নাম সুকান্ত ভট্টাচার্য/Sukanta Bhattacharya জন্ম ১৫ই আগস্ট ১৯২৬, ফরিদপুর জেলার উনশিয়া গ্রাম
অভিভাবক নিবারন ভট্টাচার্য (বাবা) সুনীতি দেবী (মা) পেশা কবি জাতীয়তা ব্রিটিশ ভারতীয় ধর্ম
হিন্দু উল্লেখযোগ্য রচনাবলী ছাড়পত্র (১৯৪৭), পূর্বাভাস (১৯৫০), মিঠে-কড়া (১৯৫১) মৃত্যু ১৩ই মে ১৯৪৭
বাংলা সাহিত্যের সমস্ত শ্রেষ্ঠ কবিদের মধ্যে অন্যতম হলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য | তিনি তাঁর সীমিত জীবনকালে যা কিছু সাহিত্যসৃষ্টি করে গেছেন তা সত্যিই এক কথায় অনবদ্য | তিনি মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, মন্বন্তর, ফ্যাসিবাদ আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরুদ্ধে সেইসময় কলম ধরেছিলেন | তাঁর সমস্ত সাহিত্য কর্ম আজও প্রত্যেক বাঙালী পাঠকদের সমানভাবে মন কাঁড়ে |
Early Life of Sukanta Bhattacharya:
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম হয় ১৫ই আগস্ট ১৯২৬ সালে, কোলকাতার কালীঘাট অঞ্চলের অন্তর্গত ৪৩নং মহিম হালদার স্ট্রিটে তাঁর মামার বাড়িতে | তাঁর পৈত্রিক বাড়ি ছিলো ফরিদপুর জেলার উনশিয়া গ্রামে | সুকান্তের বাবার নাম ছিলো নিবারণ ভট্টাচার্য যিনি কিনা এক গ্রন্থাগারের মালিক ছিলেন এবং মায়ের নাম ছিলো সুনীতি দেবী, যিনি ছিলেন একজন সাধারণ গৃহবধু |
তিনি তাঁর ছয় ভাইয়ের মধ্যে ছিলেন দ্বিতীয় | তাঁর ভাইদের নাম যথাক্রমে- মনমোহন, সুশীল, প্রশান্ত, বিভাষ, অশোক এবং অমীয় ছিলো | তিনি তাঁর বড় দাদা মনমোহন এবং বৌদি সর্জু দেবীর বড় আদরের ছিলেন | তাঁর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষ ছিলেন রানীদি | সেইসময়ের বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক মনিন্দ্রলাল বসুর “সুকান্ত” গল্পটি পড়ে, তিনি তাঁর নাম রেখেছিলেন সুকান্ত |
জানা যায়, তাঁর প্রিয় রানীদির জন্যই নাকি তিনি সাহিত্যকর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন | কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁর রানীদি তাঁর কোনো সাহিত্যকর্মই দেখে যেতে পারেননি, এর প্রধান কারণ তিনি খুব তাড়াতাড়ি মারা যান | তারপর দিদির মারা যাওয়ার কিছুদিন পরেই আবার তাঁর মা সুনীতি দেবীও পরলোক গমন করেন |
পরপর চোখের সামনে দুটো মৃত্যু, সুকান্তকে ভীষন শোকাহত এবং মর্মাহত করে তোলে, যারফলে তাঁর মানসিক অবস্থা পুরোপুরি বিদ্ধস্ত হয়ে যায় বেশ কিছুদিন | এই চরম শোকের মূহুর্তেই তিনি রচনা করে অনেক কবিতা | নিঃসঙ্গতার সময় সেইসব কবিতাই ছিলো তাঁর একমাত্র সঙ্গী |
Education Life of Sukanta Bhattacharya:
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের বাল্যশিক্ষা শুরু হয় কোলকাতার কমলা বিদ্যামন্দির থেকে | এখানেই তাঁর লেখা প্রথম ছোটগল্প প্রকাশিত হয় স্কুলেরই নিজেস্ব পত্রিকা “সঞ্চয়ে” | সেই স্কুলে তিনি বেশ কিছুবছর পড়াশোনা করেন, এবং তারপর তিনি ভর্তি হন বেলেঘাটা দেশবন্ধু হাইস্কুলে | এরপর ১৯৪৫ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা দেন কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি সেই পরীক্ষায় ফেল করেন |
Political Life of Sukanta Bhattacharya:
স্কুলে পড়ার সময় থেকেই কবি সুকান্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন | এই সময় ছাত্র আন্দোলন ও বামপন্থী রাজনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত হওয়ায জন্য, তাঁর পড়াশোনার পরিসমাপ্তি ঘটে । ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও অনৈতিক ব্রিটিশ শাসন প্রভৃতির বিরুদ্ধে তিনি ও তাঁর দল ভীষনভাবে সোচ্চার হন |
