উঃ
গ্রামীণ সমাজ ও নগর সমাজের পার্থক্য:
১) নগর সমাজ বলতে এমন স্থানকে বোঝানো হয়, যেখানে অধিকাংশ মানুষ অকৃষিজ পেশায় জড়িত এবং আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। অপরদিকে, কৃষিকাজকে কেন্দ্র করে যে মানববসতি গড়ে ওঠে, তা-ই গ্রামীণ সমাজ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
২) গ্রামের মানুষ অর্থনৈতিক দিক থেকে নগরের মানুষের চেয়ে কম সম্পদশালী। নগরের একটি অংশ উচ্চবিত্ত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। বাকি একটি অংশ মধ্যবিত্ত শ্রেণি। কিন্তু গ্রামে এ ধরনের মানুষের সংখ্যা খুবই কম।
নগরে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন দিকে যেমন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, গ্রামীণ জীবনে তা নেই।
৩) নগরজীবন অনেকটা প্রযুক্তিনির্ভর ও উন্নত কিন্তু গ্রামে প্রযুক্তির ব্যবহার কম।
৪) প্রথাগত সম্পর্কই গ্রামীণ সমাজের ভিত্তি। অন্যদিকে, নগর মানুষের মধ্যে মূলত যৌক্তিক সম্পর্ক বিদ্যমান।
৫) গ্রামে ঐতিহ্যবাহী যৌথ পরিবার দেখা গেলেও শহরে এ ধরনের পরিবারের পরিবর্তে অণু পরিবার দেখা যায়।
৬) গ্রামে বিবাহবিচ্ছেদ কম হলেও শহরে বিবাহবিচ্ছেদের হার বেশি।
৭) গ্রামের মানুষ নগরের মানুষের তুলনায় ধর্মপ্রাণ হয়ে থাকে। অর্থাৎ, গ্রামীণ জীবনে ধর্মের প্রভাব অত্যধিক। কিন্তু নগরজীবনে এর প্রভাব কম।
৮) গ্ৰামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কিন্তু শহরে বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিমালিকানাধীন বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আধিক্য রয়েছে।
সার্বিকভাবে বললে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, ঘরবাড়ি, আসবাব, চিত্ত-বিনোদন প্রভৃতি ক্ষেত্রেও গ্রাম ও নগর জীবনে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।