Tuesday 7 April 2020

মাধ্যমিক ইতিহাস(Madhyamik History): দুই নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর ।

১) পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব কী?
উঃ মানুষ পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার ও সংরক্ষণ এবং তার উপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অপব্যবহার মানব সভ্যতাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার এবং লণ্ঠন জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। তারই প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন। যেমন- চিপকো আন্দোলন, নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন। পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যেই ইতিহাসে পরিবেশের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
২) স্মৃতিকথা অথবা আত্মজীবনীকে কীভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদানরূপে ব্যবহার করা হয়?

উঃ ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে স্মৃতিকথা এবং আত্মজীবনীতে লেখকের ব্যক্তিগত আবেগ অপেক্ষা সমকালীন সমাজ সংস্কৃতির বস্তুনিষ্ঠ বিবরণই প্রধান বিবেচ্য। যেমন – সুরলাদেবী চৌধুরানীর আত্মজীবনী জীবনের ঝরাপাতা’ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিকথা ‘জীবনস্মৃতি’-তে শুধু ঠাকুর পরিবারের কথা নয় সমকালীন বিশ শতকের কলকাতার সমাজ সংস্কৃতি এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের বিবরণও পাওয়া যায়।
৩ )মেকলে মিনিট’ কী?

উঃ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিক্ষা বিষয়কদ্বন্দ্ব চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। এমতাবস্থায়, জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি টমাস ব্যাবিংটন মেকলে পাশ্চাত্য শিক্ষার স্বপক্ষে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন পেশ করেন তা ‘মেকলে মিনিট’ নামে পরিচিত। মেকলের মতে— প্রাচ্য শিক্ষা নীতিই তার মতে পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের মাধ্যমে ইংরেজী শিক্ষার প্রসার ঘটবে এবং এই শিক্ষা সমাজের উঁচুতলা থেকে চুইয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।

৪ )সমাজ সংস্কারে নব্যবঙ্গদের ভূমিকা কী ছিল?

উঃ হিন্দু কলেজের শিক্ষক ডিরােজিও এবং তার অনুগামী ছাত্ররা যারা ইয়ংবেঙ্গল নামে পরিচিত ছিলেন তারা হিন্দু ধর্মের প্রচলিত কুসংস্কার ও ধর্মীয় সংকীর্ণতার বিরােধিতা করেছিলেন। এঁরা মূলত যুক্তিবাদী ও প্রগতিপন্থী ছিলেন। তাঁরা যেমন মূর্তি পূজা, উপবীত ধারণের বিরােধিতা করেছিলেন তেমন স্ত্রী শিক্ষার প্রসার, বাক স্বাধীনতার স্বপক্ষে সােচ্চার হয়েছিলেন।

মাধ্যমিক ইতিহাসঃ সঠিক উত্তর নির্বাচন করোঃ 

পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন
৫) দুদু মিঞা স্মরণীয় কেন?
ডঃ ফরাজ আন্দোলনের অন্যতম নেতা দদ মিনা একদিকে যেমন জমিদার এবং মহাজনদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সােচ্চার হয়েছিলেন অন্যদিকে বাংলার নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি প্রচলিত কর কাঠামাে ও বে-আইনী কর আদায়ের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তােলেন এবং প্রচার করেন, “জমি যারা চাষ করে জমি তাদের। তিনি বাংলার বেশ কিছু স্থানে অস্থায়ী সমান্তরাল প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করেছিলেন।
৬) নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখােপাধ্যায়ের ভূমিকা কীরূপ ছিল?

উঃ হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখােপাধ্যায় তার পত্রিকায় একদিকে নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের। বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন এবং অন্যদিকে নীলকর বিরােধী জনমত গঠনে প্রয়াসী হয়েছিলেন। সাধারণ কৃষকদের উপর নীলকর সাহেবদের অকথ্য অত্যাচার, দাদন প্রথা, উর্বর জমিতে বলপূর্বক নীলচাষে কৃষকদের বাধ্য করা প্রভৃতি বিষয় তার পত্রিকায় বিস্তৃতভাবে তুলে ধরেন। তিনিষ্ঠার পত্রিকার মাধ্যমে নীলকর সাহেবদের অত্যচারের বিরুদ্ধে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে সংগঠিত করেন।
৭) “মহারাণীর ঘােষণাপত্রের (১৮৫৮) মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
উঃ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে মহারানীর ঘােষণাপত্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল কোম্পানীর অপশাসনের অবসান ঘটিয়ে ব্রিটিশ রাজশক্তি কর্তৃক ভারতের প্রত্যক্ষ শাসনভার গ্রহণ করা। দ্বিতীয়তঃ ব্রিটিশ সরকারের নতুন নীতি। ও আদর্শের সঙ্গে ভারতবাসীর যােগসাধন ঘটানাে।
৮) ব্যঙ্গচিত্র কেন আঁকা হয়?

