Tuesday, 7 April 2020

সংজ্ঞা, প্রকৃতি, বিষয়বস্তু এবং সামাজিক সক্রিয়তা হিসাবে রাজনীতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

সংজ্ঞা, প্রকৃতি, বিষয়বস্তু এবং সামাজিক সক্রিয়তা হিসাবে রাজনীতি
প্রশ্ন ১। রাজনীতির সাবেকি সংজ্ঞাটি কী?
উত্তর: রাজনীতির সাবেকি সংজ্ঞাটি হল কোনাে রাষ্টের কর্মকাণ্ডের সেই অংশ যা প্রধানত সরকারের মধ্য দিয়ে চলে এবং সরকারের সেই ধরন বা অংশ যা আইনের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
প্রশ্ন ২। রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে কেন একটি প্রগতিশীল বিজ্ঞান বলা হয়?
উত্তর: রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ও আলােচনা ক্ষেত্র ছােটো গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ নয়। সমাজে ও রাষ্ট্রে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই সমস্যা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনায় স্থান পাচ্ছে। তার ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনার পরিধি ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে। তাই বলা হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি ‘প্রগতিশীল বিজ্ঞান’ (Progressive Science)।
প্রশ্ন ৩। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে কি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা সম্ভব?
উত্তর: রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা সম্ভব নয়। কারণ, মানুষ এবং মনুষ্য সমাজই হল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু। প্রকৃতি বিজ্ঞানীর মতাে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নিজের প্রয়ােজনে গবেষণা ক্ষেত্রের প্রয়ােজনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে নিতে পারেন না। তাঁদের নির্ভর করতে হয় বাহ্যিক পরিবেশের ওপর। এই বাহ্যিক পরিবেশ পরিবর্তনশীল বলেই তা রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর আয়ত্তের বাইরে। তাই বহু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীকে অনুমানের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। ফলে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ অনেক সময় তর্কের বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়। তা ছাড়া, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর পক্ষে পরীক্ষামূলক পদ্ধতি অনুসরণ করা সম্ভব নয়। আর সম্ভব হলেও তা বিপজ্জনক।
প্রশ্ন ৪। ‘ওয়েলথ অব নেশনস’ গ্রন্থটি কার লেখা এবং তিনি কোথাকার নাগরিক ছিলেন?
উত্তর: প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ ‘ওয়েলথ অব নেশনস’ গ্রন্থটি রচনা করেছেন। তিনি ছিলেন ইংল্যান্ডের নাগরিক।
প্রশ্ন ৫। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মুল্যমান-নিরপেক্ষ আলােচনা সম্ভব কি?
উত্তর: একজন বিজ্ঞানী নিরপেক্ষভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা চালান। কিন্তু একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী কখনই নিরপেক্ষভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে পারেন না। কারণ, নিজের আর্থ-সামাজিক অবস্থান তাঁর চিন্তাভাবনাকে যথেষ্ট পরিমাণে প্রভাবিত করে। তাই তাঁর পক্ষে শ্রেণি-নিরপেক্ষভাবে কোনাে রাজনৈতিক পর্যালােচনা চালানাে সম্ভব হয় না। ফলে কোটি উচিত কোটি অনুচিত, কোটি ভালাে, কোটি মন্দ—সে সম্পর্কে তিনি মতামত জ্ঞাপন করেন। তাই বলা যায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মূল্যমান-নিরপেক্ষ আলােচনা সম্ভব নয়।
প্রশ্ন ৬। ‘আচরণবাদ’ বলতে কী বােঝায়?
উত্তর: ‘আচরণবাদ’ হল এমন এক আন্দোলন যা তত্ত্ব, পদ্ধতি, গবেষণা ও অনুসন্ধানকে নিখুঁত করার জন্য মনােবিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব ও অর্থনীতির সঙ্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সম্পর্ক গড়ে তােলে।
প্রশ্ন ৭। লেনিন রাজনীতিকে ‘অর্থনীতির ঘনীভূত রূপ’ বলেছেন কেন?
উত্তর: কোনাে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা সেখানকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। কারণ, সমাজের অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রভুত্বকারী শ্রেণির স্বার্থরক্ষার প্রয়ােজনেই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রতিষ্ঠিত হয়। মার্কসবাদীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থবিদ্যাকে সম্পূর্ণ দুটি পৃথক শাস্ত্র হিসাবে আলােচনা করা অপেক্ষা তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে আলােচনাকেই সংগত বলে মনে করেন। তাই লেনিন রাজনীতিকে অর্থনীতির ‘ঘনীভূত রূপ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
প্রশ্ন ৮। অ্যারিস্টটল মানুষকে সমাজবদ্ধ জীব বলেছেন কেন?
