বিভিন্ন বৌদ্ধ ও জৈন গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে এই সময় উত্তর ভারত ১৬ টি রাজ্যে বিভক্ত ছিল এবং এদেরকে একত্রে বলা হতো ষোড়শ মহাজনপদ।
ষোলোটি মহাজনপদের অধিকাংশই ছিল বিহার উত্তরপ্রদেশ,ও মধ্য ভারতে। কিছু প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অস্তিত্বও লক্ষ্য করা যায়।
বৃজি ও মল্ল ছিল গণরাজ্য। অবন্তী,বৎস,কোশল,মগধ বেশ শক্তিশালী ছিল।
আর্যাবর্তে প্রাধান্য স্থাপনের জন্য এদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত মগধের সাফল্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার অবসান ঘটে।
Short Question-Answer on 16 Mahajanapada (ষোড়শ মহাজনপদ)
ষােড়শ মহাজনপদের আবির্ভাব হয় কোন সময়ে ?উঃ খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ষােড়শ মহাজনপদের আবির্ভাব হয়।
জৈন ধর্ম (Jainism)
তীর্থংকর কথার অর্থ কী?উঃ তীর্থংকর কথার অর্থ জৈনদের প্রধান ধর্মগুরু।
পার্শ্বনাথ কে ছিলেন?উঃ পার্শ্বনাথ ছিলেন জৈনদের তেইশতম তীর্থংকর।
জৈন ধর্মের উৎপত্তির সময় থেকে মহাবীর পর্যন্ত কতজন প্রচারক বা তীর্থংকর ছিলেন ?উঃ জৈন ধর্মের উৎপত্তির সময় থেকে মহাবীর পর্যন্ত সর্বমােট চব্বিশ জন তীর্থংকর ছিলেন।
সর্বপ্রথম তীর্থংকরের নাম কী ?উঃ জৈনদের সর্বপ্রথম তীর্থংকরের নাম ঋষভনাথ।
শেষ জৈন তীর্থংকরের নাম কী ?উঃ শেষ জৈন তীর্থংকরের নাম মহাবীর (চব্বিশতম তীর্থংকর)।
মহাবীরের পিতৃদত্ত নাম কী ?উঃ মহাবীরের পিতৃদত্ত নাম বর্ধমান।
মহাবীর কখন জন্মগ্রহণ করেন?উঃ মহাবীর সম্ভবত ৫৪০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
মহাবীর কোথায় জন্মগ্রহণ করেন ?উঃ মহাবীর বৈশালীর কাছে কুন্দহর গ্রামে (বর্তমান বৈশালী জেলার বসার গ্রামে) জন্মগ্রহণ করেন।
মহাবীরের পিতা ও মাতার নাম কী ?উঃ মহাবীরের পিতার নাম সিদ্ধার্থ ও মাতার নাম ত্রিশলা।
মহাবীর কোথায় চরম জ্ঞান লাভ করেন ?উঃ মহাবীর পরেশনাথ পাহাড়ের নিকটবর্তী জুম্ভিক গ্রামের উপকণ্ঠে ঋজুপালিকা নদীর তীরে চরম জ্ঞান লাভ করে জিন বা জিতেন্দ্রিয় হন।
মহাবীরের কখন, কোথায় মৃত্যু হয়?উঃ ৪৬৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ৭২ বছর বয়সে রাজগৃহের কাছে পাবা নগরীতে মহাবীরের মৃত্যু হয়।
জৈনদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম কী ?উঃ জৈনদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম দ্বাদশ অঙ্গ।
জৈনদের আদি শাস্ত্রগ্রন্থ কোনটি?উঃ জৈনদের আদি শাস্ত্রগ্রন্থের নাম কল্পসূত্র।
জৈনধর্মের দুটি অনুসরণীয় পন্থা কী ?উঃ জৈনধর্মের দুটি অনুসরণীয় পন্থা হল শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর।
