রাজ্য প্রশাসন ও রাজ্য-জনপালনকৃত্যক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১) রাজ্যপালগণ মনােনীত বা নিযুক্ত হন কেন?
উত্তর: খসড়া সংবিধানে (Draft Constitution) রাজ্যপাল নির্বাচিত করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু গণপরিষদে নির্বাচিত রাজ্যপালের পদ্ধতি গৃহীত নয়। রাজ্যপালের নিযুক্তির পথে নিম্নলিখিত যুক্তিগুলি দেখানাে হয় :
(ক) ভারতের মতাে উন্নয়নশীল পশ্চাৎপদ দেশে, ব্যক্তিগত একটি পদের জন্য প্রতিটি রাজ্যে বারে বারে নির্বাচনী ব্যবস্থার ব্যয় বহন করা অযৌক্তিক।
(খ) একটি রাজ্যের সমগ্র নির্বাচকমণ্ডলীর দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে যদি একজন রাজ্যপাল নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি নিজেকে মুখ্যমন্ত্রী অপেক্ষা অধিক জনপ্রিয় ও ক্ষমতাধর বলে মনে করতে পারেন। কারণ একজন মুখ্যমন্ত্রী মাত্র একটি নির্বাচন কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন। এই ব্যবস্থায় রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে।
(গ) মনে রাখা প্রয়ােজন, একজন রাজ্যপাল, সংসদীয়প্রথা অনুসারে, শুধুমাত্র সাংবিধানিক আনুষ্ঠানিক প্রধান মাত্র। রাজ্য আইনসভার নিকট দায়িত্বশীল মন্ত্রীসভার হাতেই প্রকৃত শাসন ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে।
(ঘ) রাষ্ট্রপতির দ্বারা মনােনীত বা নিযুক্ত রাজ্যপালের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারে।
(ঙ) রাজ্যপালের নির্বাচন পদ্ধতি বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতাকে উৎসাহিত করবে। একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী রাজ্যপাল রাজ্যের নাগরিকদের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হলে, তিনি রাজ্যের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্রের দাবি জানাতে পারেন এবং এইভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য মনে করা হয়, দেশের সামগ্রিক সরকারি ব্যবস্থার স্থায়িত্ব, ঐক্য ও সংহতির স্বার্থে রাজ্যপালগণের মনােনয়নের ব্যবস্থা যুক্তিযুক্ত।
উত্তর: খসড়া সংবিধানে (Draft Constitution) রাজ্যপাল নির্বাচিত করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু গণপরিষদে নির্বাচিত রাজ্যপালের পদ্ধতি গৃহীত নয়। রাজ্যপালের নিযুক্তির পথে নিম্নলিখিত যুক্তিগুলি দেখানাে হয় :
(ক) ভারতের মতাে উন্নয়নশীল পশ্চাৎপদ দেশে, ব্যক্তিগত একটি পদের জন্য প্রতিটি রাজ্যে বারে বারে নির্বাচনী ব্যবস্থার ব্যয় বহন করা অযৌক্তিক।
(খ) একটি রাজ্যের সমগ্র নির্বাচকমণ্ডলীর দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে যদি একজন রাজ্যপাল নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি নিজেকে মুখ্যমন্ত্রী অপেক্ষা অধিক জনপ্রিয় ও ক্ষমতাধর বলে মনে করতে পারেন। কারণ একজন মুখ্যমন্ত্রী মাত্র একটি নির্বাচন কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন। এই ব্যবস্থায় রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে।
(গ) মনে রাখা প্রয়ােজন, একজন রাজ্যপাল, সংসদীয়প্রথা অনুসারে, শুধুমাত্র সাংবিধানিক আনুষ্ঠানিক প্রধান মাত্র। রাজ্য আইনসভার নিকট দায়িত্বশীল মন্ত্রীসভার হাতেই প্রকৃত শাসন ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে।
(ঘ) রাষ্ট্রপতির দ্বারা মনােনীত বা নিযুক্ত রাজ্যপালের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পারে।
(ঙ) রাজ্যপালের নির্বাচন পদ্ধতি বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতাকে উৎসাহিত করবে। একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী রাজ্যপাল রাজ্যের নাগরিকদের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হলে, তিনি রাজ্যের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্রের দাবি জানাতে পারেন এবং এইভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য মনে করা হয়, দেশের সামগ্রিক সরকারি ব্যবস্থার স্থায়িত্ব, ঐক্য ও সংহতির স্বার্থে রাজ্যপালগণের মনােনয়নের ব্যবস্থা যুক্তিযুক্ত।
প্রশ্ন ২) রাজ্যপালের আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা বর্ণনা করাে।
উত্তর: অঙ্গরাজ্যে রাজ্যপাল আইন বিভাগের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তিনি আইনসভার অধিবেশন আহ্বান করতে পারেন এবং স্থগিত রাখতে পারেন। আবার মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ অনুসারে তিনি বিধানসভা ভেঙেও দিতে পারেন।
যে-সমস্ত রাজ্যে উচ্চকক্ষ অর্থাৎ বিধান পরিষদ আছে সেখানে তিনি শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি জগতের কৃতী মানুষদের মনােনীত করতে পারেন। তবে এদের সংখ্যা কখনও এক-ষষ্ঠাংশের বেশি হবে না। কোনাে রাজ্যের বিধানসভায় যদি ইঙ্গ-ভারতীয় সম্প্রদায়ের কোনাে প্রতিনিধি না থাকে তবে তিনি ওই সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দু-জনকে বিধানসভায় মনােনীত করতে পারেন।
যে-সমস্ত রাজ্যের আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সেই সমস্ত রাজ্যের আইনসভার উভয় কক্ষের যৌথ অধিবেশন আহ্বান করার অধিকার রাজ্যপালের আছে। রাজ্যপালের সম্মতি ছাড়া কোনাে বিল আইনে পরিণত হয় না। অর্থবিল ছাড়া অন্য বিলের ক্ষেত্রে তিনি সম্মতি দিতেও পারেন, নাও দিতে পারেন অথবা আইনসভার কাছে পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন। তবে আইনসভায় দ্বিতীয়বার বিলটি পাস হলে রাজ্যপাল তাতে স্বাক্ষর প্রদানে বাধ্য থাকেন। অর্থবিলের ক্ষেত্রে তিনি স্বাক্ষর দানে বাধ্য।