উত্তর: মানুষ তার সমাজের মধ্যেই জন্মায়, বড়াে হয় এবং মৃত্যুবরণ করে। সমাজ-নিরপেক্ষ মানুষের ব্যক্তি হিসাবে কোনাে স্বতন্ত্র পরিচয় থাকতে পারে না। সমাজ-বহির্ভূত মানুষের নিঃসঙ্গ জীবন কল্পলােকের বিষয়মাত্র। তাই বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছেন মানুষ সমাজবদ্ধ জীব।
প্রশ্ন ৯। মূল্যের শ্রমতত্ত্ব (Labour Theory of Value) প্রচার করেছিলেন এমন দুজন অর্থনীতিবিদের নাম লেখাে।
উত্তর: ‘মূল্যের শ্রমত্ত্ব’ (Labour Theory of Value) প্রচার করেছিলেন এমন দুজন অর্থনীতিবিদের নাম হল অ্যাডাম স্মিথ এবং রিকার্ডো।
প্রশ্ন ১০। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক কাকে বলা হয়? তাঁর রচিত বিখ্যাত গ্রন্থটির নাম কী?
উত্তর: গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক’ বলা হয়। তাঁর রচিত বিখ্যাত গ্রন্থটির নাম হল ‘পলিটিকস’ (Politics)।
প্রশ্ন ১১। রাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান সম্ভব কি?
উত্তর: বর্তমানে রাষ্ট্র জনকল্যাণসাধনের উদ্দেশ্যে নানারকম ইতিবাচক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। এইসব কর্মসূচির বেশির ভাগ অংশই অর্থবিদ্যার আলােচ্য বিষয়। যেমন—শ্রমিক কল্যাণ, গ্রামােন্নয়ন, নগরােন্নয়ন, বেকার সমস্যা প্রভৃতি। এইসব কর্মসূচি গ্রহণ ও রূপায়ণের দায়িত্ব পালন করে সরকার তথা রাষ্ট্র। তাই রাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে কোনােরকম অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের কথা কল্পনা করা যায় না।
প্রশ্ন ১২। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি আধুনিক সংজ্ঞা দাও।
উত্তর: রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল এমন একটি সমাজবিজ্ঞান যেখানে রাষ্ট্র ও রাজনীতির দার্শনিক, সাংগঠনিক, প্রশাসনিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন ও সাংগঠনিক সম্পর্কের প্রসঙ্গ এবং বহুবিধ রাজনৈতিক ব্যবস্থার তুলনামূলক প্রসঙ্গের বিজ্ঞানসম্মত আলােচনা ও পর্যালােচনা চলে।
প্রশ্ন ১৩। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণে মনােবিজ্ঞানের ভূমিকা কী?
উত্তর: বর্তমানে রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস, রাজনৈতিক কার্যকলাপের উদ্দেশ্য ও গতিপ্রকৃতি, চাপ সৃষ্টিকারী গােষ্ঠীর ক্রিয়াকলাপ, ভােটদাতাদের নির্বাচনী আচরণ প্রভৃতি রাষ্ট্র বিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু মনােবিজ্ঞানের সাহায্য ছাড়া রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর পক্ষে এগুলি সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যথেষ্ট কষ্টকর। এছাড়া, বর্তমানে সৈন্যবাহিনী গঠন, সরকারি কর্মচারী নিয়ােগ, বিচারপতিগণ কর্তৃক বিচারকার্য সম্পাদন, অপরাধের কারণ অন্বেষণ প্রভৃতি ক্ষেত্রেও সরকারকে মনস্তত্ত্বের সাহায্য গ্রহণ করতে হয়। তাই বলা যায় মনােবিজ্ঞানের মধ্যেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিকড় নিহিত রয়েছে।
প্রশ্ন ১৪। ‘রাষ্ট্রবিজ্ঞান’ শব্দটির প্রথম প্রয়ােগ করেন কে এবং কত খ্রিস্টাব্দে করেছিলেন?
উত্তর: রাষ্ট্রবিজ্ঞান’ শব্দটি প্রথম প্রয়ােগ করেন লিবনিজ (Leibniz), ১৭০১ খ্রিস্টাব্দে।
প্রশ্ন ১৫। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে মনােবিজ্ঞানের কোনাে ভূমিকা আছে কী?
