রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ও সংসদীয় সরকারের প্রকৃতি
প্রশ্ন ১) রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে আলােচনা করাে।
উত্তর : রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থা হল এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে রাষ্ট্রপতি দেশের প্রকৃত শাসক এবং যেখানে শাসনবিভাগ (রাষ্ট্রপ্রধান ও তার মন্ত্রীপরিষদ) তাদের কাজের জন্য আইনসভার কাছে দায়ী থাকে না।
বৈশিষ্ট্য : অধ্যাপক গার্নার রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থার যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা বিশ্লেষণ করলে আমরা তার নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি দেখতে পাই-
প্রথমত, এই শাসনব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল—এখানে রাষ্ট্রপতি শাসন বিভাগে চরম ক্ষমতার অধিকারী।
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপতি চালিত শাসনব্যবস্থার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল—এখানে শাসন বিভাগ আইন বিভাগের কাছে দায়ী থাকে না। আইন বিভাগও অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে শাসন বিভাগকে অপসারিত করতে পারে না।
তৃতীয়ত, এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকৃত। সরকারের তিনটি বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করে। আইন বিভাগের সদস্যরা শাসন বিভাগের সদস্য নয়। শাসন বিভাগের সদস্যরা আইনসভার কাজে যােগ দিতে পারে না। আবার শাসন বিভাগ আইনসভাকে ভেঙে দিতে পারে না। আইনসভাও অনাস্থা প্রস্তাব এনে শাসন বিভাগকে সরাতে পারে না।
চতুর্থত, রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল—এখানে মন্ত্রীসভার বিশেষ মর্যাদা নেই। মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতির সহকর্মী নন।
পঞ্চমত, এই শাসনব্যবস্থার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল—এখানে রাষ্ট্রপতি যে দলের সদস্য সেই দলের আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নাও থাকতে পারে। কারণ, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ও আইনসভার নির্বাচন পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
ষষ্ঠত, এই শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল—এখানে রাষ্ট্রপতি ইচ্ছা করলে অন্য দলের কাউকে নিজের মন্ত্রীসভায় আনতে পারেন। যেমন, মার্কিন রাষ্ট্রপতি কেনেডি অন্য দলের দুজনকে নিজের মন্ত্রীসভায় স্থান দিয়েছিলেন।
বৈশিষ্ট্য : অধ্যাপক গার্নার রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থার যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা বিশ্লেষণ করলে আমরা তার নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি দেখতে পাই-
প্রথমত, এই শাসনব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল—এখানে রাষ্ট্রপতি শাসন বিভাগে চরম ক্ষমতার অধিকারী।
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপতি চালিত শাসনব্যবস্থার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল—এখানে শাসন বিভাগ আইন বিভাগের কাছে দায়ী থাকে না। আইন বিভাগও অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে শাসন বিভাগকে অপসারিত করতে পারে না।
তৃতীয়ত, এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকৃত। সরকারের তিনটি বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করে। আইন বিভাগের সদস্যরা শাসন বিভাগের সদস্য নয়। শাসন বিভাগের সদস্যরা আইনসভার কাজে যােগ দিতে পারে না। আবার শাসন বিভাগ আইনসভাকে ভেঙে দিতে পারে না। আইনসভাও অনাস্থা প্রস্তাব এনে শাসন বিভাগকে সরাতে পারে না।
চতুর্থত, রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল—এখানে মন্ত্রীসভার বিশেষ মর্যাদা নেই। মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতির সহকর্মী নন।
পঞ্চমত, এই শাসনব্যবস্থার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল—এখানে রাষ্ট্রপতি যে দলের সদস্য সেই দলের আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নাও থাকতে পারে। কারণ, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ও আইনসভার নির্বাচন পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