সংবিধানের ২১৩ নং ধারা অনুসারে বিধানসভার অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন রাজ্যপাল অধ্যাদেশ (Ordinance) জারি করতে পারেন। এই অধ্যাদেশ আইনের ন্যায় কার্যকর হয়। পরে বিধানসভায় গৃহীত হলে সেটি আইনে পরিণত হয়। রাজ্যপাল প্রয়ােজন মনে করলে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল যেগুলির সঙ্গে সংবিধানের ব্যাখ্যা জড়িত বা হাইকোর্টের মানমর্যাদা জড়িত সেই সমস্ত বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য তার কাছে প্রেরণ করতে পারেন।
উত্তর: অঙ্গরাজ্যে রাজ্যপাল আইন বিভাগের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তিনি আইনসভার অধিবেশন আহ্বান করতে পারেন এবং স্থগিত রাখতে পারেন। আবার মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ অনুসারে তিনি বিধানসভা ভেঙেও দিতে পারেন।
যে-সমস্ত রাজ্যে উচ্চকক্ষ অর্থাৎ বিধান পরিষদ আছে সেখানে তিনি শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি জগতের কৃতী মানুষদের মনােনীত করতে পারেন। তবে এদের সংখ্যা কখনও এক-ষষ্ঠাংশের বেশি হবে না। কোনাে রাজ্যের বিধানসভায় যদি ইঙ্গ-ভারতীয় সম্প্রদায়ের কোনাে প্রতিনিধি না থাকে তবে তিনি ওই সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দু-জনকে বিধানসভায় মনােনীত করতে পারেন।
যে-সমস্ত রাজ্যের আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সেই সমস্ত রাজ্যের আইনসভার উভয় কক্ষের যৌথ অধিবেশন আহ্বান করার অধিকার রাজ্যপালের আছে। রাজ্যপালের সম্মতি ছাড়া কোনাে বিল আইনে পরিণত হয় না। অর্থবিল ছাড়া অন্য বিলের ক্ষেত্রে তিনি সম্মতি দিতেও পারেন, নাও দিতে পারেন অথবা আইনসভার কাছে পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন। তবে আইনসভায় দ্বিতীয়বার বিলটি পাস হলে রাজ্যপাল তাতে স্বাক্ষর প্রদানে বাধ্য থাকেন। অর্থবিলের ক্ষেত্রে তিনি স্বাক্ষর দানে বাধ্য।
সংবিধানের ২১৩ নং ধারা অনুসারে বিধানসভার অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন রাজ্যপাল অধ্যাদেশ (Ordinance) জারি করতে পারেন। এই অধ্যাদেশ আইনের ন্যায় কার্যকর হয়। পরে বিধানসভায় গৃহীত হলে সেটি আইনে পরিণত হয়। রাজ্যপাল প্রয়ােজন মনে করলে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল যেগুলির সঙ্গে সংবিধানের ব্যাখ্যা জড়িত বা হাইকোর্টের মানমর্যাদা জড়িত সেই সমস্ত বিল রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য তার কাছে প্রেরণ করতে পারেন।
প্রশ্ন ৩) রাজ্যপালের পদমর্যাদা আলােচনা করাে।
উত্তর: রাজ্যের সাংবিধানিক এবং আলংকারিক প্রধানরূপে রাজ্যপালের পদের যথেষ্ট মর্যাদা আছে। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বিশেষত ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের পরে যখন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অকংগ্রেসি সরকার স্থাপিত হয় তখন থেকে রাজ্যপালের পদকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুসারে রাজ্যপালকে মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শক্রমে চলতে হয়। যার অর্থ মন্ত্রীসভা হল রাজ্যের শাসন ক্ষমতার প্রকৃত অধিকারী। বাস্তবে আমরা লক্ষ করি যে সংবিধানই তাকে একজন শক্তিশালী শাসকরূপে নিজেকে প্রতিপন্ন করার যথেষ্ট সুযােগ দিয়েছে। এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার গুরুত্ব অপরিসীম। সমালােচকগণ একথা বলেন যে রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় শাসন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি। সেই কারণে অঙ্গরাজ্যের ওপর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমরূপে রাজ্যপাল কাজ করেন।
সাম্প্রতিককালে ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং গােয়া প্রভৃতি রাজ্যে রাজ্যপালদের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য একটি রাজ্যে যখন সহজে সরকার গঠন করা সম্ভব হয়। তখনই নানাবিধ অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতি রাজ্যপালকে অনেক সময় রাজ্যের স্বার্থে সক্রিয় হতে বাধ্য করে।
যারা মনে করেন রাজ্যপাল হলেন প্রকৃত শাসক তারা মুখ্যমন্ত্রী নিয়ােগ, বিধানসভা অধিবেশনের আহ্বান এবং বিধানসভা ভেঙে দেওয়া সংক্রান্ত বিগত প্রায় চার দশকে অজস্র দৃষ্টান্ত উপস্থাপিত করে প্রমাণ করতে চান যে সংবিধানে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার ধারা তাকে যথেষ্ট ক্ষমতার অধিকারী করেছে। এছাড়া সংবিধানে কোথাও বলা নেই যে রাজ্যপাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ মেনে চলতে বাধ্য। Sri S. R. Maheswari, B. C. Mitter, প্রমুখ কয়েকজন রাজ্যপালকে প্রকৃত শাসক মনে করলেও এটা আমাদের মনে রাখা দরকার যে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যে রাজ্যপালের শীর্ষস্থান নিছকই আনুষ্ঠানিক। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ওপর অনুষ্ঠিত একটি আলােচনাচক্রে তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি শ্রী পাঠক বলেছিলেন যে রাজ্যপাল হলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান এবং সেই সূত্রে তিনি সাধারণভাবে মন্ত্রীসভার পরামর্শ মেনে চলতে বাধ্য। তবে সংবিধান নির্ধারিত বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে তিনি তার নিজস্ব অভিমত অনুসারে চলবেন। একই ভাষায় প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ শ্রীদুর্গাদাস বসু বলেছেন যে শুধুমাত্র সংবিধানে উল্লিখিত ক্ষেত্রে তিনি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন। রাজ্যপালের মর্যাদা সংক্রান্ত এ যাবৎকালে যতগুলি মামলা হয়েছে সবগুলিতে আদালত এই রায় দিয়েছে যে রাজ্যপাল নিছক নিয়মতান্ত্রিক প্রধান। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে সুনীল বসু বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিবের মামলায় আদালত রায় দেয় যে মন্ত্রীসভার পরামর্শ ছাড়া রাজ্যপাল চলতে পারেন না। সরােজিনী নাইডুর ভাষায় রাজ্যপাল হলেন ‘A Bird in a golden cage.’
