এক প্রেরণার সমান | তার সফলতার কাহিনী, এটা আবার প্রমান  করে দিল আমাদের সবাইকে যে হার না মনোভাব, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ চিন্তাধারা, পরিশ্রম ও নিজের ভুল গুলিকে ক্রমাগত improve করা মাধ্যমেই যে কেউ সফলতার শীর্ষে পৌছাতে পারে |  

তাছাড়া যে মানুষ যত মানসিক দিক থেকে শক্তিশালী হবে, তার কাছে তখন জীবনের কোনো বাঁধাই আর বাঁধা বলে মনে হবেনা | সে তখন তার মানসিক শক্তির দ্বারাই সেইসব বাঁধা বা প্রতিকূলতাকে অনায়াসেই অতিক্রম করে ফেলবে যেমন হিমা পেরেছে |

একসময় যার জুত কেনারও পয়সা ছিলোনা সে আজ বিশ্বরেকর্ডের অধিকারিনী | সত্যি এর থেকে দারুন Inspiration আর কি হতে পারে |
Comment

Class XI Political Science

Class XII Political Science

Class 12 Bangla Books Question& Answers