উঃ চিত্রশিল্পের অন্যতম শাখারূপে ব্যঙ্গচিত্রে মূলত তির্যক বা ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গীতে প্রচলিত সামাজিক রীতিনীতি, এটিবিচ্যতিকে মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়। অত্যন্ত সরস ভঙ্গীতে সমাজের পাশাপাশি রাজনীতি, অর্থনীতি। এমনকিসংস্কৃতির ত্রুটিগুলিকে আক্রমণ করা হয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর তৎকালীন ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থা, ‘বাবু’ সমাজের ভণ্ডামি এবং ধর্মীয় দ্বিচারিতাকে তার ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন।
৯) বাংলার ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকারের ভূমিকা কী ছিল?

উঃ প্রথম বাংলাভাষার ছাপাখানার হরফ নির্মাণের অন্যতম রপকার ছিলেন মিশনারি প্রেসের।
পঞ্চানন কর্মকার। বাংলা ভাষার সচল ধাতু হরফের ঢালাই ও ছেনিকা নির্মাণের তিনি ছিলেন অন্যতম রূপকার । এর মাধ্যমে অল্প সময়ে কম খরচে ছাপা শিল্পের ব্যবসায়িক বিকাশ ঘটেছিল । তিনি দেবনাগরী ভাষায় মার্জিত সংস্কৃত ব্যাকরণ ছাপার উদ্যোগ নেন।
১০) বাংলার মুদ্রণের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব কী ? 

উঃ কলকাতার আদি প্রকাশনা শিল্প ছিল আপার চিৎপর রােডের বটতলা প্রকাশনা। এখানে মূলত হ্যান্ডমেড পেপারে ছাপচিত্রের মাধ্যমে স্বদেশী কারিগরেরা চটি বই, পথি, পাঁচালী প্রকাশ করত। এখান থেকে অনুবাদ সাহিত্যও প্রকাশিত হত। উনিশ শতকের কলকাতা ও ‘বাবু’সংস্কৃতি সম্পর্কে বিস্তত তথ্য এখান থেকে পাওয়া যায়।
১১) ‘একা’ আন্দোলনের শুরু হয় কেন?

উঃ ১৯২১-২২ খ্রিস্টাব্দে উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি, সীতাপুর, বারাইচ অঞ্চলে মাদারি পাসির নেতৃত্বে একা’ আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল। কৃষকেরা মূলত অত্যধিক রাজস্ব বৃদ্ধি, বাড়তি কর আদায়, জমি থেকে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ, বেগার শ্ৰমদানের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছিল।
১২) বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলন কেন শুরু হয়?

উঃ ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে গুজরাটের সুরাট জেলার বারদৌলি তালকের কৃষকরা বৃহত্তর সত্যাগ্রহ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। নিম্নবর্ণের কৃষক কালিপরাজদের উপর উচ্চবর্ণের কৃষক উজলিপরাজদের অত্যাচারে কৃষকরা ক্ষুব্ধ ছিল। এই প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ সরকার রাজস্বের পরিমাণ ২৭ থেকে ৩০ পর্যন্ত বৃদ্ধি করলে, আন্তর্জাতিক বাজারে তুলাের দাম পড়ে গেলে এবং জলসেচের সংকট দেখা দিলে কৃষকরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
১৩) অ্যান্টি সার্কুলার সােসাইটি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়?

উঃ বঙ্গভঙ্গ বিরােধী আন্দোলন থেকে ছাত্র সমাজকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য লর্ড কার্জনের শিক্ষা সচিব কার্লাইল ১৯০৫ সালের অক্টোবর মাসে যথাক্রমে কার্লাইল সার্কুলার, লিয়ন সার্কুলার, পেলার সার্কুলার জারি করেন। এর প্রত্যুত্তরে ছাত্রনেতা শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় অ্যান্টি সার্কুলার সােসাইটি গঠন করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল সরকারি বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রদের বিকল্প শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা এবং ছাত্রদের মধ্যে স্বদেশ প্রেম জাগ্রত করা।
Comment

Class XI Political Science

Class XII Political Science

Class 12 Bangla Books Question& Answers