রাজ্যের আলংকারিক প্রধান বা ‘কেন্দ্রের প্রতিনিধি’ হলেও রাজ্যস্তরে রাজ্যপাল ‘স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা’ প্রয়ােগ করে, বিশেষ পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসনের প্রকৃত প্রধান বা Real head হয়ে ওঠেন।
উত্তর: রাজ্যের সাংবিধানিক এবং আলংকারিক প্রধানরূপে রাজ্যপালের পদের যথেষ্ট মর্যাদা আছে। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে বিশেষত ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের পরে যখন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অকংগ্রেসি সরকার স্থাপিত হয় তখন থেকে রাজ্যপালের পদকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুসারে রাজ্যপালকে মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শক্রমে চলতে হয়। যার অর্থ মন্ত্রীসভা হল রাজ্যের শাসন ক্ষমতার প্রকৃত অধিকারী। বাস্তবে আমরা লক্ষ করি যে সংবিধানই তাকে একজন শক্তিশালী শাসকরূপে নিজেকে প্রতিপন্ন করার যথেষ্ট সুযােগ দিয়েছে। এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার গুরুত্ব অপরিসীম। সমালােচকগণ একথা বলেন যে রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় শাসন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি। সেই কারণে অঙ্গরাজ্যের ওপর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমরূপে রাজ্যপাল কাজ করেন।
সাম্প্রতিককালে ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং গােয়া প্রভৃতি রাজ্যে রাজ্যপালদের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য একটি রাজ্যে যখন সহজে সরকার গঠন করা সম্ভব হয়। তখনই নানাবিধ অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতি রাজ্যপালকে অনেক সময় রাজ্যের স্বার্থে সক্রিয় হতে বাধ্য করে।
যারা মনে করেন রাজ্যপাল হলেন প্রকৃত শাসক তারা মুখ্যমন্ত্রী নিয়ােগ, বিধানসভা অধিবেশনের আহ্বান এবং বিধানসভা ভেঙে দেওয়া সংক্রান্ত বিগত প্রায় চার দশকে অজস্র দৃষ্টান্ত উপস্থাপিত করে প্রমাণ করতে চান যে সংবিধানে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার ধারা তাকে যথেষ্ট ক্ষমতার অধিকারী করেছে। এছাড়া সংবিধানে কোথাও বলা নেই যে রাজ্যপাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ মেনে চলতে বাধ্য। Sri S. R. Maheswari, B. C. Mitter, প্রমুখ কয়েকজন রাজ্যপালকে প্রকৃত শাসক মনে করলেও এটা আমাদের মনে রাখা দরকার যে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যে রাজ্যপালের শীর্ষস্থান নিছকই আনুষ্ঠানিক। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ওপর অনুষ্ঠিত একটি আলােচনাচক্রে তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি শ্রী পাঠক বলেছিলেন যে রাজ্যপাল হলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান এবং সেই সূত্রে তিনি সাধারণভাবে মন্ত্রীসভার পরামর্শ মেনে চলতে বাধ্য। তবে সংবিধান নির্ধারিত বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে তিনি তার নিজস্ব অভিমত অনুসারে চলবেন। একই ভাষায় প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ শ্রীদুর্গাদাস বসু বলেছেন যে শুধুমাত্র সংবিধানে উল্লিখিত ক্ষেত্রে তিনি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়ােগ করতে পারেন। রাজ্যপালের মর্যাদা সংক্রান্ত এ যাবৎকালে যতগুলি মামলা হয়েছে সবগুলিতে আদালত এই রায় দিয়েছে যে রাজ্যপাল নিছক নিয়মতান্ত্রিক প্রধান। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে সুনীল বসু বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিবের মামলায় আদালত রায় দেয় যে মন্ত্রীসভার পরামর্শ ছাড়া রাজ্যপাল চলতে পারেন না। সরােজিনী নাইডুর ভাষায় রাজ্যপাল হলেন ‘A Bird in a golden cage.’
রাজ্যের আলংকারিক প্রধান বা ‘কেন্দ্রের প্রতিনিধি’ হলেও রাজ্যস্তরে রাজ্যপাল ‘স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা’ প্রয়ােগ করে, বিশেষ পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসনের প্রকৃত প্রধান বা Real head হয়ে ওঠেন।
প্রশ্ন ৪) মুখ্যমন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পর্কে একটি টীকা লেখাে৷
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ও পদমর্যাদা বিভিন্ন উপাদানের ওপর নির্ভরশীল।
প্রথমত, মুখ্যমন্ত্রীর নিজের দলের মধ্যে তাঁর সম্পর্কে সকলের যদি ইতিবাচক এবং প্রশংসাসূচক মনােভাব থাকে তবে তিনি সহজে কাজ করতে পারেন।
দ্বিতীয়ত, রাজ্যপাল যদি যথার্থই নিয়মতান্ত্রিক শাসন ও কর্তার ভূমিকা গ্রহণ করেন তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনাে দ্বন্দ্ব হয় না। আবার যদি রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী একই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হন তাহলে কোনাে সমস্যা হয় না। আমরা এখানে সচেতনভাবে দলের পরিবর্তে দৃষ্টিভঙ্গি কথাটি ব্যবহার করছি কারণ আমরা লক্ষ করি যে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী একই রাজনৈতিক দলের হলেও মতপার্থক্য হতে পারে।
তৃতীয়ত, মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত দক্ষতা ও যােগ্যতার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রবল প্রতাপশালী মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। যেমন—পশ্চিমবঙ্গে ড. বি. সি. রায় ও ড. জ্যোতি বসু উত্তরপ্রদেশে শ্ৰী জি. বি. পন্থ, পাঞ্জাবে শ্রীপ্রতাপ সিং কায়রো, তামিলনাড়ুতে শ্রী আন্না দুরাই ও শ্রী রামচন্দ্রন, বিহারে শ্রীকৃষ্ণ সিং প্রমুখ বহু ব্যক্তির নাম উল্লেখযােগ্য।
এখন প্রশ্ন হল মুখ্যমন্ত্রী সত্যিই কতটুকু প্রকৃত প্রশাসক। অনেক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি মনে করেন যে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে প্রকৃত শাসক হওয়ার পথে কিছু বিধিনিষেধ অবশ্যই আছে। সংবিধানের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে আমরা লক্ষ করি যে সংবিধানের কয়েকটি ধারা এবং ব্যবস্থা মুখ্যমন্ত্রীর পদকে কণ্টকিত করেছে। প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় যে রাজ্যপালের কিছু স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা আছে।