ষষ্ঠত, এই শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল—এখানে রাষ্ট্রপতি ইচ্ছা করলে অন্য দলের কাউকে নিজের মন্ত্রীসভায় আনতে পারেন। যেমন, মার্কিন রাষ্ট্রপতি কেনেডি অন্য দলের দুজনকে নিজের মন্ত্রীসভায় স্থান দিয়েছিলেন।
প্রশ্ন ২) রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থায় কী কী সুবিধা আছে।
উত্তর : যে শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী এবং যেখানে শাসন বিভাগ তার কাজের জন্য আইন বিভাগের কাছে জবাবদিহি করতে হয় না, তাকে রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থা বলে। এই শাসনব্যবস্থার কয়েকটি সুবিধা নিম্নে আলােচনা করা হল :
(i) এই শাসনব্যবস্থা স্থায়ী হয়। কারণ রাষ্ট্রপতি নির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় থাকেন। অনাস্থার মাধ্যমে তাঁকে সরানাে যায় না। তাই তাঁর পক্ষে শাসনকার্যে মনােনিবেশ করা ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব।
(ii) এই শাসন জরুরি অবস্থার পক্ষে বিশেষ উপযােগী। রাষ্ট্রপতি এককভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মন্ত্রীসভার সঙ্গে আলােচনা করা তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
(ii) এখানে ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি থাকায় শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। ফলে উভয়ের মধ্যে বিরােধের সম্ভাবনা কম থাকে। প্রতিটি বিভাগ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে।
(iv) যে দেশে বহুদলীয় ব্যবস্থা আছে, সেখানে রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থা কাম্য। কারণ, বহু দল থাকলে অনেক সময় একটি দলের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সম্ভব হয় না। তখন কয়েকটি দল নিয়ে ফ্রন্ট সরকার গড়তে হয়। তাতে সরকার ক্ষণস্থায়ী ও দুর্বল হয়।
(v) রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির মন্ত্রী নির্বাচনে অনেক স্বাধীনতা থাকে বলে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়ােগ করতে পারেন। এমনকি বিরােধী দলে দক্ষ লােক থাকলে তাকেও আনতে পারেন।
(i) এই শাসনব্যবস্থা স্থায়ী হয়। কারণ রাষ্ট্রপতি নির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় থাকেন। অনাস্থার মাধ্যমে তাঁকে সরানাে যায় না। তাই তাঁর পক্ষে শাসনকার্যে মনােনিবেশ করা ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব।
(ii) এই শাসন জরুরি অবস্থার পক্ষে বিশেষ উপযােগী। রাষ্ট্রপতি এককভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মন্ত্রীসভার সঙ্গে আলােচনা করা তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
(ii) এখানে ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি থাকায় শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। ফলে উভয়ের মধ্যে বিরােধের সম্ভাবনা কম থাকে। প্রতিটি বিভাগ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে।
(iv) যে দেশে বহুদলীয় ব্যবস্থা আছে, সেখানে রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থা কাম্য। কারণ, বহু দল থাকলে অনেক সময় একটি দলের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সম্ভব হয় না। তখন কয়েকটি দল নিয়ে ফ্রন্ট সরকার গড়তে হয়। তাতে সরকার ক্ষণস্থায়ী ও দুর্বল হয়।
(v) রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির মন্ত্রী নির্বাচনে অনেক স্বাধীনতা থাকে বলে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়ােগ করতে পারেন। এমনকি বিরােধী দলে দক্ষ লােক থাকলে তাকেও আনতে পারেন।
প্রশ্ন ৩) রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থার অসুবিধাগুলি আলােচনা করাে।
উত্তর : (i) স্বৈরাচারিতার সম্ভাবনা : রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির হাতে প্রভৃত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকে এবং তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনাে ক্ষমতা আইন বিভাগের থাকে না। ফলে রাষ্ট্রপতি স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারেন। (“The executive can turn into Autocrat.”)