কারা দিগম্বর জৈন নামে পরিচিত?উঃ মহাবীরের অনুশাসন মেনে যে সকল শিষ্যরা বস্ত্র ত্যাগের পক্ষপাতী, তারা দিগম্বর জৈন নামে পরিচিত।
কারা ‘শ্বেতাম্বর’ জৈন নামে পরিচিত ?উঃ পার্শ্বনাথের অনুশাসন মেনে যে সকল জৈনরা শ্বেত পরিচ্ছদে অঙ্গা আবরণের পক্ষপাতী, তারা শ্বেতাম্বর জৈন নামে পরিচিত।
প্রথম জৈন সংগীতি কোথায়, কার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়?উঃ পাটলিপুত্রে স্থূলভদ্রের নেতৃত্বে প্রথম জৈন সংগীতি অনুষ্ঠিত হয়।
ত্রিরত্ন কী ?উঃ মহাবীরের মতে সত্য বিশ্বাস, সত্য জ্ঞান ও সত্য আচরণ পালনের নীতি ত্রিরত্ন নামে পরিচিত।
নিগ্রন্থ কী?উঃ চিরতরে বস্ত্র ত্যাগ করে গ্রন্থিহীন বা সংসার বন্ধনহীন হওয়াকে নিগ্রন্থ বলে।
জৈন সিদ্ধান্তের কয়টি ভাগ, কী কী ?উঃ জৈন সিদ্ধান্তের চারটি ভাগ ও অঙ্গ, উপাঙ্গ, মূল ও সূত্র।
মহাবীরের স্ত্রী ও কন্যার নাম কী ?উঃ মহাবীরের স্ত্রীর নাম যশােদা ও কন্যার নাম প্রিয়দর্শনা।
চতুর্যাম কী ?উঃ মহাবীর যে ধর্মমত প্রচার করেন তার মূল ভিত্তি ছিল পার্শ্বনাথ প্রবর্তিত চারটি নাতি (১) অহিংসা, (২) সত্য, (৩) অচৌর্য ও (৪) অপরিগ্রহ। এই নীতিগুলিকে চতুর্যাম বলা হয়।
পঞ মহাব্রত কী ?উঃ মহাবীর চতুর্যামের সঙ্গে আর একটি নীতি ‘ব্রহ্মচর্য’ যুক্ত করেন। এই পাঁচটি নীতি পঞ্চ মহাব্রত নামে পরিচিত।
সিদ্ধশিলা কী ?উঃ সিদ্ধশিলা হল পরম শুদ্ধ আনন্দ বা আত্মার মুক্তি, ত্রিরত্নের সাহায্যে তা লাভ করা যায়।
জৈন ধর্মের পৃষ্ঠপােষক দুজন সম্রাটের নাম করাে।উঃ জৈন ধর্মের পৃষ্ঠপােষক ছিলেন মগধরাজ অজাতশত্র ও চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
বুদ্ধদেব কখন জন্মগ্রহণ করেন?উঃ অধিকাংশ ঐতিহাসিকদের মতে বুদ্ধদেব ৫৬৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
বুদ্ধদেব কোথায় জন্মগ্রহণ করেন ?উঃ বুদ্ধদেব নেপালের কপিলাবস্তু রাজ্যের লুম্বিনী উদ্যানে জন্মগ্রহণ করেন।
বুদ্ধদেব কোথায় মহাজ্ঞান লাভ করেন ?উঃ বুদ্ধদেব নিরঞ্জনা নদীর তীরে গয়ার নিকটে উরুবিল্ব নামক স্থানে মহাজ্ঞান লাভ করেন।
বুদ্ধদেবের পিতা ও মাতার নাম কী ?উঃ বুদ্ধদেবের পিতার নাম শুদ্ধোদন ও মাতার নাম মায়াদেবী।
বুদ্ধদেব কোন্ বংশে জন্মগ্রহণ করেন?উঃ বুদ্ধদেব কপিলাবস্তুর শাক্য রাজবংশে জন্মগ্রহণ করেন।
‘বুদ্ধ’ কথার অর্থ কী ?উঃ বুদ্ধ কথার অর্থ মহাজ্ঞানী।
বুদ্ধদেব কোথায় প্রথম ধর্মপ্রচার করেন ?উঃ বুদ্ধদেব বারাণসীর সারনাথের নিকটবর্তী মৃগদাভ অরণ্যে প্রথম ধর্মপ্রচার করেন।
বুদ্ধদেবের কোথায় নির্বাণ ঘটে ?উঃ বর্তমান উত্তরপ্রদেশের বস্তি জেলার কুশীনগরে বুদ্ধদেবের নির্বাণ ঘটে (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪৮৬ অব্দে)।
বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম কী ?উঃ বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম ত্রিপিটক।