চতুর্থত, রাজ্যপালের রিপাের্টের ওপর ভিত্তি করে এবং অন্যসূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ওপর নির্ভর করে সংবিধানের ৩৫৬ নং ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতি রাজ্য সরকার ভেঙে দিতে পারেন। সর্বোপরি আইনসভায় যদি সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকে এবং যদি উপদলীয় কোন্দলে শাসকদল জর্জরিত হয় তবে মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিকে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর পদমর্যাদা অনেকটাই নির্ভর করে তাঁর সততা, দক্ষতা, জনপ্রিয়তা ইত্যাদি ব্যক্তিগত গুণাবলির ওপর।
উত্তর: অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ও পদমর্যাদা বিভিন্ন উপাদানের ওপর নির্ভরশীল।
প্রথমত, মুখ্যমন্ত্রীর নিজের দলের মধ্যে তাঁর সম্পর্কে সকলের যদি ইতিবাচক এবং প্রশংসাসূচক মনােভাব থাকে তবে তিনি সহজে কাজ করতে পারেন।
দ্বিতীয়ত, রাজ্যপাল যদি যথার্থই নিয়মতান্ত্রিক শাসন ও কর্তার ভূমিকা গ্রহণ করেন তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনাে দ্বন্দ্ব হয় না। আবার যদি রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী একই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হন তাহলে কোনাে সমস্যা হয় না। আমরা এখানে সচেতনভাবে দলের পরিবর্তে দৃষ্টিভঙ্গি কথাটি ব্যবহার করছি কারণ আমরা লক্ষ করি যে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী একই রাজনৈতিক দলের হলেও মতপার্থক্য হতে পারে।
তৃতীয়ত, মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত দক্ষতা ও যােগ্যতার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রবল প্রতাপশালী মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। যেমন—পশ্চিমবঙ্গে ড. বি. সি. রায় ও ড. জ্যোতি বসু উত্তরপ্রদেশে শ্ৰী জি. বি. পন্থ, পাঞ্জাবে শ্রীপ্রতাপ সিং কায়রো, তামিলনাড়ুতে শ্রী আন্না দুরাই ও শ্রী রামচন্দ্রন, বিহারে শ্রীকৃষ্ণ সিং প্রমুখ বহু ব্যক্তির নাম উল্লেখযােগ্য।
এখন প্রশ্ন হল মুখ্যমন্ত্রী সত্যিই কতটুকু প্রকৃত প্রশাসক। অনেক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি মনে করেন যে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে প্রকৃত শাসক হওয়ার পথে কিছু বিধিনিষেধ অবশ্যই আছে। সংবিধানের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে আমরা লক্ষ করি যে সংবিধানের কয়েকটি ধারা এবং ব্যবস্থা মুখ্যমন্ত্রীর পদকে কণ্টকিত করেছে। প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় যে রাজ্যপালের কিছু স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা আছে।
চতুর্থত, রাজ্যপালের রিপাের্টের ওপর ভিত্তি করে এবং অন্যসূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ওপর নির্ভর করে সংবিধানের ৩৫৬ নং ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতি রাজ্য সরকার ভেঙে দিতে পারেন। সর্বোপরি আইনসভায় যদি সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকে এবং যদি উপদলীয় কোন্দলে শাসকদল জর্জরিত হয় তবে মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিকে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর পদমর্যাদা অনেকটাই নির্ভর করে তাঁর সততা, দক্ষতা, জনপ্রিয়তা ইত্যাদি ব্যক্তিগত গুণাবলির ওপর।
প্রশ্ন ৫) রাজ্য রাষ্টকৃত্যক কমিশনের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলােচনা করাে।
উত্তর: রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের ক্ষমতা ও কার্যাবলি বিশ্লেষণ করলে আমরা লক্ষ করি যে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের ক্ষমতা ও কার্যাবলির সঙ্গে রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের ক্ষমতা ও কার্যাবলির যথেষ্ট সাদৃশ্য আছে। নিম্নলিখিতভাবে আমরা কাজগুলিকে চিহ্নিত করতে পারি :
* অসামরিক (Civil) পদগুলিতে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের নিয়ােগ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে পরামর্শদান।
* অসামরিক পদে নিয়ােগনীতি নির্ধারণ, পদোন্নতি ও বদলির নীতি নির্ধারণ এবং এই সকল বিষয়ে যােগ্যতা বিচার করার ক্ষেত্রে কমিশন পরামর্শ প্রদান করে।
* কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন দলিলপত্র ও স্মারকলিপি উপস্থাপিত করা।
* কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের অধীনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোনাে কর্মচারী আহত হলে তার জন্য ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে সুপারিশ করা।
* কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে কার্য নির্বাহকালে আনীত মামলার ব্যয় নির্বাহ করার জন্য প্রয়ােজনীয় সুপারিশ করা।
* রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের কার্যাবলি সম্পর্কে যখন রাজ্যপাল কিছু জানতে চাইবেন তখন তাকে অবহিত করা এবং পরামর্শ দেওয়া।
* রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনকে রাজ্যপালের কাছে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করতে হয় এবং রাজ্যপাল সেই প্রতিবেদন বা বিবরণী রাজ্যের আইনসভায় পেশ করেন।
আমরা লক্ষ করি যে সাধারণভাবে রাজ্য সরকার কমিশনের সুপারিশগুলিকে গ্রহণ করে। যদি কোনাে ক্ষেত্রে সরকার কমিশনের কোনাে সুপারিশ অগ্রাহ্য করে সেক্ষেত্রে সরকারকে তার কারণ রাজ্যের আইনসভায় জানাতে হয়। সমালােচকগণ বলেন যে বহু ক্ষেত্রে কমিশনের বিবরণ বিধানসভায় এত দেরি করে পেশ করা হয় যে সমগ্র বিষয়টি মূল্যহীন হয়ে পড়ে।
উত্তর: রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের ক্ষমতা ও কার্যাবলি বিশ্লেষণ করলে আমরা লক্ষ করি যে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের ক্ষমতা ও কার্যাবলির সঙ্গে রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের ক্ষমতা ও কার্যাবলির যথেষ্ট সাদৃশ্য আছে। নিম্নলিখিতভাবে আমরা কাজগুলিকে চিহ্নিত করতে পারি :
* অসামরিক (Civil) পদগুলিতে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের নিয়ােগ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে পরামর্শদান।
* অসামরিক পদে নিয়ােগনীতি নির্ধারণ, পদোন্নতি ও বদলির নীতি নির্ধারণ এবং এই সকল বিষয়ে যােগ্যতা বিচার করার ক্ষেত্রে কমিশন পরামর্শ প্রদান করে।
* কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন দলিলপত্র ও স্মারকলিপি উপস্থাপিত করা।
* কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের অধীনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোনাে কর্মচারী আহত হলে তার জন্য ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে সুপারিশ করা।
* কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে কার্য নির্বাহকালে আনীত মামলার ব্যয় নির্বাহ করার জন্য প্রয়ােজনীয় সুপারিশ করা।
* রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনের কার্যাবলি সম্পর্কে যখন রাজ্যপাল কিছু জানতে চাইবেন তখন তাকে অবহিত করা এবং পরামর্শ দেওয়া।
* রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনকে রাজ্যপালের কাছে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করতে হয় এবং রাজ্যপাল সেই প্রতিবেদন বা বিবরণী রাজ্যের আইনসভায় পেশ করেন।
আমরা লক্ষ করি যে সাধারণভাবে রাজ্য সরকার কমিশনের সুপারিশগুলিকে গ্রহণ করে। যদি কোনাে ক্ষেত্রে সরকার কমিশনের কোনাে সুপারিশ অগ্রাহ্য করে সেক্ষেত্রে সরকারকে তার কারণ রাজ্যের আইনসভায় জানাতে হয়। সমালােচকগণ বলেন যে বহু ক্ষেত্রে কমিশনের বিবরণ বিধানসভায় এত দেরি করে পেশ করা হয় যে সমগ্র বিষয়টি মূল্যহীন হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন ৬) রাজ্য সচিবালয়ের গঠন আলােচনা করাে।
উত্তর: যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার ঐতিহ্য অনুসরণ করে ভারতবর্ষে কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের ন্যায় রাজ্যগুলির ক্ষেত্রেও অনুরূপভাবে রাজ্য সচিবালয় স্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্য সচিবালয়কে রাজ্য সরকারের “প্রধান প্রশাসনিক সংস্থা” বলা হয়। রাজ্যের প্রশাসনিক ক্রিয়াকলাপ এবং ঘটনাপ্রবাহ সচিবালয়ের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। রাজ্য সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন বিষয়ের পরিচালনা, বিভিন্ন কাজের মধ্যে সমন্বয়সাধন এবং সরকারের আর্থিক, প্রশাসনিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য সকল প্রকার নীতির যথাযথ প্রয়ােগের দায়িত্ব রাজ্য সচিবালয়কে পালন করতে হয়।
গঠন (Composition)
প্রখ্যাত প্রশাসন বিজ্ঞানী শ্রীরাম মাহেশ্বরী বলেছেন যে, “The expression secretariat is used to refer to the complex of departments whose heads administratively are secretaries and politically ministers.”। অর্থাৎ রাজ্য সচিবালয় বলতে সাধারণভাবে বিভিন্ন বিভাগের সমষ্টিগত ব্যবস্থাকে বােঝায় যেখানে প্রশাসনিক অর্থে বিভাগের প্রধান হলেন সচিবগণ এবং রাজনৈতিক অর্থে প্রধান হলেন মন্ত্রীগণ। আবার একজন বিভাগীয় সচিব সামগ্রিকভাবে সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি তাই সরকারের সচিব, তিনি কোনাে বিশেষ বিভাগ বা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর সচিব নন। রাজ্য সরকার তথা রাজ্য সচিবালয়ে এইসব পদস্থ আধিকারিক বা সরকারি কর্মচারীকে আমরা Civil Servant (রাষ্ট্রকৃত্যক আধিকারিক) বলে থাকি। প্রচলিত ভাষায় এদের আমলা বলা হয়। রাজনৈতিক প্রধান অর্থাৎ মন্ত্রী যে-সকল নীতি নির্ধারণ করেন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, সেগুলির বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা দপ্তরের সচিবকে পালন করতে হয়।
রাজ্য সরকারের প্রতিটি বিভাগে যেমন একজন সচিব আছেন তেমনি আবার উপসচিব (Deputy Secretary), অধস্তন সচিব (under secretary) এবং সহকারী সচিব (Assistant Secretary) থাকেন। গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলিতে অনেকসময় প্রধান সচিব (Principal Secretary), অতিরিক্ত সচিব (Additional Secretary) এবং যুগ্মসচিব (Joint Secretary) থাকেন। এঁরা প্রত্যেকে সরকারের কার্যকাল ব্যবস্থার (Tenure system)-এর অধীন। প্রতিটি সচিবালয়ে সকল প্রকার সচিবগণ একটি নির্দিষ্ট কার্যকালের জন্য নিযুক্ত হন। সরকারের একটি বিভাগের দপ্তর বা কার্যালয় পরিচালনার জন্য আরও কিছু বিশেষ পদাধিকারীর প্রয়ােজন হয়। এরা হলেন তত্ত্বাবধায়ক (Superintendent), সহকারী (Assistant), উধ্বর্তন বিভাগীয় করণিক (Upper Division Clerk), নিম্নতন বিভাগীয় করণিক (Lower Division Clerk), টাইপিস্ট ও স্টেনােগ্রাফার প্রভৃতি। সাধারণত রাজ্য সচিবালয়ের অন্তর্গত বিভাগগুলির সংখ্যা ১১-৩৪ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। আবার এমন কিছু বিভাগ আছে যেগুলি ভারতের সকল রাজ্যের সচিবালয়ে দেখা যায়। এগুলি হল—
১। সাধারণ প্রশাসন, ২। স্বরাষ্ট্র, ৩। খাদ্য, ৪। পরিকল্পনা, ৫। পঞ্চায়েতিরাজ, ৬। অর্থ, ৭। আইন, ৮। পূর্ত, ৯। সেচ, ১০। বিদ্যুৎ, ১১। কৃষি, ১২। শিক্ষা, ১৩। শিল্প, ১৪। সমবায়, ১৫। পরিবহন, ১৬। স্বায়ত্তশাসন, ১৭। জেল, ১৮। শ্রম ও নিয়ােগ, ১৯। শুল্ক ও কর, ২০ | মৎস্য চাষ, ২১। তথ্য ও সংস্কৃতি, ২২। সমাজকল্যাণ, ২৩। বন ইত্যাদি।
উত্তর: যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার ঐতিহ্য অনুসরণ করে ভারতবর্ষে কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের ন্যায় রাজ্যগুলির ক্ষেত্রেও অনুরূপভাবে রাজ্য সচিবালয় স্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্য সচিবালয়কে রাজ্য সরকারের “প্রধান প্রশাসনিক সংস্থা” বলা হয়। রাজ্যের প্রশাসনিক ক্রিয়াকলাপ এবং ঘটনাপ্রবাহ সচিবালয়ের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। রাজ্য সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন বিষয়ের পরিচালনা, বিভিন্ন কাজের মধ্যে সমন্বয়সাধন এবং সরকারের আর্থিক, প্রশাসনিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য সকল প্রকার নীতির যথাযথ প্রয়ােগের দায়িত্ব রাজ্য সচিবালয়কে পালন করতে হয়।
গঠন (Composition)
প্রখ্যাত প্রশাসন বিজ্ঞানী শ্রীরাম মাহেশ্বরী বলেছেন যে, “The expression secretariat is used to refer to the complex of departments whose heads administratively are secretaries and politically ministers.”। অর্থাৎ রাজ্য সচিবালয় বলতে সাধারণভাবে বিভিন্ন বিভাগের সমষ্টিগত ব্যবস্থাকে বােঝায় যেখানে প্রশাসনিক অর্থে বিভাগের প্রধান হলেন সচিবগণ এবং রাজনৈতিক অর্থে প্রধান হলেন মন্ত্রীগণ। আবার একজন বিভাগীয় সচিব সামগ্রিকভাবে সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি তাই সরকারের সচিব, তিনি কোনাে বিশেষ বিভাগ বা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর সচিব নন। রাজ্য সরকার তথা রাজ্য সচিবালয়ে এইসব পদস্থ আধিকারিক বা সরকারি কর্মচারীকে আমরা Civil Servant (রাষ্ট্রকৃত্যক আধিকারিক) বলে থাকি। প্রচলিত ভাষায় এদের আমলা বলা হয়। রাজনৈতিক প্রধান অর্থাৎ মন্ত্রী যে-সকল নীতি নির্ধারণ করেন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, সেগুলির বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা দপ্তরের সচিবকে পালন করতে হয়।