১৯৪৪ সালে তিনি এরপর ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন | সেই বছরই “আকাল” নামক একটি সংকলনগ্রন্থ তিনি সম্পাদনাও করেন এবং সেখানেই শোষিত মানুষের কর্ম জীবন, ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য সংগ্রাম, সমাজের দুর্দশাজনিত বেদনা এবং শোষণ মুক্ত স্বাধীন সমাজের স্বপ্ন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে কবিতা লিখতে থাকেন |
তাঁর সেই কবিতা সংকলন মানুষকে ভীষনভাবে সাহস ও অনুপ্রেরণা যোগায় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ার জন্য |
Literary life of Sukanta Bhattacharya:
১৯৪১ সালে সুকান্ত ভট্টাচার্য কোলকাতা রেডিও আয়জিত “গল্পদাদুর আসর” নামক এক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন | সেখানে তিনি প্রথমে রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করতেন | যখন রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু হয়, তখন সেই আসরেই তিনি নিজের লেখা কবিতা পাঠ করে তাঁকে শ্রদ্ধাও জানান |
তুমি যদি এটা ভেবে থাকো যে সুকান্ত ভট্টাচার্য শুধু একজন কবি ছাড়া আর কিছুই ছিলেন না, তাহলে তোমার সেই ভাবনা একেবারে ভুল | কারণ তিনি কবিতা লেখার সাথেই সাথেই বিভিন্ন গান, গল্প, নাটক এবং প্রবন্ধও রচনা করেছিলেন |
মাত্র এগারো বছর বয়সে তিনি “রাখাল ছেলে” নামে একটি গীতি নাট্য রচনা করেছিলেন, যেটা পরে “হরতাল” নামক বইতে সংকলিত হয়েছিলো |
তাঁর সমস্ত রচনাবলীর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো- ছাড়পত্র (১৯৪৭), গীতিগুচ্ছ (১৯৬৫), পূর্বাভাস (১৯৫০), মিঠেকড়া (১৯৫১), অভিযান (১৯৫৩), ঘুম নেই (১৯৫৪), হরতাল (১৯৬২), প্রভৃতি । পরবর্তীকালে উভয় বাংলা থেকেই “সুকান্ত সমগ্র” নামে তাঁর রচনাবলী প্রকাশিত হয় ।
তাঁর লেখা “বিদ্রোহের গান” নামক কবিতার সামান্যটুকু অংশ:
“বেজে উঠল কি সময়ের ঘড়ি?
এসো তবে আজ বিদ্রোহ করি,
আমরা সবাই যে যার প্রহরী
উঠুক ডাক।
উঠুক তুফান মাটিতে পাহাড়ে
জ্বলুক আগুন গরিবের হাড়ে
কোটি করাঘাত পৌঁছোক দ্বারে;
ভীরুরা থাক।
মানবো না বাধা, মানবো না ক্ষতি,
চোখে যুদ্ধের দৃঢ় সম্মতি
রুখবে কে আর এ অগ্রগতি,
সাধ্য কার?
রুটি দেবে নাকো? দেবে না অন্ন?
এ লড়াইয়ে তুমি নও প্রসন্ন?
চোখ-রাঙানিকে করি না গণ্য
ধারি না ধার।
খ্যাতির মুখেতে পদাঘাত করি,
গড়ি, আমরা যে বিদ্রোহ গড়ি,
ছিঁড়ি দুহাতের শৃঙ্খলদড়ি,
মৃত্যুপণ
দিক থেকে দিকে বিদ্রোহ ছোটে,
বসে থাকবার বেলা নেই মোটে,
রক্তে রক্তে লাল হয়ে ওঠে
পূর্বকোণ”
Death of Sukanta Bhattacharya:
জীবনের প্রতিটি অংশেই সুকান্ত যেন অনিয়মকেই তাঁর জীবনের অঙ্গ করে তুলেছিলেন | একদিকে যেমন পার্টির কাজ, তেমনই অন্যদিকে সাহিত্যকর্ম, অভাব ও অনটন এইসব কিছুর ধকল তাঁর শীর্ণ শরীর আর মেনে নিতে পারেনি | অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে নিজের শরীরের উপর যে অত্যাচারটুকু তিনি করেন তাতে তাঁর শরীরে প্রথমে ম্যালেরিয়া ও পরে দুরারোগ্য যক্ষারোগ এসে হানা দেয় |
যারফলে ১৯৪৭ সালের ১৩ই মে তারিখে কোলকাতার ১১৯ নম্বর লাউডট ট্রিষ্ট্রের অন্তর্গত “রেড এড কিওর হোমে” তিনি অবশেষে মৃত্যুবরণ করেন | মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিলো মাত্র ২১ বছর |