ত্রিপিটকের কয়টি ভাগ, কী কী ?উঃ ত্রিপিটকের তিনটি ভাগ, যথাক্রমে অভিধম্ম পিটক, বিনয় পিটক ও সুত্ত পিটক।
‘ত্রিপিটক’ কোন ভাষায় রচিত ?উঃ ত্রিপিটক পালি ভাষায় রচিত।
প্রতিবাদী ধর্মের সংখ্যা কত?উঃ বৌদ্ধগ্রন্থ অনুসারে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে তেষট্টিটি প্রতিবাদী ধর্মের উত্থান হয়।
বুদ্ধদেবের স্ত্রী ও পুত্রের নাম কী ?উঃ বুদ্ধদেবের স্ত্রীর নাম গােপা (মতান্তরে যশােধরা) ও পুত্রের নাম রাহুল।
পঞশীল কী ?উঃ বুদ্ধদেবের নৈতিক উপদেশমূলক পাঁচটি শীল বা নীতি—হিংসা, পরস্বাপহরণ, ব্যভিচার, মিথ্যাভাষণ ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা—যা পঞশীল নামে পরিচিত।
প্রথম বৌদ্ধ সম্মেলন কোথায়, কার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় ?উঃ প্রথম বৌদ্ধ সম্মেলন বুদ্ধদেবের অন্যতম শিষ্য মহাকাশ্যপের নেতৃত্বে রাজগৃহে অনুষ্ঠিত হয়।
বৌদ্ধ ধর্মের তিনটি স্তম্ভ কী কী ?উঃ বৌদ্ধ ধর্মের তিনটি স্তম্ভ হল—বুদ্ধ, ধর্ম ও সংঘ। বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি, ধর্মং শরণং গচ্ছামি, সংঘং শরণং গচ্ছামি ।
বুদ্ধদেবের প্রথম পাঁচজন শিষ্য (বৌদ্ধ ভিক্ষু)-এর নাম কী ?উঃ বুদ্ধদেবের প্রথম পাঁচজন শিষ্যের নাম হল : কোভিন্য, ভদ্রিক, অশ্বজিৎ, বাষ্প ও মহানাম।
বুদ্ধদেবের দুজন শিষ্যের নাম করাে।উঃ বুদ্ধদেবের দুজন শিষ্য হলেন কোশলরাজ প্রসেনজিৎ ও অনাথপিণ্ড।
বুদ্ধদেবের বিখ্যাত আশ্রমের নাম কী ?উঃ জেতবন বিহার হল বুদ্ধদেবের বিখ্যাত আশ্রম।
মহাভিনিষ্ক্রমণ কী?উঃ বিবাহ ও সন্তান লাভের পর সিদ্ধার্থ বা গৌতম সংসারের মায়ার বন্ধন ছিন্ন করে এক গভীর নিশীথে গৃহত্যাগ করেন। বৌদ্ধশাস্ত্রে এই ঘটনা মহাভিনিষ্ক্রমণ নামে খ্যাত।
বুদ্ধদেবের জীবনী ও ধর্ম সম্পর্কিত কয়েকটি গ্রন্থের নাম করাে।উঃ বুদ্ধদেবের জীবনী ও ধর্ম সম্পর্কে কয়েকটি উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ হল : ‘ত্রিপিটক’, ‘জাতককাহিনী’, ‘দীপবংশ’, ‘মহাবংশ’ এবং অশ্বঘােষ রচিত ‘বুদ্ধচরিত’।
জাতক কী ?উঃ বুদ্ধদেবের পূর্বজন্মের কাহিনী-সংবলিত গ্রন্থের নাম জাতক।
বৌদ্ধধর্মের প্রধান দুটি সম্প্রদায় কী কী ?উঃ ‘হীনযান’ ও ‘মহাযান’ হল বৌদ্ধধর্মের প্রধান দুটি সম্প্রদায়
আজীবিক ধর্ম (Ajivikas)
আজীবিক ধর্ম কী ? উঃ প্রতিবাদী ধর্ম আন্দোলনের নাস্তিক পথ হল আজীবিক ধর্ম।
আজীবিক ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা কে ?উঃ আজীবিক ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মাখালি গােসল (Makhali Gosala)।
চার্বাক পন্থা কী ?উঃ ভারতীয় দর্শনের নাস্তিক পন্থার একটি শাখার নাম চার্বাক পন্থা। এই পন্থায় আত্মার সুখের জন্য ঋণ করেও ঘি খেতে বলা হয়।