উত্তর: বর্তমানে দেশের মধ্যে এমন কিছু সমস্যা আছে, যার রাজনৈতিক পথে সুষ্ঠু সমাধান সম্ভব নয়। মনােবিজ্ঞানের সূত্র ধরেই এইসব সমস্যার সমাধান করা যায়, যেমন—সাম্প্রদায়িক সমস্যা। আবার, কোনাে কোনাে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান সূত্র মনােবিজ্ঞানে খুঁজে পাওয়া যায়। পাঞ্জাবে খালিস্তানী, পশ্চিমবঙ্গে গাের্খাল্যাণ্ড আন্দোলন প্রভৃতি প্রকৃতিগতভাবে রাজনৈতিক সমস্যা হিসাবে জাতীয় ঐক্য ও সংহতির প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলেও এইসব সমস্যার প্রকৃত কারণ খুঁজে পাওয়া যাবে বিভিন্ন জনগােষ্ঠীর মনস্তত্ত্বের মধ্যে।
প্রশ্ন ১৬। সিজউইক, জেলিনেক প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুকে কটি ভাগে ভাগ করেছেন এবং কী কী?
উত্তর: সিজউইক, জেলিনেক প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রাষ্ট্রবিজ্ঞানর বিষয়বস্তুকে দুটি ভাগে ভাগ করেছেন। এই দুটি ভাগ হল—(ক) তত্ত্বগত রাজনীতি এবং (খ) ফলিত বা ব্যাবহারিক রাজনীতি।
প্রশ্ন ১৭। রাজনীতিকে নীতিশাস্ত্র থেকে প্রথম কখন এবং কে মুক্ত করেছিলেন?
উত্তর: ষােড়শ শতাব্দীর প্রথম দিকে প্রখ্যাত ইটালীয় চিন্তাবিদ মেকিয়াভেলি রাজনীতিকে নীতিশাস্ত্র থেকে প্রথম মুক্ত করেছিলেন।
প্রশ্ন ১৮। আধুনিক অর্থে কখন, কোথায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান শব্দটির ব্যবহার হয়?
উত্তর: লিপসেট তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘The Political Man’-এ শব্দটি উল্লেখ করেছেন। ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থ তালিকায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান’ শব্দটি আধুনিক অর্থে সর্বপ্রথম ব্যবহূত হয়।
প্রশ্ন ১৯। নীতিহীন রাজনীতি সমাজে বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয় কি?
উত্তর: ন্যায়নীতিবােধ সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে কোনাে রাষ্ট্রনেতা রাজনৈতিক কার্যাদি সম্পাদন করতে সক্ষম হন না। কারণ, নৈতিকতার বন্ধনে আবদ্ধ না থাকলে শাসক ও শাসিতের মধ্যে কখনই সুসম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে না। তাই বলা যায় পাশবিক বা আসুরিক বল নয়, জনগণের সম্মতিই হল রাষ্ট্রের ভিত্তি। আবার লর্ড অ্যাক্টন বলেন—সরকার কী নির্দেশ দেবে সেটা বড়াে কথা নয়, তার কী নির্দেশ দেওয়া উচিত—সেটাই হল বড়াে কথা। তাই বলা যায়-নীতিহীন রাজনীতি সুন্দর ও আদর্শ সমাজের পরিবর্তে বিশৃঙ্খল সমাজের জন্ম দেয়।
প্রশ্ন ২০। আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্মেলন (1948)-এ গৃহীত প্রস্তাবে যেসব বিষয়কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনা ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল সেগুলি উল্লেখ করাে।
উত্তর: আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্মেলন (1948)-এ গৃহীত প্রস্তাবে যেসব বিষয়কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনা ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল সেগুলি হল—(ক) রাজনৈতিক তত্ত্ব ও তার ইতিহাস, (খ) রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, (গ) রাজনৈতিক মতবাদ ও দল এবং (ঘ) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।
প্রশ্ন ২১। রাষ্ট্রীয় আইনের মধ্যে সামাজিক ন্যায়নীতিবােধের প্রতিফলন ঘটে বলে কী তুমি মনে করাে?
উত্তর: যে আইনের সাহায্যে সরকার তথা রাষ্ট্র মানুষের বাহ্যিক আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে, সেই আইনের মধ্যে সামাজিক ন্যায়নীতিবােধের একান্ত অভাব থাকে, সেই দেশের আইন কখনই উচ্চ মানসম্পন্ন হতে পারে না। বস্তুত সমাজে সুদীর্ঘকাল ধরে প্রচলিত নৈতিক বিধিগুলি কালক্রমে আইনে রূপান্তরিত হয়। তাই বলা যায়, কেবল রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত, ঘােষিত ও প্রযুক্ত হলেই আইনকে আদর্শ আইন বলা যায় না। আইনের মধ্যে বৈধতা এবং নৈতিক মূল্যবােধ অবশ্যই থাকা প্রয়ােজন।
প্রশ্ন ২২। সমাজবিজ্ঞান গবেষণা পর্ষদ কত খ্রিস্টাব্দে এবং কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
উত্তর: সমাজবিজ্ঞান গবেষণা পর্ষদ’১৯২০ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (Socialkience Research Council) প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন ২৩। রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে কারা বিজ্ঞান হিসাবে অভিহিত করেছেন?