রাজ্য সরকারের প্রতিটি বিভাগে যেমন একজন সচিব আছেন তেমনি আবার উপসচিব (Deputy Secretary), অধস্তন সচিব (under secretary) এবং সহকারী সচিব (Assistant Secretary) থাকেন। গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলিতে অনেকসময় প্রধান সচিব (Principal Secretary), অতিরিক্ত সচিব (Additional Secretary) এবং যুগ্মসচিব (Joint Secretary) থাকেন। এঁরা প্রত্যেকে সরকারের কার্যকাল ব্যবস্থার (Tenure system)-এর অধীন। প্রতিটি সচিবালয়ে সকল প্রকার সচিবগণ একটি নির্দিষ্ট কার্যকালের জন্য নিযুক্ত হন। সরকারের একটি বিভাগের দপ্তর বা কার্যালয় পরিচালনার জন্য আরও কিছু বিশেষ পদাধিকারীর প্রয়ােজন হয়। এরা হলেন তত্ত্বাবধায়ক (Superintendent), সহকারী (Assistant), উধ্বর্তন বিভাগীয় করণিক (Upper Division Clerk), নিম্নতন বিভাগীয় করণিক (Lower Division Clerk), টাইপিস্ট ও স্টেনােগ্রাফার প্রভৃতি। সাধারণত রাজ্য সচিবালয়ের অন্তর্গত বিভাগগুলির সংখ্যা ১১-৩৪ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। আবার এমন কিছু বিভাগ আছে যেগুলি ভারতের সকল রাজ্যের সচিবালয়ে দেখা যায়। এগুলি হল—
১। সাধারণ প্রশাসন, ২। স্বরাষ্ট্র, ৩। খাদ্য, ৪। পরিকল্পনা, ৫। পঞ্চায়েতিরাজ, ৬। অর্থ, ৭। আইন, ৮। পূর্ত, ৯। সেচ, ১০। বিদ্যুৎ, ১১। কৃষি, ১২। শিক্ষা, ১৩। শিল্প, ১৪। সমবায়, ১৫। পরিবহন, ১৬। স্বায়ত্তশাসন, ১৭। জেল, ১৮। শ্রম ও নিয়ােগ, ১৯। শুল্ক ও কর, ২০ | মৎস্য চাষ, ২১। তথ্য ও সংস্কৃতি, ২২। সমাজকল্যাণ, ২৩। বন ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৭) প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগের কার্যাবলি আলােচনা করাে।
উত্তর: রাজ্য প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে যে দুটি সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার মধ্যে একটি হল সচিবালয় (Secretariat) এবং অপরটি হল প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগ (Directorate)। সচিবালয় হল রাজ্য প্রশাসনের নীতি প্রণয়নকারী সংস্থা অন্যদিকে প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগ হল নীতি রূপায়ণকারী সংস্থা। রাজ্য প্রশাসনে সচিবালয় কর্তৃক গৃহীত নীতি ও কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করার জন্য এই বিভাগ কাজ করে। এজন্য প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগকে রাজ্য প্রশাসনের কার্যনির্বাহী সংস্থারূপেও অভিহিত করা হয়। প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগের (Directorate) প্রধানকে বলা হয় আধিকারিক বা অধিকর্তা (Director)। তাঁকে সহায়তা করার জন্য সহকারী অধিকর্তা বা যুগ্ম-অধিকর্তাও থাকেন।
প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগের হাতে রাজ্য প্রশাসনের যে-সকল কাজকর্মের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল-
* বিভিন্ন বিভাগের জন্য বিভাগীয় বাজেটের খসড়া রচনা করা।
* মন্ত্রীদের প্রশাসনিক দপ্তরের বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতারূপে কাজ করা।
* বিভাগীয় আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
* বিভাগীয় কর্মীদের নিয়ােগ, পদোন্নতি, বদলি, ছুটি ইত্যাদির তদারকি করা।
* জেলাস্তরে বিভাগীয় কর্মীদের কাজকর্মের সামগ্রিক তত্ত্বাবধান করা।
* বিভাগীয় গবেষণা ও পরীক্ষামূলক কর্মসূচির জন্য প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।
* কেন্দ্রীয় সরকার ও অন্যান্য রাজ্য সরকারসমূহের ডাকা সম্মেলনে আধিকারিকদের প্রেরণ করা।
* দপ্তরের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়ােজন হলে আধিকারিকদের ওপরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।
* বিভাগীয় কাজকর্মের অগ্রগতি খতিয়ে দেখা।
* কর্মীদের পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ে রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনকে (Public Service Commission) যথাযথ পরামর্শ দেওয়া প্রভৃতি।
জনপ্রশাসনের লেখকরা সচিবালয় ও প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগকে পরস্পরের পরিপূরকরূপে কাজ করার কথা বলেছেন। তাদের মতে এই দুটি সংস্থা একে অপরের পরিপূরক হিসাবে কাজ করলে রাজ্য প্রশাসনের প্রশাসনিক দক্ষতা ও কর্মকুশলতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
উত্তর: রাজ্য প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে যে দুটি সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার মধ্যে একটি হল সচিবালয় (Secretariat) এবং অপরটি হল প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগ (Directorate)। সচিবালয় হল রাজ্য প্রশাসনের নীতি প্রণয়নকারী সংস্থা অন্যদিকে প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগ হল নীতি রূপায়ণকারী সংস্থা। রাজ্য প্রশাসনে সচিবালয় কর্তৃক গৃহীত নীতি ও কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করার জন্য এই বিভাগ কাজ করে। এজন্য প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগকে রাজ্য প্রশাসনের কার্যনির্বাহী সংস্থারূপেও অভিহিত করা হয়। প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগের (Directorate) প্রধানকে বলা হয় আধিকারিক বা অধিকর্তা (Director)। তাঁকে সহায়তা করার জন্য সহকারী অধিকর্তা বা যুগ্ম-অধিকর্তাও থাকেন।
প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগের হাতে রাজ্য প্রশাসনের যে-সকল কাজকর্মের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল-
* বিভিন্ন বিভাগের জন্য বিভাগীয় বাজেটের খসড়া রচনা করা।
* মন্ত্রীদের প্রশাসনিক দপ্তরের বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতারূপে কাজ করা।
* বিভাগীয় আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
* বিভাগীয় কর্মীদের নিয়ােগ, পদোন্নতি, বদলি, ছুটি ইত্যাদির তদারকি করা।
* জেলাস্তরে বিভাগীয় কর্মীদের কাজকর্মের সামগ্রিক তত্ত্বাবধান করা।
* বিভাগীয় গবেষণা ও পরীক্ষামূলক কর্মসূচির জন্য প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।
* কেন্দ্রীয় সরকার ও অন্যান্য রাজ্য সরকারসমূহের ডাকা সম্মেলনে আধিকারিকদের প্রেরণ করা।
* দপ্তরের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়ােজন হলে আধিকারিকদের ওপরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।
* বিভাগীয় কাজকর্মের অগ্রগতি খতিয়ে দেখা।
* কর্মীদের পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ে রাষ্ট্রকৃত্যক কমিশনকে (Public Service Commission) যথাযথ পরামর্শ দেওয়া প্রভৃতি।