(ii) ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির কুফল : ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত বলে এরূপ শাসনব্যবস্থায় সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে সহযােগিতার পরিবর্তে সংঘাত দেখা দিতে পারে। ফলে শাসনকার্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
(iii) দায়িত্বের অবস্থান নির্ণয় কঠিন : রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থায় বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা থাকার ফলে আইন প্রণয়নের দায়িত্ব বিভিন্ন কমিটির মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। দায়িত্ব বিভক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে আইন প্রণয়নের জন্য কে দায়ী তা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে ওঠে।
(iv) বিচার বিভাগের প্রাধান্য বৃদ্ধি : এরূপ শাসনব্যবস্থায় আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের ক্ষমতার সীমা নির্ধারণ করার এবং উভয় বিভাগের মধ্যে বিরােধের নিষ্পত্তি করার দায়িত্ব বিচার বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকে। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিচারবিভাগ আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের ওপর নিজ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
(v) জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী : এরূপ শাসনব্যবস্থায় কমিটি ব্যবস্থার মাধ্যমে আইন প্রণীত হয়। কমিটিগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জাতীয় স্বার্থ অপেক্ষা আঞ্চলিক স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। ফলে জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ।
এই সমস্ত ত্রুটিবিচ্যুতি সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত দুশাে বছরের বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে চলেছে। বৈচিত্র্যপূর্ণ ও বহুদলীয় রাষ্ট্রের পক্ষে এই শাসনব্যবস্থা বিশেষ উপযােগী।
(ii) ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির কুফল : ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত বলে এরূপ শাসনব্যবস্থায় সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে সহযােগিতার পরিবর্তে সংঘাত দেখা দিতে পারে। ফলে শাসনকার্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
(iii) দায়িত্বের অবস্থান নির্ণয় কঠিন : রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থায় বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা থাকার ফলে আইন প্রণয়নের দায়িত্ব বিভিন্ন কমিটির মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। দায়িত্ব বিভক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে আইন প্রণয়নের জন্য কে দায়ী তা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে ওঠে।
(iv) বিচার বিভাগের প্রাধান্য বৃদ্ধি : এরূপ শাসনব্যবস্থায় আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের ক্ষমতার সীমা নির্ধারণ করার এবং উভয় বিভাগের মধ্যে বিরােধের নিষ্পত্তি করার দায়িত্ব বিচার বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকে। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিচারবিভাগ আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের ওপর নিজ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
(v) জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী : এরূপ শাসনব্যবস্থায় কমিটি ব্যবস্থার মাধ্যমে আইন প্রণীত হয়। কমিটিগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জাতীয় স্বার্থ অপেক্ষা আঞ্চলিক স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। ফলে জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ।
এই সমস্ত ত্রুটিবিচ্যুতি সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত দুশাে বছরের বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রপতিচালিত শাসনব্যবস্থা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে চলেছে। বৈচিত্র্যপূর্ণ ও বহুদলীয় রাষ্ট্রের পক্ষে এই শাসনব্যবস্থা বিশেষ উপযােগী।
প্রশ্ন ৪) মন্ত্রীপরিষদচালিত (সংসদীয়) শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করাে।