অভিভাবক নিবারন ভট্টাচার্য (বাবা) সুনীতি দেবী (মা) পেশা কবি জাতীয়তা ব্রিটিশ ভারতীয় ধর্ম
হিন্দু উল্লেখযোগ্য রচনাবলী ছাড়পত্র (১৯৪৭), পূর্বাভাস (১৯৫০), মিঠে-কড়া (১৯৫১) মৃত্যু ১৩ই মে ১৯৪৭
বাংলা সাহিত্যের সমস্ত শ্রেষ্ঠ কবিদের মধ্যে অন্যতম হলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য | তিনি তাঁর সীমিত জীবনকালে যা কিছু সাহিত্যসৃষ্টি করে গেছেন তা সত্যিই এক কথায় অনবদ্য | তিনি মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, মন্বন্তর, ফ্যাসিবাদ আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরুদ্ধে সেইসময় কলম ধরেছিলেন | তাঁর সমস্ত সাহিত্য কর্ম আজও প্রত্যেক বাঙালী পাঠকদের সমানভাবে মন কাঁড়ে |
Early Life of Sukanta Bhattacharya:
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম হয় ১৫ই আগস্ট ১৯২৬ সালে, কোলকাতার কালীঘাট অঞ্চলের অন্তর্গত ৪৩নং মহিম হালদার স্ট্রিটে তাঁর মামার বাড়িতে | তাঁর পৈত্রিক বাড়ি ছিলো ফরিদপুর জেলার উনশিয়া গ্রামে | সুকান্তের বাবার নাম ছিলো নিবারণ ভট্টাচার্য যিনি কিনা এক গ্রন্থাগারের মালিক ছিলেন এবং মায়ের নাম ছিলো সুনীতি দেবী, যিনি ছিলেন একজন সাধারণ গৃহবধু |
তিনি তাঁর ছয় ভাইয়ের মধ্যে ছিলেন দ্বিতীয় | তাঁর ভাইদের নাম যথাক্রমে- মনমোহন, সুশীল, প্রশান্ত, বিভাষ, অশোক এবং অমীয় ছিলো | তিনি তাঁর বড় দাদা মনমোহন এবং বৌদি সর্জু দেবীর বড় আদরের ছিলেন | তাঁর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষ ছিলেন রানীদি | সেইসময়ের বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক মনিন্দ্রলাল বসুর “সুকান্ত” গল্পটি পড়ে, তিনি তাঁর নাম রেখেছিলেন সুকান্ত |
জানা যায়, তাঁর প্রিয় রানীদির জন্যই নাকি তিনি সাহিত্যকর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন | কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁর রানীদি তাঁর কোনো সাহিত্যকর্মই দেখে যেতে পারেননি, এর প্রধান কারণ তিনি খুব তাড়াতাড়ি মারা যান | তারপর দিদির মারা যাওয়ার কিছুদিন পরেই আবার তাঁর মা সুনীতি দেবীও পরলোক গমন করেন |
পরপর চোখের সামনে দুটো মৃত্যু, সুকান্তকে ভীষন শোকাহত এবং মর্মাহত করে তোলে, যারফলে তাঁর মানসিক অবস্থা পুরোপুরি বিদ্ধস্ত হয়ে যায় বেশ কিছুদিন | এই চরম শোকের মূহুর্তেই তিনি রচনা করে অনেক কবিতা | নিঃসঙ্গতার সময় সেইসব কবিতাই ছিলো তাঁর একমাত্র সঙ্গী |
Education Life of Sukanta Bhattacharya:
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের বাল্যশিক্ষা শুরু হয় কোলকাতার কমলা বিদ্যামন্দির থেকে | এখানেই তাঁর লেখা প্রথম ছোটগল্প প্রকাশিত হয় স্কুলেরই নিজেস্ব পত্রিকা “সঞ্চয়ে” | সেই স্কুলে তিনি বেশ কিছুবছর পড়াশোনা করেন, এবং তারপর তিনি ভর্তি হন বেলেঘাটা দেশবন্ধু হাইস্কুলে | এরপর ১৯৪৫ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা দেন কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি সেই পরীক্ষায় ফেল করেন |
Political Life of Sukanta Bhattacharya:
স্কুলে পড়ার সময় থেকেই কবি সুকান্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন | এই সময় ছাত্র আন্দোলন ও বামপন্থী রাজনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত হওয়ায জন্য, তাঁর পড়াশোনার পরিসমাপ্তি ঘটে । ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও অনৈতিক ব্রিটিশ শাসন প্রভৃতির বিরুদ্ধে তিনি ও তাঁর দল ভীষনভাবে সোচ্চার হন |