জনপ্রশাসনের লেখকরা সচিবালয় ও প্রশাসনিক কার্যনির্বাহী বিভাগকে পরস্পরের পরিপূরকরূপে কাজ করার কথা বলেছেন। তাদের মতে এই দুটি সংস্থা একে অপরের পরিপূরক হিসাবে কাজ করলে রাজ্য প্রশাসনের প্রশাসনিক দক্ষতা ও কর্মকুশলতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
প্রশ্ন ৮) জেলাশাসকের কার্যাবলি সংক্ষেপে আলােচনা করাে।
উত্তর:
উত্তর:
- জেলাশাসক বা জেলা কালেক্টরের প্রধান কাজ হল জেলার আইন ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা। আইনশৃঙ্খলা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তাকে পুলিশের সাহায্য নিতে হয়। জেলার পুলিশ সুপার (S. P.) স্বাধীনভাবে কাজ করলেও আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে তাঁকে জেলাশাসকের নিয়ন্ত্রণ মানতে হয়।
- জেলাশাসক অধীনস্থ অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান করে থাকেন। স্থানীয় সংস্থা, পৌর প্রতিষ্ঠান, বিজ্ঞাপিত এলাকার (Notified Area) নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান।
- জেলার নির্বাচনী ফার্ম তত্ত্বাবধান শ্রমিক সমস্যা ও ধর্মঘটের সমাধান করা।
- স্থায়ী বাসিন্দা, তফশিলি জাতি, উপজাতি, অনুন্নত সম্প্রদায়ের মানুষ ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সার্টিফিকেট প্রদান।
- লাইসেন্স প্রদান ও বাতিল।
- পাসপাের্ট ভিসার সুপারিশ করা।
- সিনেমা, যাত্রা, আমােদপ্রমোেদ সম্পর্কিত আইন বলবৎ করা।
- অস্থায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ অনুমােদন।
- জেলার সরকারি উকিল ও অতিরিক্ত সরকারি উকিল নিয়ােগ।
- সরকারের নিকট বার্ষিক ফৌজদারি প্রতিবেদন পাঠান।
- দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
- জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্প, অধিক খাদ্য উৎপাদন প্রভৃতি সরকারি প্রকল্প কার্যকর করা এবং জনসভা, মিছিল, মেলা, সাম্প্রদায়িক গােলােযােগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
প্রশ্ন ৯) জেলাশাসকের সঙ্গে মহকুমাশাসকের সম্পর্ক সংক্ষেপে আলােচনা করাে।
উত্তর: আমরা সহজেই অনুমান করতে পারি যে একজন জেলাশাসকের পক্ষে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অবস্থা এবং সমস্যা সম্পর্কে সর্বদা অবগত হওয়া সহজ বিষয় নয়। বিশেষত জেলার আয়তন যদি বিশাল হয়, এবং অনেকগুলি ব্লক থাকে তবে জেলাশাসকের পক্ষে স্বভাবতই দূরবর্তী গ্রামীণ এলাকার সমস্যা সম্পর্কে সঠিকভাবে সচেতন ও সক্রিয় হওয়া সম্ভব হয় না। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সহজেই মহকুমাশাসকের পদের গুরুত্ব উপলদ্ধি করতে পারি। ব্রিটিশ যুগে মহকুমাশাসকগণ ছিলেন জেলা আধিকারিকের যথার্থ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। অন্যদিকে জেলা আধিকারিকগণও মহকুমাশাসকদের মানসিক শক্তি বৃদ্ধিতে নানাভাবে সাহায্য করতেন। বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে তারা মহকুমাশাসকদের কঠোর নির্দেশিকা (Guidance) দিতেন। বর্তমানে অবশ্য এই সম্পর্কের মূল ধারাটি অপরিবর্তিত আছে। একটি মহকুমার অন্তর্গত বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে কর্মরত আধিকারিকদের সম্বন্ধে মূল্যায়ন প্রতিবেদন বা রিপাের্ট লেখার কাজটি জেলাশাসকই করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে জেলাশাসক মহকুমাশাসকের নিকট থেকে প্রয়ােজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। মহকুমাশাসককে নানাবিধ ক্ষেত্রে ব্যয়নির্বাহের জন্য জেলাশাসকের ওপর নির্ভর করতে হয়। অনুরূপভাবে জেলাশাসকরাও ক্ষেত্রবিশেষে মহকুমাশাসককে সাহায্য প্রদানের ব্যাপারে উদার মনােভাব গ্রহণ করেন।
উত্তর: আমরা সহজেই অনুমান করতে পারি যে একজন জেলাশাসকের পক্ষে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অবস্থা এবং সমস্যা সম্পর্কে সর্বদা অবগত হওয়া সহজ বিষয় নয়। বিশেষত জেলার আয়তন যদি বিশাল হয়, এবং অনেকগুলি ব্লক থাকে তবে জেলাশাসকের পক্ষে স্বভাবতই দূরবর্তী গ্রামীণ এলাকার সমস্যা সম্পর্কে সঠিকভাবে সচেতন ও সক্রিয় হওয়া সম্ভব হয় না। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সহজেই মহকুমাশাসকের পদের গুরুত্ব উপলদ্ধি করতে পারি। ব্রিটিশ যুগে মহকুমাশাসকগণ ছিলেন জেলা আধিকারিকের যথার্থ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। অন্যদিকে জেলা আধিকারিকগণও মহকুমাশাসকদের মানসিক শক্তি বৃদ্ধিতে নানাভাবে সাহায্য করতেন। বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে তারা মহকুমাশাসকদের কঠোর নির্দেশিকা (Guidance) দিতেন। বর্তমানে অবশ্য এই সম্পর্কের মূল ধারাটি অপরিবর্তিত আছে। একটি মহকুমার অন্তর্গত বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে কর্মরত আধিকারিকদের সম্বন্ধে মূল্যায়ন প্রতিবেদন বা রিপাের্ট লেখার কাজটি জেলাশাসকই করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে জেলাশাসক মহকুমাশাসকের নিকট থেকে প্রয়ােজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। মহকুমাশাসককে নানাবিধ ক্ষেত্রে ব্যয়নির্বাহের জন্য জেলাশাসকের ওপর নির্ভর করতে হয়। অনুরূপভাবে জেলাশাসকরাও ক্ষেত্রবিশেষে মহকুমাশাসককে সাহায্য প্রদানের ব্যাপারে উদার মনােভাব গ্রহণ করেন।
প্রশ্ন ১০) ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের দায়িত্ব সংক্ষেপে আলােচনা করাে।
উত্তর: জেলা প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ব্লক। প্রশাসনিক দিক থেকে ব্লকের গুরুত্ব জেলা প্রশাসনে সর্বাধিক। ভারতের স্বাধীনতার পর ব্লকের আবির্ভাব ঘটে। ব্লকগুলি গঠিত হয় কয়েকটি গ্রাম নিয়ে। সাধারণভাবে প্রায় ১০০টি গ্রাম নিয়ে এক একটি ব্লক গড়ে ওঠে। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কয়েকটি ব্লক নিয়ে একটি থানা গড়ে উঠেছে।
রাজ্য জনকৃত্যকের সদস্যদের মধ্যে থেকে বি.ডি.ও. নিযুক্ত হন। একজন সাব-ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বা সাব-ডেপুটি কালেক্টরের সমতুল মর্যাদার অধিকারী তিনি। তিনি ব্লক এলাকার মুখ্য প্রশাসক। তিনি ব্লকের উন্নয়নে উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করেন এবং সমগ্র উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপায়ণে প্রধান দায়িত্ব পালন করেন। উন্নয়নমূলক কাজে তাকে গ্রামসেবক, গ্রামসেবিকা এবং গ্রামস্তরের কর্মীরা সহায়তা করেন। ব্লকের বিভিন্ন ধরনের সম্প্রসারণ আধিকারিকের (Extension Officers, E. O.) কাজের সমন্বয়সাধন করা বি. ডি. ও.র প্রধান কাজ। ব্লকের বিভিন্ন প্রযুক্তি বিভাগ, বিভিন্ন শ্রেণির কর্মীর কাজের তত্ত্বাবধান করা, স্বাস্থ্য ও সমবায়ের বিশেষজ্ঞ কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রের স্থান নির্ধারণ, অধীনস্থ কর্মীদের সম্পর্কে বাৎসরিক রিপাের্ট পেশ প্রভৃতি বি.ডি.ও.-র দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