উত্তর : যে শাসনব্যবস্থায় একজন নামসর্বস্ব বা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান থাকে এবং যেখানে মন্ত্রীসভা প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী ও তারা তাদের কাজের জন্য আইনসভার কাছে দায়ী থাকে, তাকে বলে মন্ত্রীপরিষদ চালিত বা সংসদীয় শাসনব্যবস্থা। এই সংজ্ঞার আলােকে এই শাসনব্যবস্থার নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করা যায় :
(i) নামসর্বস্ব রাষ্ট্রপ্রধান : এই শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হল —এখানে একজন নামসর্বস্ব বা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান থাকেন। তাঁর নামে সমস্ত ক্ষমতা প্রয়ােগ করা হয়। অথচ তাঁর প্রকৃত ক্ষমতা নেই। মন্ত্রীপরিষদ হল প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী। যেমন, ব্রিটেনের রানি নামসর্বস্ব শাসক প্রধান। মন্ত্রীসভার পরামর্শে তাঁকে চলতে হয়।
(ii) দায়িত্বশীলতা : এই শাসনব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল—এখানে মন্ত্রীপরিষদ আইনসভার কাছে দায়িত্বশীল থাকে। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে, তাদের বিরুদ্ধে আইনসভা অনাস্থা এনে তাদের সরিয়ে দিতে পারে।
(iii) যৌথ দায়িত্ব : এখানে মন্ত্রীসভা যৌথভাবে আইনসভার কাছে দায়ী থাকে। যৌথ দায়িত্বের অর্থ হল, মন্ত্রীসভার সকলে দায়ী থাকবে। অর্থাৎ কোনাে একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হলে গােটা মন্ত্রীসভাকে পদত্যাগ করতে হয়।
(i) নামসর্বস্ব রাষ্ট্রপ্রধান : এই শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হল —এখানে একজন নামসর্বস্ব বা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান থাকেন। তাঁর নামে সমস্ত ক্ষমতা প্রয়ােগ করা হয়। অথচ তাঁর প্রকৃত ক্ষমতা নেই। মন্ত্রীপরিষদ হল প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী। যেমন, ব্রিটেনের রানি নামসর্বস্ব শাসক প্রধান। মন্ত্রীসভার পরামর্শে তাঁকে চলতে হয়।
(ii) দায়িত্বশীলতা : এই শাসনব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল—এখানে মন্ত্রীপরিষদ আইনসভার কাছে দায়িত্বশীল থাকে। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে, তাদের বিরুদ্ধে আইনসভা অনাস্থা এনে তাদের সরিয়ে দিতে পারে।
(iii) যৌথ দায়িত্ব : এখানে মন্ত্রীসভা যৌথভাবে আইনসভার কাছে দায়ী থাকে। যৌথ দায়িত্বের অর্থ হল, মন্ত্রীসভার সকলে দায়ী থাকবে। অর্থাৎ কোনাে একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হলে গােটা মন্ত্রীসভাকে পদত্যাগ করতে হয়।
(iv) প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব : প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রীপরিষদ চালিত শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসাবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। তাঁর পরামর্শে অন্যান্য মন্ত্রীগণ নিযুক্ত হন। তিনি তাদের ক্ষমতা ভাগ করে দেন। প্রয়ােজন হলে কোনাে মন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দিতে পারেন।
(v) বিরােধী দলের অস্তিত্ব : এই শাসনব্যবস্থার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল বিরোধী দলের অস্তিত্ব। যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, সেই দল মন্ত্রীসভা গঠন করে। সংখ্যালঘিষ্ট দল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে। তারা সরকারের ত্রুটিগুলি জনসাধারণের কাছে তুলে ধরে সরকারকে সঠিক পথে চলতে বাধ্য করে। সরকারের স্বৈরাচারিতার পথে বাধার সৃষ্টি করে।
(vi) ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অস্বীকৃতি : মন্ত্রীপরিষদচালিত শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকার করা হয় না। আইনসভার সদস্যরা শাসন বিভাগে যায়। শাসন বিভাগের মন্ত্রীরা আইনসভায় গিয়ে বিতর্কে অংশগ্রহণ করে। আইন বিভাগ শাসন বিভাগকে সরিয়ে দিতে পারে। আবার শাসন বিভাগ আইনসভাকে ভেঙে দিতে পারে।
(v) বিরােধী দলের অস্তিত্ব : এই শাসনব্যবস্থার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল বিরোধী দলের অস্তিত্ব। যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, সেই দল মন্ত্রীসভা গঠন করে। সংখ্যালঘিষ্ট দল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে। তারা সরকারের ত্রুটিগুলি জনসাধারণের কাছে তুলে ধরে সরকারকে সঠিক পথে চলতে বাধ্য করে। সরকারের স্বৈরাচারিতার পথে বাধার সৃষ্টি করে।