১৯৪৪ সালে তিনি এরপর ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন | সেই বছরই “আকাল” নামক একটি সংকলনগ্রন্থ তিনি সম্পাদনাও করেন এবং সেখানেই শোষিত মানুষের কর্ম জীবন, ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য সংগ্রাম, সমাজের দুর্দশাজনিত বেদনা এবং শোষণ মুক্ত স্বাধীন সমাজের স্বপ্ন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে কবিতা লিখতে থাকেন |
তাঁর সেই কবিতা সংকলন মানুষকে ভীষনভাবে সাহস ও অনুপ্রেরণা যোগায় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হওয়ার জন্য |
Literary life of Sukanta Bhattacharya:
১৯৪১ সালে সুকান্ত ভট্টাচার্য কোলকাতা রেডিও আয়জিত “গল্পদাদুর আসর” নামক এক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন | সেখানে তিনি প্রথমে রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করতেন | যখন রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু হয়, তখন সেই আসরেই তিনি নিজের লেখা কবিতা পাঠ করে তাঁকে শ্রদ্ধাও জানান |
তুমি যদি এটা ভেবে থাকো যে সুকান্ত ভট্টাচার্য শুধু একজন কবি ছাড়া আর কিছুই ছিলেন না, তাহলে তোমার সেই ভাবনা একেবারে ভুল | কারণ তিনি কবিতা লেখার সাথেই সাথেই বিভিন্ন গান, গল্প, নাটক এবং প্রবন্ধও রচনা করেছিলেন |
মাত্র এগারো বছর বয়সে তিনি “রাখাল ছেলে” নামে একটি গীতি নাট্য রচনা করেছিলেন, যেটা পরে “হরতাল” নামক বইতে সংকলিত হয়েছিলো |
তাঁর সমস্ত রচনাবলীর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো- ছাড়পত্র (১৯৪৭), গীতিগুচ্ছ (১৯৬৫), পূর্বাভাস (১৯৫০), মিঠেকড়া (১৯৫১), অভিযান (১৯৫৩), ঘুম নেই (১৯৫৪), হরতাল (১৯৬২), প্রভৃতি । পরবর্তীকালে উভয় বাংলা থেকেই “সুকান্ত সমগ্র” নামে তাঁর রচনাবলী প্রকাশিত হয় ।
তাঁর লেখা “বিদ্রোহের গান” নামক কবিতার সামান্যটুকু অংশ:
“বেজে উঠল কি সময়ের ঘড়ি?
এসো তবে আজ বিদ্রোহ করি,
আমরা সবাই যে যার প্রহরী
উঠুক ডাক।
উঠুক তুফান মাটিতে পাহাড়ে
জ্বলুক আগুন গরিবের হাড়ে
কোটি করাঘাত পৌঁছোক দ্বারে;
ভীরুরা থাক।
মানবো না বাধা, মানবো না ক্ষতি,
চোখে যুদ্ধের দৃঢ় সম্মতি
রুখবে কে আর এ অগ্রগতি,
সাধ্য কার?
রুটি দেবে নাকো? দেবে না অন্ন?
এ লড়াইয়ে তুমি নও প্রসন্ন?
চোখ-রাঙানিকে করি না গণ্য
ধারি না ধার।
খ্যাতির মুখেতে পদাঘাত করি,
গড়ি, আমরা যে বিদ্রোহ গড়ি,
ছিঁড়ি দুহাতের শৃঙ্খলদড়ি,
মৃত্যুপণ
দিক থেকে দিকে বিদ্রোহ ছোটে,
বসে থাকবার বেলা নেই মোটে,
রক্তে রক্তে লাল হয়ে ওঠে
পূর্বকোণ”
Death of Sukanta Bhattacharya:
জীবনের প্রতিটি অংশেই সুকান্ত যেন অনিয়মকেই তাঁর জীবনের অঙ্গ করে তুলেছিলেন | একদিকে যেমন পার্টির কাজ, তেমনই অন্যদিকে সাহিত্যকর্ম, অভাব ও অনটন এইসব কিছুর ধকল তাঁর শীর্ণ শরীর আর মেনে নিতে পারেনি | অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে নিজের শরীরের উপর যে অত্যাচারটুকু তিনি করেন তাতে তাঁর শরীরে প্রথমে ম্যালেরিয়া ও পরে দুরারোগ্য যক্ষারোগ এসে হানা দেয় |
যারফলে ১৯৪৭ সালের ১৩ই মে তারিখে কোলকাতার ১১৯ নম্বর লাউডট ট্রিষ্ট্রের অন্তর্গত “রেড এড কিওর হোমে” তিনি অবশেষে মৃত্যুবরণ করেন | মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিলো মাত্র ২১ বছর |