উত্তর: জেলা প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ব্লক। প্রশাসনিক দিক থেকে ব্লকের গুরুত্ব জেলা প্রশাসনে সর্বাধিক। ভারতের স্বাধীনতার পর ব্লকের আবির্ভাব ঘটে। ব্লকগুলি গঠিত হয় কয়েকটি গ্রাম নিয়ে। সাধারণভাবে প্রায় ১০০টি গ্রাম নিয়ে এক একটি ব্লক গড়ে ওঠে। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কয়েকটি ব্লক নিয়ে একটি থানা গড়ে উঠেছে।
রাজ্য জনকৃত্যকের সদস্যদের মধ্যে থেকে বি.ডি.ও. নিযুক্ত হন। একজন সাব-ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বা সাব-ডেপুটি কালেক্টরের সমতুল মর্যাদার অধিকারী তিনি। তিনি ব্লক এলাকার মুখ্য প্রশাসক। তিনি ব্লকের উন্নয়নে উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করেন এবং সমগ্র উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপায়ণে প্রধান দায়িত্ব পালন করেন। উন্নয়নমূলক কাজে তাকে গ্রামসেবক, গ্রামসেবিকা এবং গ্রামস্তরের কর্মীরা সহায়তা করেন। ব্লকের বিভিন্ন ধরনের সম্প্রসারণ আধিকারিকের (Extension Officers, E. O.) কাজের সমন্বয়সাধন করা বি. ডি. ও.র প্রধান কাজ। ব্লকের বিভিন্ন প্রযুক্তি বিভাগ, বিভিন্ন শ্রেণির কর্মীর কাজের তত্ত্বাবধান করা, স্বাস্থ্য ও সমবায়ের বিশেষজ্ঞ কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রের স্থান নির্ধারণ, অধীনস্থ কর্মীদের সম্পর্কে বাৎসরিক রিপাের্ট পেশ প্রভৃতি বি.ডি.ও.-র দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
প্রশ্ন ১১) রাজ্য সচিবালয়ের কার্যাবলি বর্ণনা করাে।
উত্তর: রাজ্য সচিবালয়ের কাজ (Functions) রাজ্য সচিবালয় সরকারের সাধারণ কর্মসূচি নির্ধারণ করে। এই কর্মসূচি রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সালিত ও কার্যকর হয়। স্বভাবতই বিভিন্ন স্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকগণ এই কাজগুলি সম্পন্ন করেন।
রাজ্য সচিবালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল বাজেট প্রস্তুত করা। বলা বাহুল্য রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তরের সঙ্গে পরামর্শ করে এই কাজটি করা হয়। এই বাজেট অর্থমন্ত্রী বিধানসভায় উপস্থাপিত করেন।
রাজ্য সচিবালয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। এইসব বাস্তবায়নের জন্য কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে কী শর্তে ঋণ বা অনুদান দেওয়া হবে তা স্থির করার দায়িত্ব সচিবালয়কে গ্রহণ করতে হয়। এইসব পরিকল্পনার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও পর্যালােচনা করে সচিবালয়।
বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের নিয়ােগ এবং তাদের বেতন, ছুটি ও অন্যান্য চাকুরি সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব সচিবালয়কে দিতে হয়। সচিবালয় সকল প্রকার প্রস্তাবিত আইনের রূপরেখা ও বিষয়বস্তু চূড়ান্তভাবে থির করে। আইনসভায় উত্থাপিত নানাবিধ প্রশ্নের উত্তর সচিবালয় তৈরি করে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং অন্যান্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মাঝে মাঝে যে-সকল সভা, সম্মেলন, কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় তাতে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিনিধি মনােনয়নের কাজটি সচিবালয়কে করতে হয়।
বস্তুত সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সচিবালয়ের অধিকারের ক্ষেত্র ক্রমশ বর্ধিত হয়ে চলেছে। অনেক নতুন নতুন বিষয় ও সমস্যার উদ্ভবের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য সচিবালয়ের দায়িত্ব স্বভাবতই সম্প্রসারিত হয়েছে। সাম্প্রতিককালে বিশ্বায়ন বা বেসরকারিকরণের সূত্রে রাজ্যসরকারগুলিকে নানাবিধ সুযােগসুবিধা প্রদান ও পরিকাঠামাে নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। তাই সচিবালয়ের গুরুত্ব সেই অনুপাতে বৃদ্ধি পেয়েছে।
উত্তর: রাজ্য সচিবালয়ের কাজ (Functions) রাজ্য সচিবালয় সরকারের সাধারণ কর্মসূচি নির্ধারণ করে। এই কর্মসূচি রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সালিত ও কার্যকর হয়। স্বভাবতই বিভিন্ন স্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকগণ এই কাজগুলি সম্পন্ন করেন।
রাজ্য সচিবালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল বাজেট প্রস্তুত করা। বলা বাহুল্য রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তরের সঙ্গে পরামর্শ করে এই কাজটি করা হয়। এই বাজেট অর্থমন্ত্রী বিধানসভায় উপস্থাপিত করেন।
রাজ্য সচিবালয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। এইসব বাস্তবায়নের জন্য কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে কী শর্তে ঋণ বা অনুদান দেওয়া হবে তা স্থির করার দায়িত্ব সচিবালয়কে গ্রহণ করতে হয়। এইসব পরিকল্পনার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও পর্যালােচনা করে সচিবালয়।
বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের নিয়ােগ এবং তাদের বেতন, ছুটি ও অন্যান্য চাকুরি সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব সচিবালয়কে দিতে হয়। সচিবালয় সকল প্রকার প্রস্তাবিত আইনের রূপরেখা ও বিষয়বস্তু চূড়ান্তভাবে থির করে। আইনসভায় উত্থাপিত নানাবিধ প্রশ্নের উত্তর সচিবালয় তৈরি করে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং অন্যান্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মাঝে মাঝে যে-সকল সভা, সম্মেলন, কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় তাতে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিনিধি মনােনয়নের কাজটি সচিবালয়কে করতে হয়।
বস্তুত সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সচিবালয়ের অধিকারের ক্ষেত্র ক্রমশ বর্ধিত হয়ে চলেছে। অনেক নতুন নতুন বিষয় ও সমস্যার উদ্ভবের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য সচিবালয়ের দায়িত্ব স্বভাবতই সম্প্রসারিত হয়েছে। সাম্প্রতিককালে বিশ্বায়ন বা বেসরকারিকরণের সূত্রে রাজ্যসরকারগুলিকে নানাবিধ সুযােগসুবিধা প্রদান ও পরিকাঠামাে নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। তাই সচিবালয়ের গুরুত্ব সেই অনুপাতে বৃদ্ধি পেয়েছে।