(vi) ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অস্বীকৃতি : মন্ত্রীপরিষদচালিত শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকার করা হয় না। আইনসভার সদস্যরা শাসন বিভাগে যায়। শাসন বিভাগের মন্ত্রীরা আইনসভায় গিয়ে বিতর্কে অংশগ্রহণ করে। আইন বিভাগ শাসন বিভাগকে সরিয়ে দিতে পারে। আবার শাসন বিভাগ আইনসভাকে ভেঙে দিতে পারে।
প্রশ্ন ৫) মন্ত্রীপরিষদচালিত (সংসদীয়) শাসনব্যবস্থার সুবিধাগুলি আলােচনা করাে।
উত্তর : ব্রিটেন, ভারত প্রভৃতি দেশে মন্ত্রীপরিষদচালিত শাসনব্যবস্থা সাফল্য অর্জন করেছে। তার কারণ, এর কতকগুলি সুবিধা আছে। সেগুলি নিম্নে আলােচিত হল :
(i) অধ্যাপক গার্নার বলেছেন- সুশাসনের জন্যে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা প্রয়ােজন। আইনবিভাগ অর্থ মঞ্জুর করে, শাসন বিভাগ অর্থ ব্যয় করে। সুতরাং দুটির মধ্যে সম্পর্ক না থাকলে, শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে অচল অবস্থা দেখা দেবে। মন্ত্রীপরিষদ চালিত শাসনব্যবস্থায় এই সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
(ii) এই শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীসভা আইনসভার কাছে দায়িত্বশীল থাকে। অর্থাৎ কাজের জবাবদিহি করতে হয়। তাই শাসন বিভাগ স্বৈরাচারী হতে পারে না।
(iii) এই শাসনব্যবস্থায় প্রয়ােজন হলে এক সরকারকে সরিয়ে অন্য সরকারকে ক্ষমতায় বসানাে যায়। যেমন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনে দুর্বল প্রধানমন্ত্রী চেম্বারলেনকে সরিয়ে চার্চিলকে বসানাের ফলে দেশ রক্ষা পেয়েছিল। রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসনব্যবস্থায় তা সম্ভব নয়।
(iv) মন্ত্রীপরিষদচালিত সরকারের আর একটি গুণ হল—এখানে রাজনৈতিক শিক্ষার বেশি সুযােগ আছে। এখানে যে-কোনাে সময় নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকায় রাজনৈতিক দলগুলি সব সময় রাজনৈতিক প্রচারকার্য চালায়। এতে জনসাধারণ রাজনৈতিক শিক্ষার সুযােগ পায়।
(v) এই শাসনব্যবস্থায় রাজতন্ত্রের অভিজ্ঞতার সঙ্গে গণতন্ত্রের সমন্বয়সাধন করা যায়। যেমন, ব্রিটেনে একজন নামসর্বস্ব শাসক প্রধান রাজা বা রানি আছেন। তার অভিজ্ঞতা ও দুর্লভ পরামর্শদানের মাধ্যমে গণতন্ত্র সমৃদ্ধ হয়েছে।
(i) অধ্যাপক গার্নার বলেছেন- সুশাসনের জন্যে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা প্রয়ােজন। আইনবিভাগ অর্থ মঞ্জুর করে, শাসন বিভাগ অর্থ ব্যয় করে। সুতরাং দুটির মধ্যে সম্পর্ক না থাকলে, শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে অচল অবস্থা দেখা দেবে। মন্ত্রীপরিষদ চালিত শাসনব্যবস্থায় এই সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
(ii) এই শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীসভা আইনসভার কাছে দায়িত্বশীল থাকে। অর্থাৎ কাজের জবাবদিহি করতে হয়। তাই শাসন বিভাগ স্বৈরাচারী হতে পারে না।
(iii) এই শাসনব্যবস্থায় প্রয়ােজন হলে এক সরকারকে সরিয়ে অন্য সরকারকে ক্ষমতায় বসানাে যায়। যেমন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনে দুর্বল প্রধানমন্ত্রী চেম্বারলেনকে সরিয়ে চার্চিলকে বসানাের ফলে দেশ রক্ষা পেয়েছিল। রাষ্ট্রপতি পরিচালিত শাসনব্যবস্থায় তা সম্ভব নয়।
(iv) মন্ত্রীপরিষদচালিত সরকারের আর একটি গুণ হল—এখানে রাজনৈতিক শিক্ষার বেশি সুযােগ আছে। এখানে যে-কোনাে সময় নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকায় রাজনৈতিক দলগুলি সব সময় রাজনৈতিক প্রচারকার্য চালায়। এতে জনসাধারণ রাজনৈতিক শিক্ষার সুযােগ পায়।
(v) এই শাসনব্যবস্থায় রাজতন্ত্রের অভিজ্ঞতার সঙ্গে গণতন্ত্রের সমন্বয়সাধন করা যায়। যেমন, ব্রিটেনে একজন নামসর্বস্ব শাসক প্রধান রাজা বা রানি আছেন। তার অভিজ্ঞতা ও দুর্লভ পরামর্শদানের মাধ্যমে গণতন্ত্র সমৃদ্ধ হয়েছে।
প্রশ্ন ৬) মন্ত্রীপরিষদচালিত (সংসদীয়) শাসনব্যবস্থার অসুবিধাগুলি আলােচনা করাে।
উত্তর : বিভিন্ন গুণ থাকলেও এই শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিরূপ সমালােচনা হয়েছে। এগুলি হল :
(i) অনেকে মনে করেন ব্যক্তিস্বাধীনতার বড়াে রক্ষাকবচ হল—ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি। কিন্তু এই শাসনব্যবস্থায় তা নেই। ফলে মন্ত্রীরা আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযােগ নিয়ে ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করতে পারে।