উত্তর: অ্যারিস্টটল, বদিন, বুন্টসলি, মন্তেস্তু, পােলন, লর্ড ব্রাইস প্রমুখরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান হিসাবে অভিহিত করেছেন।
প্রশ্ন ২৪। “ইতিহাস রাষ্ট্রবিজ্ঞানের গভীরতা জোগান দেয়।” -উইলােবি এই উক্তিটি কেন করেছিলেন?
উত্তর: ইতিহাস প্রদত্ত তথ্যাদির উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বর্তমান সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলি অতি সহজেই নির্ধারণ করতে সক্ষম হন। ফলে, তুলনামূলক আলােচনার সাহায্যে আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে মতামত জ্ঞাপন করা তাদের পক্ষে সহজসাধ্য হয়। ওইসব ঐতিহাসিক তথ্য যত বেশি পরিমাণে সংগৃহীত হবে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনাও তত বেশি গভীরতা লাভ করবে। তাই উইলােবি বলেছেন, “ইতিহাস রাষ্ট্রবিজ্ঞানের গভীরতা জোগান দেয়।” 
প্রশ্ন ২৫। অধ্যাপক গার্নার প্রদত্ত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞাটি লেখাে।
উত্তর: অধ্যাপক গার্নারের মতে, “রাষ্ট্রবিজ্ঞান আলােচনার শুরু ও সমাপ্তি রাষ্ট্রকে নিয়ে।”
প্রশ্ন ২৬। রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে ল্যাস্কির অভিমত কী?
উত্তর: অধ্যাপক ল্যাস্কির মতে—সংগঠিত রাষ্ট্রের পরিপ্রেক্ষিতে মানবজীবনের আলােচনাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান।মানবজীবনকে প্রভাবিত করে এমন কোনাে কিছুকেই আমরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলােচনা থেকে বাদ দিতে পারি না।
প্রশ্ন ২৭। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের রাষ্ট্রকেন্দ্রিক আলােচনার দুজন সমালােচকের নাম লেখাে।
উত্তর: রাষ্ট্রবিজ্ঞানের রাষ্ট্রকেন্দ্রিক আলােচনার দুজন সমালােচকের নাম হল—(i) ম্যাকেঞ্জি (Mackenzie) এবং (ii) ডেভিড ইস্টন।
প্রশ্ন ২৮। রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলার বিপক্ষে কারা মত প্রকাশ করেছেন?
উত্তর: কোঁৎ, বাকল, মেটল্যান্ড, গিলক্রাইস্ট প্রমুখ রাষ্ট্রদার্শনিকরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলার বিপক্ষে অভিমত দিয়েছেন।
প্রশ্ন ২৯। ডেভিড ইস্টন রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে কেন ‘মূল্যের কর্তৃত্বসম্পন্ন বরাদ্দের পাঠ’ বলেছেন?
উত্তর: রাষ্ট্রবিজ্ঞান ক্ষমতার বণ্টন ও প্রয়ােগের দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়। কোনাে মূল্যবান বস্তুর বণ্টন নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা গােষ্ঠীর মধ্যে বিরােধ বাধলে প্রচলিত প্রথার ভিত্তিতে যখন সেইসব বিরােধের মীমাংসা করা সম্ভব হয় না, তখন সামাজিক কর্তৃত্বের সাহায্যে একটি নীতি প্রণয়ন করা হয়। তাই ডেভিড ইস্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে ‘মূল্যের কর্তৃত্বসম্পন্ন বরাদ্দের পাঠ’ বলেছেন।
প্রশ্ন ৩০। অর্থনীতির জনক কে? তাঁর রচিত গ্রন্থটির নাম কী ?
উত্তর: ইংরেজ দার্শনিক অ্যাডাম স্মিথকে অর্থনীতির জনক বলা হয়। ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁর রচিত বিখ্যাত গ্রন্থটির নাম ‘An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations’। সংক্ষেপে Wealth of Nations.
প্রশ্ন ৩১। কয়েকজন আচরণবাদী রাষ্ট্রদার্শনিকের নাম লেখাে।
উভর: ল্যাসওয়েল, কেপলান, রবার্ট ডাল, ডেভিড ইস্টন, চার্লস মেরিয়াম প্রমুখরা হলেন আচরণবাদী রাষ্ট্রদার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম।
Comment

Class XI Political Science

Class XII Political Science

Class 12 Bangla Books Question& Answers