উঃ
নগর সমাজ: কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলে বিভিন্ন ভাষাভাষী ও নানা বৃত্তির মানুষ যখন পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে একত্রে বসবাস করি এবং সেই অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য, নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে, শিক্ষা সংস্কৃতির প্রসার ঘটে ও জনবসতির বিস্তার ঘটে তখন সেটিকে বলা হয় নগর সমাজ।
ভারতীয় নগর সমাজে মিউনিসিপ্যালিটির ভূমিকা: ভারতে কয়েকটি ছোট নগরে স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যালিটির দ্বারা পরিচালিত হয়। শহরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের স্থানীয় সমস্যা সমাধানে পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যালিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক মাধ্যম। নিম্নে এর কার্যাবলি বর্ণনা করা হলো---
বাধ্যতামূলক কার্যাবলী: পশ্চিমবঙ্গে প্রতিটি পৌরসভার বাধ্যতামূলক আজ হলো প্রশাসনিক উন্নয়নমূলক জনস্বার্থমূলক এবং জনকল্যাণমূলক। পৌরসভার বাধ্যতামূলক কাজের তালিকায় 49 টি বিষয়ে আছে। যেমন-- রাস্তায় আলো লাগানো, জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, পার্ক ও উদ্যান গড়ে তোলা, বৃক্ষরোপণ, বস্তি অঞ্চলের রাস্তা সংস্কার, ব্যাধি প্রতিরোধ, জন্ম-মৃত্যুর হিসাব রক্ষা, ঐতিহাসিক ক্ষেত্র সংরক্ষণ ইত্যাদি।
স্বেচ্ছাধীন কার্যাবলী: পৌরসভার স্বেচ্ছাধীন কাজের তালিকায় অন্যতম বিষয় হলো --- পানীয় জল সরবরাহ, রাস্তাঘাট নির্মাণ, দাতব্য চিকিৎসালয়, প্রতিষ্ঠান সংরক্ষণ, শিশু কল্যাণে ব্যবস্থা গ্রহণ, খাদ্য ও ঔষধ বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ, পাঠাগার স্থাপন, সামাজিক শিক্ষার প্রসার, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়ন ইত্যাদি।
অর্পিত কার্যাবলী: রাজ্য সরকার কিছু কাজ কর্মের দায়িত্ব পৌরসভাকে দিতে পারে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-- স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, অসামরিক প্রতিরক্ষা, খাদ্যসামগ্রী নিয়ন্ত্রণ, যুব কল্যাণ ইত্যাদি।
উপরোক্ত কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য প্রতিটি পৌরসভায় প্রচুর অর্থের দরকার হয়। এই অর্থ নানা উপায়ে সংগৃহীত হয়। আয়ের মূল উৎস কর। জমি ও বাড়ির উপর ধার্য কর, জল সরবরাহ এবং পথঘাট আলোকিত করার ধার্য কর, যানবাহনের উপর ধার্য কর, বৃত্তি ও পেশার উপর আরোপিত কর ইত্যাদি। এছাড়া পৌরসভা রাজ্য সরকার থেকে ঋণ পেয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, পশ্চিমবঙ্গে প্রত্যেক পৌরসভাকে অজস্র দায়িত্ব পালন করতে হয়।