(ii) এই শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীরা বেশি সময় আইনসভার প্রশ্নের উত্তর দিতে এবং তার জন্যে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত থাকে। ফলে শাসনকার্য পরিচালনায় বেশি সময় দিতে পারে।
(iii) দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সরকারের স্থায়িত্বের প্রয়ােজন। কিন্তু মন্ত্রীপরিষদচালিত সরকারের যে-কোনাে সময় পরিবর্তন হয় বলে অনেক পরিকল্পনা মাঝপথে পরিত্যক্ত হয়। ভারত তার সবথেকে বড় উদাহরণ।
(iv) এই শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীপরিষদের সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐক্য মতে পৌঁছানাে যায় না। ফলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না। বিশেষ করে পাঁচমিশেলি সরকার হলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না।
(v) দলীয় ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে মন্ত্রীপরিষদচালিত সরকার গড়ে ওঠে। তাই সরকারি ক্ষমতা দখলের জন্য বিভিন্ন দলের মধ্যে অবিরাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সংঘর্ষ চলতে থাকে। এতে দলীয় ব্যবস্থার কুফলগুলি প্রকট হয়।
(vi) মন্ত্রীপরিষদচালিত সরকারে যারা মন্ত্রী হয়, তারা সবসময় যোগ্যতার ভিত্তিতে মনােনীত হয় না। রাজনৈতিক বিবেচনায় তারা মন্ত্রীত্ব পায়। এতে শাসনব্যবস্থায় দক্ষতার অভাব ঘটে।
(vii) এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতা লাভের বা বজায় রাখার জন্য রাজনৈতিক দলগুলি অনেক সময় বিধায়ক কেনাবেচা করে। তাই এই শাসনব্যবস্থাকে দুনীতির উৎস বলে মনে করা হয়।
(i) অনেকে মনে করেন ব্যক্তিস্বাধীনতার বড়াে রক্ষাকবচ হল—ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি। কিন্তু এই শাসনব্যবস্থায় তা নেই। ফলে মন্ত্রীরা আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযােগ নিয়ে ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ করতে পারে।
(ii) এই শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীরা বেশি সময় আইনসভার প্রশ্নের উত্তর দিতে এবং তার জন্যে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত থাকে। ফলে শাসনকার্য পরিচালনায় বেশি সময় দিতে পারে।
(iii) দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সরকারের স্থায়িত্বের প্রয়ােজন। কিন্তু মন্ত্রীপরিষদচালিত সরকারের যে-কোনাে সময় পরিবর্তন হয় বলে অনেক পরিকল্পনা মাঝপথে পরিত্যক্ত হয়। ভারত তার সবথেকে বড় উদাহরণ।
(iv) এই শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীপরিষদের সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐক্য মতে পৌঁছানাে যায় না। ফলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না। বিশেষ করে পাঁচমিশেলি সরকার হলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না।
(v) দলীয় ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে মন্ত্রীপরিষদচালিত সরকার গড়ে ওঠে। তাই সরকারি ক্ষমতা দখলের জন্য বিভিন্ন দলের মধ্যে অবিরাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সংঘর্ষ চলতে থাকে। এতে দলীয় ব্যবস্থার কুফলগুলি প্রকট হয়।
(vi) মন্ত্রীপরিষদচালিত সরকারে যারা মন্ত্রী হয়, তারা সবসময় যোগ্যতার ভিত্তিতে মনােনীত হয় না। রাজনৈতিক বিবেচনায় তারা মন্ত্রীত্ব পায়। এতে শাসনব্যবস্থায় দক্ষতার অভাব ঘটে।
(vii) এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতা লাভের বা বজায় রাখার জন্য রাজনৈতিক দলগুলি অনেক সময় বিধায়ক কেনাবেচা করে। তাই এই শাসনব্যবস্থাকে দুনীতির উৎস বলে মনে করা হয়।
প্রশ্ন ৭) রাষ্ট্রপতিশাসিত ও সংসদীয় শাসনব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করো।
উত্তর : (i) শাসকের প্রকৃতির ক্ষেত্রে : পার্লামেন্টীয় শাসনব্যবস্থায় নামসর্বস্ব শাসক ও প্রকৃত শাসকের মধ্যে পার্থক্য থাকে না, তার নামেই সব কাজ চলে। প্রকৃত শাসক হল মন্ত্রীসভা। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান, আবার তিনি প্রকৃত শাসন ক্ষমতার অধিকারী।
(ii) ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির ক্ষেত্রে : পার্লামেন্টীয় শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির স্বীকৃতি নেই। আইনসভার সঙ্গে মন্ত্রীসভার ঘনিষ্ঠ যােগ আছে। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় দুটি বিভাগের সঙ্গে সরাসরি যােগ নেই। মন্ত্রীরা আইনসভা থেকে নির্বাচিত হয় না।
(iii) দায়িত্বশীলতার ক্ষেত্রে : পার্লামেন্টীয় শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীসভা আইনসভার কাছে যৌথভাবে দায়িত্বশীল। আইনসভার আস্থা হারালে তাদের সরে যেতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি বা মন্ত্রীসভা আইনসভার কাছে দায়ী থাকে না। মন্ত্রীরা ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে দায়ী থাকে।
(iv) স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে : সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় সরকার সাধারণত স্থায়ী হয় না। কারণ, আইনসভার আস্থা হারালে যে-কোনাে সময় পদত্যাগ করতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি তাঁর নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থার কোনাে ব্যবস্থা নেই।
(v) দলীয় সংহতির ক্ষেত্রে : পার্লামেন্টীয় শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল থেকে মনােনীত হয় বলে, তাদের মধ্যে দলীয় সংহতি থাকে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ব্যক্তিগত বন্ধুবান্ধব, এমনকি বিরােধী দলের কোনাে ব্যক্তিকে মন্ত্রীসভায় মনােনীত করেন।
(vi) আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে : পার্লামেন্টীয় শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীরা আইন প্রণয়নে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করে। তারাই আইনসভায় বিল উত্থাপন করে ও তাকে আইনে পরিণত করার দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রীদের এ ব্যাপারে কোনাে ভূমিকা নেই। আইনসভায় কমিটিগুলি এই দায়িত্ব পালন করে।
(vii) মন্ত্রীসভার পদমর্যাদার ক্ষেত্রে : মন্ত্রীপরিষদশাসিত শাসনব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হলেও প্রত্যেক মন্ত্রী সমান মর্যাদার অধিকারী। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতির অধস্তন কর্মচারী ছাড়া আর কিছুই নয়।
(ii) ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির ক্ষেত্রে : পার্লামেন্টীয় শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির স্বীকৃতি নেই। আইনসভার সঙ্গে মন্ত্রীসভার ঘনিষ্ঠ যােগ আছে। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় দুটি বিভাগের সঙ্গে সরাসরি যােগ নেই। মন্ত্রীরা আইনসভা থেকে নির্বাচিত হয় না।
(iii) দায়িত্বশীলতার ক্ষেত্রে : পার্লামেন্টীয় শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীসভা আইনসভার কাছে যৌথভাবে দায়িত্বশীল। আইনসভার আস্থা হারালে তাদের সরে যেতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি বা মন্ত্রীসভা আইনসভার কাছে দায়ী থাকে না। মন্ত্রীরা ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে দায়ী থাকে।
(iv) স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে : সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় সরকার সাধারণত স্থায়ী হয় না। কারণ, আইনসভার আস্থা হারালে যে-কোনাে সময় পদত্যাগ করতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি তাঁর নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থার কোনাে ব্যবস্থা নেই।
(v) দলীয় সংহতির ক্ষেত্রে : পার্লামেন্টীয় শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল থেকে মনােনীত হয় বলে, তাদের মধ্যে দলীয় সংহতি থাকে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ব্যক্তিগত বন্ধুবান্ধব, এমনকি বিরােধী দলের কোনাে ব্যক্তিকে মন্ত্রীসভায় মনােনীত করেন।
(vi) আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে : পার্লামেন্টীয় শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীরা আইন প্রণয়নে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করে। তারাই আইনসভায় বিল উত্থাপন করে ও তাকে আইনে পরিণত করার দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রীদের এ ব্যাপারে কোনাে ভূমিকা নেই। আইনসভায় কমিটিগুলি এই দায়িত্ব পালন করে।
(vii) মন্ত্রীসভার পদমর্যাদার ক্ষেত্রে : মন্ত্রীপরিষদশাসিত শাসনব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হলেও প্রত্যেক মন্ত্রী সমান মর্যাদার অধিকারী। কিন্তু রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতির অধস্তন কর্মচারী ছাড়া আর কিছুই নয়।